৬ মার্চ, ১৯৭১। এদিন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান বেতার ভাষণে ২৫ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন পুনরায় আহ্বান করেন। জুলফিকার আলী ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি অধিবেশনে যোগ দিতে অস্বীকৃতি জানায়। অন্যদিকে সামরিক জান্তা পূর্ব পাকিস্তানে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর শক্তি বৃদ্ধি করছে বলে আওয়ামী লীগ অভিযোগ করে।

একই দিন ইয়াহিয়া খান কঠোর প্রকৃতির সামরিক অফিসার জেনারেল টিক্কা খানকে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ও সামরিক আইন প্রশাসকের দায়িত্বে নিযুক্ত করা হয়। অন্যদিকে জাতির উদ্দেশে জেনারেল ইয়াহিয়া খানের বক্তৃতায় আন্দোলনকারীদের ওপর সরকারের বর্বরতার পক্ষে সাফাই বাঙালিদের বিক্ষুব্ধ করে।

শেখ মুজিব এদিন দলীয় হাইকমান্ড এবং ছাত্রলীগের সঙ্গে বৈঠক করেন। আতাউর রহমান খানের নেতৃত্বে জাতীয় লীগ, মোজাফফর আহমদের নেতৃত্বে ন্যাপ, অলি আহাদ, শ্রমিক নেতা কাজী জাফর আহমদ পৃথকভাবে সমাবেশ করে আন্দোলন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানায়। সাংবাদিক ইউনিয়ন, শিক্ষক সমিতি, মহিলা পরিষদ, ছাত্র ইউনিয়ন, কৃষক-শ্রমিক সমাজবাদী দল প্রতিবাদ সমাবেশ করে।

এদিন ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগার ভেঙে তিনশ কয়েদি পালিয়ে যায়। পালানোর সময় রক্ষীদের গুলিতে ৭ জন নিহত ও ৩০ জন আহত হয়। 

ভারতের ওপর দিয়ে পাকিস্তানের বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকবে বলে জানান ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জগজীবন রাম।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে চলমান অসহযোগ আন্দোলনের অংশ হিসেবে এদিনও সারাদেশে হরতাল পালন করা হয়। এদিন রাজশাহীতে মিছিলকারীদের ওপর সশস্ত্র বাহিনীর গুলিতে একজন নিহত ও ১৪ জন আহত হয়। সান্ধ্য আইন অব্যাহত থাকে। এছাড়া খুলনায় দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও গুলিবর্ষণে ১৮ জন নিহত ও ৮৬ জন আহত হয়।

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ব্যক্তির অবস্থান (১ম সংস্করণ), ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের দৈনিক ইত্তেফাক ও অন্যান্য

এসএসএইচ