ডিপিপি তৈরিতে ঝুঁকি পর্যালোচনার সক্ষমতা বাড়াতে হবে
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, দক্ষতার অভাবে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতি পর্যালোচনা সঠিকভাবে হচ্ছে না। ক্ষতি কমাতে উন্নয়ন প্রকল্প তৈরিতে ঝুঁকি পর্যালোচনার সক্ষমতা বাড়াতে হবে। একইসঙ্গে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) প্রকল্প এলাকার দুর্যোগ ঝুঁকি সম্পর্কিত তথ্য অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে যাতে ওই এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকেও নজর দিতে হবে।
মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে সেমিনারের আয়োজন করে কার্যক্রম বিভাগ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
বিজ্ঞাপন
এসময় পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে দেশের দরিদ্র মানুষেরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যারা মারা যায় তাদের অধিকাংশই দরিদ্র মানুষ, যাদের চাল-চুলা কিছুই নেই। তবে যারা মোটামুটি একটু সচ্ছল তাদের তেমন ক্ষতি হয় না। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতির মূলে রয়েছে দারিদ্রতা এবং অর্থনৈতিক বিষয়গুলো। এই দুটোই মানুষের সৃষ্টি এবং এর মূলে রয়েছে অবিচার। সবার আগে এটা বন্ধ করেত হবে।
তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বন্ধ করা সম্ভব নয়। তবে এর প্রভাব থেকে প্রকল্পগুলোকে রক্ষা করা জরুরি। দুর্যোগের ঝুঁকি নিরূপনের মাধ্যমে ক্ষতি কমিয়ে আনতে কাজ করতে হবে। এজন্য অবশ্যই সংশ্লিষ্টদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে। যাতে প্রাকৃতিক দুর্যোগে কারণে প্রকল্পের ক্ষতি না হয় এবং অর্থের অপচয় না হয়।
বিজ্ঞাপন
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কার্যক্রম বিভাগের যুগ্ম-প্রধান ড. নুরুন নাহার। প্রতিবেদনে তিনি বলেন, সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়নের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত ঝুঁকি পর্যালোচনা হয় না। অধিকাংশ প্রকল্প প্রস্তাবে ঝুঁকির প্রভাব মোকাবিলার ক্ষেত্রে তেমন কিছু থাকে না। প্রকল্প এলাকায় ঝুঁকি কমাতে কি ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং এর জন্য কত ব্যয় হবে এসব নির্ধারণ করা হয় না। এছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে নতুন করে কি ধরনের দুর্ভোগ সৃষ্টি হতে পারে এবং নিরসনে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা উল্লেখ থাকে না।
তিনি বলেন, টেকসেই উন্নয়ন করতে গেলে অবশ্যই প্রকল্প গ্রহণের আগে প্রকল্প এলাকার ঝুঁকি নির্ণয় করতে হবে এবং প্রকল্পে প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এগুলো করতে পারলে প্রকল্পগুলো যেমন দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা করা যাবে তেমনি অর্থের অপচয়ও কম হবে।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, যেকোনো টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রাকৃতিক ঝুঁকি পর্যালোচনা ব্যবস্থা জরুরি। এক্ষেত্রে দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে। দক্ষতা বৃদ্ধিতে কর্মকর্তাদের দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে তারা প্রাকৃতিক প্রভাব এবং প্রশমনের ব্যবস্থা সম্পর্কে অবগত থাকেন। এছাড়া কি ধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে সে বিষয়ে যথাযথ মূল্যায়ন করতে পারেন।
সেমিনারে পরিকল্পনা কমিশনের বিভিন্ন বিভাগ এবং উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এসআর/কেএ