ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রধান ফটকের সামনে থেকে পুলিশের চোখে-মুখে স্প্রে করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ওই দুই ব্যক্তি জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। এ ঘটনায় এক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, পুরো কাজটি হয়েছে ‘ওপেন’, প্রকাশ্য দিবালোকে, তাদের ভয়ে কেউ সামনে এগিয়ে আসেনি।

রোববার (২০ নভেম্বর) দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটের দিকে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রধান ফটকের সামনে থেকে দুটি মোটরসাইকেলে করে আসা চার জঙ্গি তাদের ছিনিয়ে নেয়। সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালে হাজির করে হাজত খানায় নেওয়ার সময় চার আসামির মধ্যে দুইজনকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

আরও পড়ুন : জঙ্গিবাদ : যেভাবে আমরা ব্যর্থ হয়েছি 

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, চার আসামি কোর্টে হাজিরা দিয়ে যাচ্ছিল। তাদের নিয়ে যাচ্ছিলেন একজন পুলিশ এবং একজন আনসার সদস্য। গেটের সামনে আসার পরপরই ওই ৪ আসামি পুলিশ ও আনসার সদস্যকে কিল-ঘুষি মারতে শুরু করে। বাইরে আরও চারজন লোক ছিল বাইক নিয়ে। ঘুষি দেওয়ায় পুলিশ সদস্য আহত হন এবং তার শরীর থেকে রক্ত বের হয়। যার ফলে তার হাতে থাকা দুই আসামি ছেড়ে দেন তিনি। আনসার সদস্য তার হাতে থাকা দুই আসামিকে ছাড়েননি। তাকে অনেক মারধর করা হয়েছে। তাকেও ঘুষি দেওয়া হয়েছে, স্প্রে মারা হয়েছে। কিন্তু তিনি আসামি ছাড়েননি। পুলিশ সদস্য যে দুই আসামিকে ছেড়ে দিয়েছেন তারা বাইরে রাখা মোটরসাইকেলে উঠে চলে যায়।

আরও পড়ুন : জেএমবি : সুযোগের অপেক্ষায় থাকা শকুন 

তিনি আরও বলেন, রাস্তার বিপরীত পাশ থেকে মোটরসাইকেলে থাকা লোকেরা সিগন্যাল দেওয়ার পরই গেটের কাছে এসে আসামিরা পুলিশকে কিলঘুষি দেওয়া শুরু করে। এর মধ্যে গেটের দারোয়ান ধরতে এলে তাকেও স্প্রে মারা হয়, তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পার্কিংয়ে আরও ৩ জন ড্রাইভার ছিলেন, তাদেরও স্প্রে মেরে অজ্ঞান করা হয়। পথচারী ছিলেন অনেক, তাদের মধ্যে প্রথম কয়েকজনকে স্প্রে মারার পর বাকি পথচারীরা সরে যান। ‘ওপেন’ কাজ হয়েছে, কিন্তু কেউ ভয়ে সামনে যায়নি। ওই যে যাওয়ার পরপর স্প্রে মারে, আর অজ্ঞান হয়ে যায়, এটা দেখে আর কেউ ভয়ে আগায়নি। বাইরে ওনাদের যে লোকজন ছিল তারাও হয়তো চাকু-ছুরি নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। এজন্য আমিও সামনে যাইনি।

এ ঘটনায় ঢাকাজুড়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ। এছাড়া ঢাকার প্রতিটি প্রবেশ ও বের হওয়ার পথে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালাতে বলা হয়েছে। দুপুরে ডিএমপি সদরদপ্তর থেকে ঢাকার সব বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি), থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ওয়াকিটকিতে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এমএইচএন/এনআর/এসএম