জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিসিএস থেকে শুরু করে উদ্যোক্তা হওয়ার লড়াইয়ে এগিয়ে রয়েছেন। সারাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কিন্তু এই পর্যায়ে যেতে একজন শিক্ষার্থীকে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে যেতে হয়। অনেকে বলে আমার শিক্ষার্থীরা বেকার। বিত্তবান সমাজের শিক্ষার্থীরা পরিবার থেকে অর্থ নেন। কিন্তু আমার শিক্ষার্থী নিজে আয় করে পরিবারকে দেয়। তারপরেও সে দেশ বদলায়, সমাজ বদলায়। 

বুধবার (২৩ নভেম্বর) গাজীপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে ‘বাংলাদেশ ন্যাশনাল কোয়ালিফিকেশনস ফ্রেমওয়ার্ক (বিএনকিউএফ): অ্যাক্রেডিটেশন স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড ক্রাইটেরিয়া’ শীর্ষক ওয়ার্কশপে তিনি এসব কথা বলেন। 

উপাচার্য বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যখন বিদেশে যায়, তার টাকায় আমার রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়ে। সে তার আয়কৃত অর্থ সব দেশে পাঠায়। সে সেখানে বাড়ি বানায় না। অন্য কোথাও সে বাংলাদেশের টাকা লুট করে নেয় না। এটা আমার জন্য গর্বের। এটা বাংলাদেশের নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের চিত্র—যারা গভীর দেশপ্রেমে আচ্ছন্ন এবং দেশের জন্য কাজ করেন। সুতরাং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে অনেকে অনেকভাবে ব্র্যান্ড করে।

তিনি বলেন, শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য কোনো রকমে বাজার এবং যোগ্যতা সৃষ্টি নয়। শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হলো দেশ এবং মানুষ গঠন। আমরা আমাদের শিক্ষার্থীদের নিয়ে দেশ এবং সঠিক মানুষ গঠনে মনোনিবেশ করব। এ কারণেই আমরা মিয়ানমারের লাখো শরণার্থীকে আশ্রয় দেই। এটি হচ্ছে মানবিক বাংলাদেশ, স্বতন্ত্র বাংলাদেশ।  

তিনি আরও বলেন, আগামী ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের মধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষা নিশ্চিতে নতুন কারিকুলাম ও আউটকাম বেইজড শিক্ষা নিয়ে আসা হবে। আউটকাম বেইজড শিক্ষা চালু করা মানে পাশ্চাত্যকে অনুকরণ নয়। আমাদের দেশজ, প্রাচ্য অঞ্চলের শক্তি ও আমাদের শিক্ষার নৈতিকতার শক্তি পাশ্চাত্য থেকে অনেক বেশি কার্যকর এবং শক্তিশালী। সুতরাং আমরা যেন নৈতিকতা, পারিবারিক বন্ধন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অটুট রেখে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমুখী শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারি সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে।

ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়নে আমরা দক্ষতাভিত্তিক শর্ট কোর্স ও ১২টি পিজিডি কোর্স চালু করতে যাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়কে ভেতর থেকে পরিবর্তনের চেষ্টা করছি। আইসিটি, সফট স্কিল, অন্ট্রাপ্রেনারশিপসহ ১২টি দক্ষতাভিত্তিক পিজিডি কোর্স আগামী বছরের মার্চের মধ্যেই চালু হবে। আর শর্ট কোর্স চালু হবে ২০২৩ সালে। এসব কোর্সের আওতায় যখন আমাদের শিক্ষার্থীরা আসবে, তখন আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে শিক্ষকদের এই সব কোর্সে উপযোগী করে গড়ে তোলা। সে বিষয়ে আমরা এখন থেকেই উদ্যোগ নিচ্ছি। প্রয়োজনে ব্লেন্ডেড প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষকদের তৈরি করা হবে।

এমএম/কেএ