দুই দিনের সফরে শনিবার (১২ নভেম্বর) ঢাকায় আসছেন সৌদি আরবের উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নাসের বিন আব্দুল আজিজ আল-দাউদ। তার সফরে দেশটির সঙ্গে নিরাপত্তা সহযোগিতাসহ দুটি চুক্তি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সৌদির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তার প্রতিনিধি হয়ে দেশটির উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ১২ নভেম্বর ঢাকা সফরে আসছেন। ১৩ নভেম্বর রাতে তিনি দেশে ফিরে যাবেন।

কূটনৈতিক সূত্র বলছে, সৌদির উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর বেশ গুরত্বের সঙ্গে দেখছে ঢাকা। তার সফরে দুটি চুক্তি হতে যাচ্ছে। দুই চুক্তির মধ্যে একটি হচ্ছে, নিরাপত্তা সহযোগিতা নিয়ে। অন্যটি সৌদির ‘রোড টু রোড টু মক্কা’ উদ্যোগ অর্থাৎ হজযাত্রীদের ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা ঢাকা থেকেই শেষ করার যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, সেটির আনুষ্ঠানিক চুক্তি।

জানা গেছে, সৌদির উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মূল বৈঠকটি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের সঙ্গে হবে। বৈঠক শেষে চুক্তি দুটি স্বাক্ষরিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন আল-দাউদ। এছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন তিনি। প্রবাসী কল্যাণ বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) মাশফি বিনতে শামস ঢাকা পোস্টকে বলেন, সফরটা খুবই গুরত্বপূর্ণ। কারণ ওদের হোম মিনিস্টার রয়েল ফ্যামিলির। আমাদের হোম মিনিস্টারের আমন্ত্রণে আসছেন। মূলত, সৌদির হোম মিনিস্টারকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। ওনার প্রতিনিধি হয়ে ডেপুটি হোম মিনিস্টার আসছেন। তিনি কিন্তু পূর্ণ মন্ত্রিসভার সদস্য। আমরা আশা করছি ওনার সফরে ভালো কিছু হবে।

সৌদির উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে দুই দেশের মধ্যে কী চুক্তি হতে পারে- জানতে চাইলে মাশফি বিনতে শামস বলেন, আমরা আশা করছি, দুইটা চুক্তি হতে পারে। একটা হচ্ছে, ‘রোড টু মক্কা’; যেটার ইমিগ্রেশনটা ঢাকায় হচ্ছে। এবার হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে সৌদির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি হয়নি। হয়তো এবার ফরমাল সাইনিং হবে। আরেকটা সিকিউরিটি কো-অপারেশন নিয়ে হতে পারে।

নিরাপত্তা সহযোগিতাসহ চুক্তির আওতায় কোন বিষয়গুলো থাকছে- এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব মাশফি বলেন, প্রায় ২২ থেকে ২৬ লাখ বাংলাদেশি সৌদিতে আছেন। তাদের নিরাপত্তা বিষয় থাকবে, সেখানে মানি লন্ডারিংয়ের মতো বিষয়গুলো থাকতে পারে।

গত ২৬ অক্টোবর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন ঢাকায় নিযুক্ত সৌদির রাষ্ট্রদূত এসা ইউসুফ এসা দুহাইলান। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও রাষ্ট্রদূত।

সেদিন রাষ্ট্রদূত বলেছিলেন, দেশটির উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর নিয়ে কাজ চলছে। সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে এটি একটি ভালো সফর হবে। নিরাপত্তা চুক্তির বিষয়ে তিনি বলেছিলেন, উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে নিরাপত্তা সহযোগিতা নিয়ে চুক্তি হবে। ওই চুক্তিতে তথ্য সরবরাহ, উপাত্ত যাচাইয়ের মতো বিষয়গুলো থাকবে।

চুক্তির বিষয়ে ড. মোমেন বলেছিলেন, সৌদির সঙ্গে নিরাপত্তা চুক্তি হবে। এটি অত্যন্ত ভালো। আমরা এটির সঙ্গে আছি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়টি দেখছে।

এনআই/এসএম