টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের জন্য নাগরিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার বিষয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেছেন, সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেসব সেবা সরবরাহ করে সেগুলোতে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে নাগরিকদের ক্ষমতায়ন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এজন্য স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (১১ মাচ) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) নাগরিক সম্মেলন-২০২১ ‘গণতান্ত্রিক সুশাসন ও উন্নয়ন: তৃণমূল প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞতা’ শীর্ষক এক সেমিনারে এ কথা বলেন তিনি। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন (ইইউ) এর রাষ্ট্রদূত রেঞ্জি তেরিংসহ সিপিডির অঙ্গ প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা এতে উপস্থিত ছিলেন।

রেহমান সোবহান বলেন, ‘নাগরিকদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদের প্রতিশ্রুতির প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ থেকে নাগরিকদের যথাযথ সেবা সরবরাহ করে সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘সরকারি স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পয়ঃনিষ্কাশন ও অবকাঠামো সুবিধা ব্যবহারে সব নাগরিকের সমধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এসডিজির যেসব লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, সেগুলোকে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদসহ অন্যান্য স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কর্মপদ্ধতির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। নাগরিকরা যাতে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান থেকে তাদের প্রাপ্য সেবা যথাযথ উপায়ে পেতে পারেন, সে বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো এবং এসডিজি বিষয়ে নাগরিকদের মধ্যে উপযুক্ত উপলব্ধি সৃষ্টি করতে হবে।’

সিপিডির চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘স্থানীয় সরকার যেন অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত না হয়, সে বিষয়ে নজর রাখতে হবে। সরকার এসডিজি বিষয়ে যেসব নীতি কাঠামো প্রণয়ন করছে, সেগুলোর বিষয়ে স্থানীয় পর্যায়ে নাগরিকদের মধ্যে যাতে যথাযথ উপলব্ধি সৃষ্টি হয় সেজন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। জীবন চক্রভিত্তিক সব জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে বালিকা ও নারীদের সুরক্ষায় বিশেষ জোর দিতে হবে। তারা যেন পুরুষের মাধ্যমে হেনস্তার শিকার না হয়, সে বিষয়ে নারীদের জন্য সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।’

সিপিডি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, ‘আমরা বলতে পারি না, বৈষম্য দূর করতে পেরেছি। সবক্ষেত্রেই বৈষম্য আছে। টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে এসব বৈষম্য থাকলে হবে না। প্রবৃদ্ধি যদি কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করতে না পারে তাহলে প্রবৃদ্ধি টেকসই হতে পারে না এবং কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। যাদের অর্থ আছে, তারা সরকারি সেবার প্রতি নির্ভরশীল থাকে না। প্রান্তিক মানুষই সরকারের কাছে সেবা প্রাপ্তির জন্য যায়। সরকার এই সেবাটাই মানসম্পন্ন দিতে পারছে না।’

ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের গড় দারিদ্র্য ২০ শতাংশ। কিন্তু এমনও এলাকা আছে, যেখানে দারিদ্র্য হার ৫০ শতাংশেরও বেশি। এসডিজির লক্ষ্য অর্জন করতে হলে ওইসব পিছিয়ে পরা এলাকায় বিশেষ নজর দিতে হবে।’

এসআর/জেডএস