সম্প্রতি আফগানিস্তানে উচ্চ শিক্ষা ও কর্মসংস্থানে দেশটির নারীদের ওপর আরোপিত বৈষম্যমূলক নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি আফগানিস্তানে অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি দেখতে চায় বাংলাদেশ।

বুধবার (১১ জানুয়ারি) আফগানিস্তান প্রসঙ্গে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা-ওআইসির এক জরুরি সভায় সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও ওআইসির স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী এ কথা বলেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী উন্নয়নে বাংলাদেশ অন্যতম চ্যাম্পিয়ন দেশ। যা আমাদের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। আমরা মনে করি, আফগান কর্তৃপক্ষের এসব সিদ্ধান্ত আফগান নারীদের উন্নয়নের সুযোগ আরও সীমিত করবে। যা এই যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করবে।

তিনি বলেন, এছাড়া এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ইসলামের বিরুদ্ধে একটি ভুল বার্তা ছড়িয়ে দেবে। পাশাপাশি আফগান কর্তৃপক্ষের বিশ্বাসযোগ্যতাকে আরও প্রশ্নবিদ্ধ করবে।

রাষ্ট্রদূত জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, আফগানিস্তানে রাজনৈতিক সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ সরকার এ পর্যন্ত দুই শতাধিক আফগান নারী শিক্ষার্থীকে বাংলাদেশে প্রবেশের সুবিধা দিয়েছে। যাতে তারা বাংলাদেশে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনে তাদের উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। পাশাপাশি তাদের ভবিষ্যৎ কর্মজীবনের জন্য আরও ভালো সুযোগ পেতে পারে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০২২ সালে আফগানিস্তানের জনগণের জন্য মানবিক সহায়তা হিসেবে জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয়ের কার্যালয় তহবিলে প্রায় এক লাখ বিশ হাজার মার্কিন ডলার দান করেছে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, এছাড়াও আমরা বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ বিমানে করে গত বছর জুলাই মাসে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত আফগানদের জন্য মানবিক সহায়তা প্রেরণ করেছি।

সভার শুরুতে ওআইসি মহাসচিব বর্তমান আফগান পরিস্থিতি উন্নয়নে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার ওপর আলোকপাত করেন। পরে উন্মুক্ত আলোচনায় বাংলাদেশ ছাড়াও ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, তুরস্ক, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরাক, ফিলিস্তিন ও অন্যান্য দেশের স্থায়ী প্রতিনিধিরা আফগানিস্তান সম্পর্কে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। আলোচনা শেষে একটি যৌথ বিবৃতি দেওয়া হয়।

ওআইসি সভা শেষে ওআইসি মহাসচিবের সঙ্গে এক আলাদা বৈঠকে মিলিত হন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত। সেখানে মহাসচিবের সম্ভাব্য বাংলাদেশ সফরে নিয়ে আলোচনা করেন তিনি। পাশাপাশি আগামী মার্চে মৌরিতানিয়াতে অনুষ্ঠিতব্য ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ৪৯তম সম্মেলনে রোহিঙ্গা সংকট সমাধান ও তাদের জন্য আর্থিক সোয়তার বিষয়টি আলোচ্যসূচিতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে রাখার জন্য অনুরোধ জানান।

এছাড়া বাংলাদেশে অবস্থিত ইসলামি প্রযুক্তি  বিশ্ববিদ্যালয় ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা হয়। মহাসচিব ওআইসির কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশের গঠনমূলক অংশগ্রহণের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

এনআই/কেএ