প্রতীকী ছবি

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামীর (হুজি) অপারেশন শাখার প্রধানসহ ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগ। বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) রাতে যাত্রাবাড়ী থানার সায়েদাবাদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতাররা হচ্ছেন- মো. মাইনুল ইসলাম ওরফে মাহিন ওরফে মিঠু ওরফে হাসান, শেখ সোহান সাদ ও মুরাদ হোসেন কবির। আজ (শুক্রবার) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ইফতেখারুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন। 

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের তথ্যের ভিত্তিতে তিনি জানান, গ্রেফতাররা “হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী”-এর সক্রিয় সদস্য। তারা মাইনুল ইসলামের নেতৃত্বে হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী পুনর্গঠন, পূর্ণাঙ্গ শুরা কমিটি প্রস্তুতকরণ, সংগঠনের অর্থ দাতা এবং সদস্যদের কাছ থেকে অর্থের যোগান নিশ্চিতকরণ, ব্যাপকহারে সংগঠনের রিক্রুটমেন্ট, অস্ত্র সংগ্রহ, বোমা তৈরির সরঞ্জাম সংগ্রহ, কারাগারে আটক সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের জামিনের ব্যবস্থাকরণ, বান্দরবান-নাইক্ষ্যংছড়ি পাহাড়ি দুর্গম এলাকায় জমি লিজ নিয়ে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। 

তারা বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় সংগঠনের বিস্তার ও সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সাংবাদিকতাসহ বিভিন্ন পরিচয়ে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তারা কারাগারে আটক ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডাক্তার জাফর ও ২০০০ সালের কোটালিপাড়ায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হত্যাচেষ্টা মামলার যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মেহেদী হাসান ওরফে আব্দুল ওয়াদুদ ওরফে গাজী খানের নির্দেশে সাংগঠনিক কাজ করছিলেন। 

ডিএমপি জানায়, গ্রেফতার মাইনুল ইসলাম দীর্ঘদিন যাবত নিষিদ্ধ সংগঠন হুজি’র প্রধান অপারেশন সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছিলেন। তিনি সাংবাদিকের বেশ ধারণ করে সংগঠনের দাওয়াতি কাজ, অর্থ সংগ্রহ, বোমা তৈরির সরঞ্জাম সংগ্রহ করে আসছিলেন। তার পরিকল্পনা ছিল ঢাকা শহরে বড় ধরনের নাশকতা করে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করা। তিনি ২০১৫ সালে হুজি’র শীর্ষ নেতা কারাবন্দি মুফতি মঈনউদ্দিন ওরফে আবু জান্দালকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন। 

গ্রেফতার সোহান স্বাদ সুনামগঞ্জের বিবিয়ানা কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। ঢাকায় মিরপুর বাংলা কলেজে পড়ার পাশাপাশি একটি মাদ্রাসায় তিনি শিক্ষকতা করতেন। ২০১৬ সালে একুশে বইমেলায় নাশকতার ঘটনায় গ্রেফতার হন। এছাড়াও ২০১৭ সালে বিস্ফোরক মামলায় এবং ২০১৯ সালে সন্ত্রাস বিরোধী আইনের একটি মামলায় গ্রেফতার করা হয় তাকে। জামিনে বের হয়ে তিনি মাইনুলের নেতৃত্বে হুজির সক্রিয় সদস্য হিসেবে কাজ করতেন। 

গ্রেফতার মুরাদ হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী’র সক্রিয় সদস্য। তিনি ব্যবসার আড়ালে হুজি সংগঠনের দাওয়াতি ও বায়তুল মালের দেখভালের দায়িত্ব পালন করতেন। 

এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি প্রাইভেটকার, ৫টি মোবাইল ফোন, একটি মাইক্রোফোন, একটি চাপাতি, দুইটি ছোড়া, ১০টি ডেটোনেটর, ১৭০টি বিয়ারিং লোহার বল, একটি স্কচটেপ, ৫ লিটার এসিড, তিনটি আইডি কার্ড ও একটি জিহাদি বই উদ্ধার করা হয়। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে অন্যান্য সহযোগীদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে ডিএমপি।

এআর/এইচকে