বাবা মারা যাওয়ায় তিন মাস আগে দুবাই থেকে দেশে এসেছিলেন মেহেদী হাসান (২৮)। তার আর দুবাই ফিরে যাওয়া হলো না। শনিবার (১৯ নভেম্বর) ভোর ৩টায় খিলগাঁও ফ্লাইওভারে মোটরসাইকেল চালিয়ে ওঠার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় দুই বন্ধুর সঙ্গে মৃত্যু হয় তারও। নিহত অন্য দুজন হলেন— আল আমিন (৩৪) ও জজ মিয়া (৩৬)।

নিহত মেহেদী হাসানের চাচা সালাউদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার ভাই তিন মাস হলো মারা গেছেন। মৃত্যুর খবর পেয়ে দুবাই থেকে তিন মাস আগে আমার ভাতিজা মেহেদী দেশে আসে। আজ আমার ভাইয়ের মৃত্যুর তিন মাস পূর্ণ হলো। আজ আমার ভাতিজাও চলে গেল। দেশে এসে বাবার ব্যবসার হাল ধরেছিল সে। সে দুবাই থেকে আসা যাওয়ার মধ্যে থাকত, সেখানেও তার ব্যবসা আছে। কিন্তু আর ফিরে যাওয়া হবে না দুবাই। তিন বছর আগে সে বিয়ে করেছে। তার কোনো সন্তান নেই।

তিনি আরও বলেন, রাতে তিন বন্ধু মিলে ক‍্যারাম খেলে মালিবাগ খেতে যাচ্ছিল। সিসিটিভি ফুটেজে আমরা দেখতে পেলাম, ফ্লাইওভারের মুখে একটি কাভার্ড ভ্যান দাঁড়িয়ে ছিল। তার ডান পাশে আরেকটি ট্রাক ছিল। দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওই ট্রাকের পেছনে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিন জন মারা যায়।

আরও পড়ুন : গভীর রাতে ঢাকায় ট্রাকচাপায় তিন বন্ধুর মৃত্যু

নিহতদের বন্ধু মুকুল ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাতে ক্যারাম খেলে তিন বন্ধু খেতে যাচ্ছিলেন মালিবাগে। আল আমিন মোটরসাইকেল  চালাচ্ছিলেন, জজ মিয়া মাঝে বসে ছিলেন। পেছনে বসা ছিলেন মেহেদী। তিনি আমাদের চেয়ে বয়সে ছোট হলেও আমরা বন্ধুর মতোই চলাফেরা করি। আল আমিনের এক মেয়ে ও এক ছেলে ছিল। জজ মিয়া এখনও বিয়ে করেননি।

জানতে চাইলে খিলগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুজিত কুমার সাহা ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাতে তিন যুবক মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। আমরা ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। সেখানে দেখা যায়, মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় দাঁড়িয়ে থাকা কাভার্ড ভ্যানের পেছনে ধাক্কা লাগে। পরে পাস দিয়ে যাওয়ার সময় বালুর ট্রাক তাদের উপরে উঠে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তিন জন মারা যায়। বর্তমানে মরদেহগুলো ঢাকা মেডিকেলের মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে তাদের মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।

এসএএ/এসএসএইচ/