চট্টগ্রাম আদালতে পুলিশের হেফাজত থেকে শামসুল হক ওরফে বাচ্চু (৬০) নামে মাদক মামলার এক আসামি পালিয়ে গেছে। ঘটনার চার দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো ওই আসামির হদিস পায়নি পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) বিকেলে এ ঘটনা ঘটলেও বিষয়টি জানা যায় রোববার (৮ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে। এ ঘটনায় শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) নগরের কোতোয়ালি থানায় সদর কোর্ট পরিদর্শক জাকের হোসাইন মাহমুদ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। দণ্ডবিধি আইনের ২২৪ ধারায় দায়ের হওয়া ওই মামলায় শামসুল হক ওরফে বাচ্চুকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে।

শামসুলের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার কালীরবাজার ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায়। তার বাবার নাম মৃত রহমত আলী। তার বিরুদ্ধে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন থানা মাদক মামলা রয়েছে বলে জানায় পুলিশ।

রোববার (৮ জানুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে মামলার বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল কবির। তিনি বলেন, ‘এখনো আসামি গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।’

আদালত সূত্র ও মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, বুধবার (৪ জানুয়ারি) চন্দনাইশ পৌরসভা উত্তর গাছবাড়িয়া এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বিশেষ চেকপোস্ট বসায় পুলিশ। ওই দিন দুপুরে একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যাত্রীবাহী বাস থেকে এক হাজার পিস ইয়াবাসহ শামসুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করে পরদিন বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে পাঠানো হয়। আদালতে তাকে মাদক মামলার জিআরও শাখায় বুঝিয়ে দেয় চন্দনাইশ থানা পুলিশ। এরপর তাকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আদালতের আদেশের পর শামসুলকে কোর্ট হাজতে রাখা হয়।

জেলা সদর কোর্ট পরিদর্শক বাদী হয়ে দায়ের হওয়া মামলায় উল্লেখ করা হয়, আসামিকে হাজতে রাখার পর ওইদিন সন্ধ্যায় তাকে কারাগারে পাঠানোর জন্য হ্যান্ডকাফ লাগানো হয়। এরপর তাকে হাজতখানার সামনে সেরেস্তা টেবিলের পেছনে একটা বেঞ্চে বসতে দেওয়া হয়। কর্তব্যরত পুলিশ আসামিদের কারাগারে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এই ফাঁকে শামসুল পালিয়ে যায়। যদিও আদালতের একটি সূত্র জানিয়েছে, আসামিকে পুলিশ সদস্যরা টাকার বিনিময়ে খাবার খাওয়ানোর এক ফাঁকে পালিয়ে গেছে সে।

ঘটনার পরপরই ওইদিন রাতে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) শাখা এবং জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসাইন ঢাকা পোস্টকে বলেন, চট্টগ্রাম আদালতে অতীতে এরকম আসামি পলায়নের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ বারবার এ বিষয়ে বেখেয়াল থাকে। সামান্য টাকার লোভে আসামিদের অনৈতিক সুবিধা দিতে গিয়ে এ ধরনের বারবার হচ্ছে। তাছাড়া সম্প্রতি ঢাকার আদালত থেকেও জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। আসামিদের যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশকে আরও সতর্ক হতে হবে। প্রয়োজনে কোর্ট পুলিশ ইউনিটে জনবল বাড়াতে হবে।

/এসএসএইচ/