রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, বাজারে প্রতিযোগিতা ধরে রাখতে এবং আঞ্চলিক সংযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি একটি আন্তর্জাতিক মাল্টিমোডাল লজিস্টিক হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে কিছু নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশও যোগাযোগ খাতে খরচ কমাতে পিছিয়ে নেই।

তিনি বলেন, প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে জাতীয় লজিস্টিকস ডেভেলপমেন্ট পলিসি প্রণয়ন করা হবে, পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশ একটি মাল্টিমোডাল এবং আঞ্চলিক লজিস্টিক হাব (কেন্দ্র) হওয়ার চেষ্টা করবে যাতে দেশের ব্যবসাকে বিশ্বের অন্যান্য অংশের সঙ্গে সংযুক্ত করা যায়।

বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর একটি হোটেলে 'ফরমুলেটিং ন্যাশনাল লজিস্টিকস ইন্ডাস্ট্রিজ ডেভেলপমেন্ট পলিসি ফর বাংলাদেশ: এক্সপেরিয়েন্স ফ্রম গ্লোবাল গুড প্রাকটিসেস' শীর্ষক কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বিশ্ব ব্যাংক গ্রুপ এবং বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্টের (বিল্ড) সহযোগিতায় দুই দিনব্যাপী এ কর্মশালার আয়োজন করে শিল্প মন্ত্রণালয়।

নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, দক্ষিণ এশীয় এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর মধ্যে আন্তঃসংযোগে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করছে। কারণ  বাংলাদেশ ভৌগলিকভাবে এই দেশগুলোর কেন্দ্রস্থলে রয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ-ভারত রেল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সংযুক্ত। শিগগিরই এটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার রেল নেটওয়ার্ক এবং চীনের বেল্ট ও রোড নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ গত কয়েক বছর ধরে টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রেখে চলেছে এবং বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিক বিস্ময় হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। ২০৩০ সালে ২৮তম অর্থনীতি ও ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ২৩তম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে। কিন্তু বাংলাদেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন ২ বছরের কোভিড প্রভাব, তারপর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে জ্বালানি, কাঁচামাল এবং খাদ্য খাতে ধাক্কা লেগেছে। আমাদের সরকার এই সমস্যাগুলো মোকাবিলা করার জন্য অবিরাম চেষ্টা করে চলেছে। এক্ষেত্রে বেসরকারি খাতের সহায়তা খুবই প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্যে সুগঠিত এবং কার্যকর লজিস্টিক সহায়তা প্রয়োজন। দেশীয় এবং বিদেশি উভয় বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার জন্য প্রধান পূর্বশর্ত উন্নত লজিস্টিক সহয়তা প্রয়োজন। যা রপ্তানি বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যের মাধ্যমে চূড়ান্ত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করবে। এর ফলে টেকসই প্রবৃদ্ধি বজায় থাকবে এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক র‌্যাঙ্কিংয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি টিকিয়ে রাখার জন্যে নিরবচ্ছিন্ন সাপ্লাই চেইন তৈরি করতে হবে যেন আমরা সামনের দিকে অনেক এগিয়ে যেতে পারি।

রেলমন্ত্রী বলেন, রেল মন্ত্রণালয় ব্যবসাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্যে কাজ করছে। বন্দরের মধ্যে পণ্য পরিবহনে আরও উন্নত করা, ঢাকা-চট্টগ্রাম মালবাহী পরিবহন ব্যবস্থা উন্নত করতে ১.৬৮ বিলিয়ন ডলারের প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করেছে। এটার ফলে সমন্বিত পরিবহন অবকাঠামো উন্নয়ন বাস্তবায়ন করবে। আমরা মোংলা সমুদ্র বন্দরসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বন্দরগুলোকেও অদূর ভবিষ্যতে রেলপথে সংযুক্ত করার কথা ভাবছি।  

সমাপনী কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জ্ঞানেন্দ্র নাথ সরকার, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুব আলম প্রমুখ।

এমএইচএন/এসকেডি