বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) এনাটমি বিভাগের কাছে দেশ বরেণ্য স্থপতি মোবাশ্বের হোসেনের মরণোত্তর দেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। 

বুধবার (৪ জানুয়ারি) মোবাশ্বের হোসেনের ছেলে সাইদ হোসেন তমাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করেন।

এসময় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ এ ধরণের মহৎ উদ্যোগের প্রশংসা করে মরণোত্তর দেহদানকারীর নিকট আত্মীয়সহ পরিবারের সবাইকে এ ত্যাগের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি দেশের সব মানুষের প্রতি এরকম মহৎ কাজে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানান।

উপাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এনাটমি বিভাগের দেহ সংরক্ষণ, পরীক্ষণ এবং গবেষণাকার সর্বাধুনিক। আমাদের এখানে যাদের দেহদান করা হয়েছে, তাদের স্বজনদের বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্মান জানানো হবে। মরণোত্তর দেহদানে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে একে সামাজিক আন্দোলন হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।

প্রয়াতের পুত্র সাঈদ হোসেন তমাল বলেন,  মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান। তারা সর্বস্ব ত্যাগ করে মুক্তিযুদ্ধে গেছেন। আমার বাবা দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করে গেছেন। সর্বশেষ চিকিৎসা বিজ্ঞানে অবদানের জন্য তিনি তার দেহদান করে গেছেন।

অনুষ্ঠানে বিদেহীর আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়। মরণোত্তর দেহদানে দেশের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করে প্রয়াতের একমাত্র ছেলে সাইদ হোসেন তমাল মরাদেহকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য সবাইকে এক মিনিট করতালি দেওয়ার অনুরোধ জানালে উপস্থিত সবাই এক মিনিট করতালি দিয়ে প্রয়াত স্থপতি মোবাশ্বের হোসেনকে শ্রদ্ধা জানান। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর মরদেহকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এনাটমি বিভাগে সংরক্ষণ, শিক্ষণ-প্রশিক্ষণ ও গবেষণার কাজে ব্যবহারের অনুমতিপত্রটি বিভাগীয় চেয়ারম্যানের নিকট দেওয়া হয়। 

মরদেহ হস্তান্তরের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মনিরুজ্জামান খান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসেন, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল, দিল্লি হাইকমিশনে নিযুক্ত প্রেস মিনিস্টার সাংবাদিক শাবান মাহমুদ, রেজিস্ট্রার ডা. স্বপন কুমার তপাদার, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট মেম্বার বাংলাদেশ ফেডারেল ইউনিয়নের সভাপতি ওমর ফারুক, এনাটমি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. লায়লা আনজুমান বানু, স্থপতি মোবাশ্বের হোসেনের মেয়ে সোনিয়া কৃষ্টি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনরা, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যানরা, এনাটমি বিভাগের সব শিক্ষক ও রেসিডেন্টরা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি এনাটমি বিভাগের নবনির্মিত মরচুয়ারি, প্ল্যাস্টিনেশন ল্যাব, স্কিল ল্যাব অ্যান্ড মিউজিয়াম কমপ্লেক্সে সম্পন্ন করা হবে। পুরো প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হতে এক মাস সময় লাগবে।

টিআই/এফকে