সকালে থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যান চলাচল স্থবির হয়ে ছিল।

রাজধানীর কিছু এলাকায় আজ তীব্র যানজটের কারণে নির্ধারিত সময়ে বিমানবন্দরে পৌঁছাতে পারছেন না পাইলট, ক্রু ও বিমানযাত্রীরা। ফলে সকাল থেকে ৩০টিরও বেশি ফ্লাইট নির্ধারিত সময়ে উড্ডয়ন করতে পারেনি।   

অনেকেই এয়ারলাইন্স ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে ফোন করে ফ্লাইট বিলম্বে ছাড়ার অনুরোধ করেন। আর এ কারণে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষও ট্রাফিক পুলিশের কাছে ফোন করে বিমানযাত্রীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেছে। 

একটি বেসরকারি এয়ারলাইন্স প্রতিষ্ঠানের বিমানবন্দরে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকাল ৯টায় ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম রুটের ফ্লাইটে ৫৩ জন যাত্রী ছিল। তাদের মধ্যে ২৭ জনই ফোন করে ফ্লাইট পেছাতে বলেছেন। বাধ্য হয়ে ফ্লাইটটি প্রায় পৌনে ২ ঘণ্টা দেরিতে ছেড়েছে। শুধু তাই না, সকাল থেকে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ রুটের অধিকাংশ ফ্লাইটই এক থেকে দেড় ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ছে।

বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, যানজটের কারণে শুধু যাত্রীই নয়, বিমানের ক্রু-পাইলটও নির্ধারিত সময়ে বিমানবন্দরে পৌঁছাতে পারেননি। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটের ক্রুদের বহন করা গাড়ি নির্ধারিত সময়ে বিমানবন্দরে না পৌঁছানোর কারণে তাদের ফ্লাইটটি নির্ধারিত সময়ের ৩ ঘণ্টা পর উড্ডয়ন করে। 

আরও পড়ুন : ইজতেমার চাপ সড়কে, সামাল দিতে গাড়ি ঘুরিয়ে দিচ্ছে পুলিশ

এ বিষয়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকাল থেকে যানজটের কারণে বিভিন্ন ফ্লাইটের যাত্রীদের বিমানবন্দরে আসতে সমস্যা হচ্ছিল। তাদের দ্রুত বিমানবন্দরে পৌঁছানোর জন্য এপিবিএন ও ট্রাফিক পুলিশের সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে। আমরা হোটেল লা মেরিডিয়ানের সামনে থেকে বাম লেনে শুধুমাত্র বিমানবন্দরের যাত্রী, ক্রু ও পাইলটদের যানবাহন প্রবেশের ব্যবস্থা করার নির্দেশনা দিয়েছি। লেনটি আগে সর্বসাধারণের ব্যবহারের জন্য ছিল না, সংরক্ষিত ছিল। আমরা সেই লেনে যাত্রীদের বিমানবন্দরে প্রবেশের সুযোগ করে দিচ্ছি।

বিমানবন্দর সূত্র জানায়, সকাল থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সসহ তিনটি বেসরকারি এয়ারলাইন্সের সৈয়দপুর, রাজশাহী, যশোর, কক্সবাজার, কলকাতা, কুয়ালালামপুর, নেপাল রুটের ফ্লাইট প্রায় ১ থেকে ৩ ঘণ্টা দেরিতে উড্ডয়ন করে। কুয়াশার কিছুটা প্রভাব থাকলেও মূলত যানজটের কারণে অভ্যন্তরীণ রুটের ৩০টিরও বেশি ফ্লাইট বিলম্বে ছেড়েছে।

আজ যানজট এত তীব্র কেন
দুই পর্বের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হচ্ছে আগামীকাল শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি), চলবে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। ইজতেমার প্রভাবে বিমানবন্দর-উত্তরা হয়ে গাজীপুরগামী সড়কে তীব্র যানজট ছিল সকাল থেকেই।

এছাড়াও গাজীপুরে সড়কের এক লেন সচল থাকার কারণে শুধু উত্তরা, টঙ্গি সড়ক নয়, রাজধানীর মহাখালী, বাড্ডা, রামপুরা, মালিবাগ, মতিঝিল, গুলশান, মিরপুরের একাংশসহ তেজগাঁও এলাকার সড়কে দেখা গেছে যানবাহনের বাড়তি চাপ। গাড়ির এ চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের। 

আরও পড়ুন : যানজটে আটকা, গাড়ির ছাদে বসে আয়েশ করে মদ্যপান!

ট্রাফিক উত্তরা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) কামরুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে দেশ ও বিদেশে থেকে হাজার হাজার মুসল্লি তুরাগ নদীর পাড়ে এসে হাজির হচ্ছেন। এর কারণে সড়কে গাড়ির চাপ বেড়েছে। এ ছাড়া সড়কের অবস্থাও খারাপ। গাজীপুরে সড়কে এক লেনে চলছে দুই লেনের গাড়ি। ফলে বিমানবন্দর এলাকা থেকে উত্তরার দিকে বা গাজীপুরের দিকে যানবাহন চলাচলে বাড়তি সময় লাগছে।  

এআর/এনএফ