দেশের রপ্তানিমুখি পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির জন্য অবিলম্বে মজুরি বোর্ড গঠনের দাবিতে শ্রম মন্ত্রণালয় অভিমুখে পদযাত্রা করেছে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র।

তবে মন্ত্রণালয়ে যাওয়ার আগে জিরো পয়েন্ট মোড়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। তারা লোহার ব্যারিকেড ভেঙে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। পরে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাদেকুর রহমান শামীমের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল মন্ত্রণালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেন।

বুধবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরের দিকে রাজধানীর জিরো পয়েন্ট মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন। বর্তমান বাজারদরের সঙ্গে সংগতি রেখে পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ২০ হাজার টাকা এবং অন্যান্য ভাতা যুক্ত করে নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণার দাবি জানানো হয়।

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে শ্রমিক নেতা জলি তালুকদার বলেন, অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক কিন্তু বিশ্বে সর্বনিম্ন মজুরি দাতা দেশ। অথচ নিঃসন্দেহে দেশের এ শিল্পের পেছনে শ্রমিকের ভূমিকা এবং অবদানই প্রধান। সরকার দ্রুত মজুরি বোর্ড গঠন করে গার্মেন্ট শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি না করলে শ্রমিকদের পুঞ্জিভূত ক্ষোভ চলমান নিয়মতান্ত্রিক বিক্ষোভে সীমাবদ্ধ থাকবে না। সরকারের উদাসীনতা অতীতের মতো আরও একটি শ্রমিক বিদ্রোহের জন্ম দিলে তার দায়িত্বও সরকারকেই নিতে হবে।

গার্মেন্ট টিইউসির সাধারণ সম্পাদক সাদেকুর রহমান শামীম বলেন, পোশাক শিল্পের মালিকরা অর্থনীতির চরম দুর্দিনে ডলারে তাদের মুনাফার অংক গুনছেন কিন্তু শ্রমিক মজুরি পাচ্ছে টাকায় এবং ৫ বছর আগের মানদণ্ড অনুসারে। ২০১৮ সালে সর্বশেষ ঘোষিত নিম্নতম মজুরি সে সময়ের প্রেক্ষাপটে শ্রমিকদের প্রয়োজন, বাজারদর এবং দাবির সঙ্গে সামান্যও সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না। উপরন্তু মূল্যবৃদ্ধির ফলে অচিরেই শ্রমিকদের প্রকৃত আয় পূর্বের তুলনায় কমে গিয়েছিল। গত কয়েক বছরে জিনিসপত্রের দাম, বাড়ি ভাড়া অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। শ্রমিকদের শুধু নয় বর্তমান পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের অবস্থা চরম বেগতিক। এই অবস্থায় বিদ্যমান মজুরি দিয়ে দেশের ৭৮ ভাগ রপ্তানি আয় করা পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের পক্ষে কোনোভাবেই জীবন ধারণ করাও সম্ভব হচ্ছে না।

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন গার্মেন্ট টিইউসির সহ-সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর মঈন, কোষাধ্যক্ষ আজিজুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দুলাল সাহা, শাহীন আলম, কেন্দ্রীয় কমিটির সংগঠক ফারুক হোসেন প্রমুখ।

এমএইচএন/এসকেডি