ছয় দফা দাবি নিয়ে ১৩তম দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন বিসিএস নন-ক্যাডার চাকরিপ্রত্যাশীরা। লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ১৩তম দিন চললেও সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) থেকে দায়িত্বশীল কেউ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।

বুধবার (১৬ নভেম্বর) দুপুর ১২টা থেকে পিএসসির গেটে মিছিল, কবিতা, গান ও বক্তৃতার মাধ্যমে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তারা।

এসময় আন্দোলনকারী চাকরিপ্রত্যাশীরা ‘কালো বিধির কালো হাত ভেঙে দাও-গুঁড়িয়ে দাও’, ‘দুর্নীতির কালো হাত ভেঙে দাও-গুঁড়িয়ে দাও’, ‘লাল ফিতার কালো হাত ভেঙে দাও-গুঁড়িয়ে দাও’ ও ‘লাল ফিতার দৌরাত্ম্য মানি না মানবো না’—ইত্যাদি স্লোগানে মিছিল করেন।

আন্দোলনকারী চাকরিপ্রত্যাশীরা ঢাকা পোস্টকে জানান, আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে গেলেও পিএসসির কোনো পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছি না। এতে একদিকে আমরা যেমন হতাশ হচ্ছি, অন্যদিকে সামনে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। আমাদের দাবি আদায় না হলে খুব শীঘ্রই কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। 

আরও পড়ুন : বিসিএস : মেধাবীরা কেন মাঠে? 

এদিকে গত ৩১ অক্টোবর পিএসসি চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন অফিস শেষ করে বের হলে আন্দোলনকারীরা তার গাড়ি অবরুদ্ধ করেন ও শুয়ে পড়েন। পরে আন্দোলন সমন্বয়কদের সিদ্ধান্তে পিএসসি চেয়ারম্যানের গাড়ি বের হতে দেওয়া হয়।

আন্দোলনকারীদের দাবিগুলো হলো—

১. যেহেতু বিজ্ঞপ্তিতে ৪০-৪৩তম বিসিএস পর্যন্ত নন-ক্যাডার পদের সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি, সেহেতু পিএসসির বিজ্ঞপ্তির পর ৪০-৪৪তম বিসিএস পর্যন্ত বিজ্ঞপ্তির তারিখওয়ারী নন-ক্যাডার পদ বিভাজনের মাধ্যমে পদ সংখ্যা নির্ধারণের এ সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।

২. বিজ্ঞপ্তির তারিখওয়ারী পদ বিভাজনের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেখানে ৪০তম বিসিএস নন-ক্যাডারের পদ ৩৬, ৩৭ ও ৩৮তম বিসিএসকে প্রদান করা হয়েছে। সুতরাং তারিখওয়ারী পদ বিভাজনের এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।

৩. করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত ইতিহাসের দীর্ঘকালীন ৪০তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নন-ক্যাডার অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকা প্রার্থীদের থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রার্থীকে নন-ক্যাডারে সুপারিশ করাতে হবে।

আরও পড়ুন : সরকারি চাকরি কেন সবার প্রথম লক্ষ্য? 

৪. যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে পিএসসি গত ২৯ মার্চ পর্যন্ত ৩৪-৩৮তম বিসিএস নন-ক্যাডার তালিকা প্রকাশ করেছে, সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বিদ্যমান সমস্যার সমাধান করতে হবে।

৫. পিএসসির মূল বক্তব্য আড়াল করে অর্থাৎ ‘যার যা প্রাপ্য তাকে তাই দেওয়া হবে’, এই ভিত্তিহীন কথা বলে যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে তার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিতে হবে। এছাড়া বেকার সৃষ্টির এই অপপ্রয়াস অনতিবিলম্বে বন্ধ করে বেকারবান্ধব নীতি নবায়ন করতে হবে।

৬. বিগত এক যুগে পিএসসি যে স্বপ্নময়, নির্ভরযোগ্য ও বেকারবান্ধব প্রতিষ্ঠান ছিল সেই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।

এমএম/কেএ