রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সড়কে গত বৃহস্পতিবার তীব্র যানজটের পর টানা দুই দিন ওই সড়কে কোনো যানজট দেখা যায়নি। থেমে থেমে কয়েক জায়গায় গাড়ির সামান্য জটলা থাকলেও তা ভোগান্তির পর্যায়ে যায়নি।

তবে আগামীকাল (রোববার) যানজটের আশঙ্কা রয়েছেন বিমানবন্দর ও উত্তরা এলাকায়। এ ক্ষেত্রে নগরবাসীকে বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ থেকে দেওয়া ডাইভারশন মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এছাড়া রোববার (১৫ জানুয়ারি) বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাতকে ঘিরে গাজীপুরের কয়েকটি রুটে যান চলাচল বন্ধ থাকবে বলেও জানিয়েছে গাজীপুর মহানগর পুলিশ।

এদিকে শনিবার (১৪ জানুয়ারি) সকাল থেকে বনানী ও প্রগতি সরণি থেকে উত্তরা পর্যাপ্ত সরেজমিনে দেখে যায়, বনানী ও রামপুরা থেকে উত্তরাগামী রাস্তায় তেমন কোনো যানজট নেই। স্বাভাবিক দিনের মতো যান চলাচল করছে। তবে কুড়িল ফ্লাইওভারের নিচে কিছুটা গাড়ির জটলা থাকলেও তা ভোগান্তির আকারে পৌঁছায়নি। কুড়িল ফ্লাইওভারের জটলা নিয়ে কর্তব্যরতরা বলছেন, এটা স্বাভাবিক জটলা। কিছুক্ষণের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে।

শনিবার সকালে গাজীপুর থেকে রামপুরায় এসেছেন নাসির মাহবুব। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার যে তীব্র যানজট ছিল, আজ তেমন যানজট নেই। রাস্তা একদম ফাঁকা, খুব দ্রুতই গাজীপুর থেকে রামপুরায় চলে এসেছি।

এদিকে বিমানবন্দর সড়ক হয়ে উত্তরা ও গাজীপুরগামী বাস চালকরাও বলছে, বৃহস্পতিবারের মতো যানজট শুক্রবারেও ছিল না আর আজকেও নেই। তবে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাতকে ঘিরে আগামীকাল ডাইভারশন থাকায় বিমানবন্দর হয়ে আগামীকাল উত্তরা বা গাজীপুর যাওয়া যাবে না।

যাত্রাবাড়ী থেকে উত্তরা দিয়াবাড়ীগামী রাইদা বাসের চালক মো. মহসিন বলেন, আজ উত্তরার রাস্তায় কোনো যানজট নেই। তবে আগামীকাল আখেরি মোনাজাত থাকায় রাস্তা বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাই আগামীকাল এদিকে গাড়ি নিয়ে আসা যাবে না।

এদিকে শনিবার বনানী ও বিমানবন্দর সড়কের ট্রাফিক অবস্থা নিয়ে কর্তব্যরত ট্রাফিক পরিদর্শক (টিআই) মো. হাসিব বলেন, আজ কোনো যানজট নেই। রাস্তায় স্বাভাবিক চলাচল রয়েছে। তবে আগামীকাল নানা জায়গায় ডাইভারশন থাকবে। ফলে বনানী ও বিমানবন্দর এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হতে পারে।

অন্যদিকে বিশ্ব ইজতেমা প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত ঘিরে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ থেকে বলা হয়েছে-

১. আখেরি মোনাজাতের পূর্ব রাত অর্থাৎ ১৪ জানুয়ারি ও ২১ জানুয়ারি দিবাগত রাত্র ২টা থেকে আন্তঃজেলা বাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও অন্যান্য ভারি যানবাহন আব্দুল্লাহপুর, ধউর ব্রিজ মোড় পরিহার করে মহাখালী-বিজয় সরণি-গাবতলী হয়ে চলাচল করবে।

২. আশুলিয়া থেকে আব্দুল্লাহপুরগামী যানবাহনসমূহ আব্দুল্লাহপুর না এসে ধউর ব্রিজ ক্রসিং দিয়ে ডানে মোড় নিয়ে মিরপুর বেড়িবাঁধ দিয়ে চলাচল করবে।

৩. মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে আব্দুল্লাহপুরগামী আন্তঃজেলা বাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যানসহ সকল প্রকার যানবাহন মহাখালী ক্রসিং-এ বামে মোড় নিয়ে বিজয় সরণী-গাবতলী দিয়ে চলাচল করবে।

৪. কাকলী ও মিরপুর থেকে উত্তরাগামী বড় বাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যানসমূহকে হোটেল র‍্যাডিসন গ্যাপে ডাইভারশন প্রদান করা হবে। উল্লিখিত যানবাহনসমূহকে বিকল্প সড়ক ব্যবহারের জন্য বলা হলো।

৫. আখেরি মোনাজাত অর্থাৎ ১৫ জানুয়ারি ও ২২ জানুয়ারি ভোর ৪টা থেকে প্রগতি সরণি ক্রসিং-আব্দুল্লাহপুর-ধউর ব্রীজ-আগুলিয়া ক্রসিং-মিরপুর মাজার রোড থেকে বেড়িবাঁধ সড়ক, চিড়িয়াখানা থেকে বেড়িবাঁধ সড়ক এবং পল্লবী ইস্টার্ন হাউজিং এলাকা থেকে বেড়িবাঁধ সড়ক পর্যন্ত সড়কসমূহে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।

কাকলী ও মিরপুর থেকে উত্তরাগামী প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, সিএনজিসমূহকে নিকুঞ্জ-১ গেটের সামনে ডাইভারশন প্রদান করা হবে। উল্লিখিত যানবাহনসমূহকে বিকল্প সড়ক ব্যবহারের জন্য বলা হলো।

প্রগতি সরণি থেকে আব্দুল্লাহপুরগামী যানবাহনসমূহকে কুড়িল ফ্লাইওভারের নিচে লুপ-২ এ ডাইভারশন প্রদান করা হবে। উল্লিখিত যানবাহনসমূহকে বিকল্প সড়ক ব্যবহারের জন্য বলা হলো।

আগামী ১৫ ও ২২ জানুয়ারি উত্তরার বাসিন্দা, বিমানযাত্রী ও বিমান ক্রু বহনকারী যানবাহন, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স ব্যতীত সকল প্রকার যানবাহনের চালকদেরকে বিমানবন্দর সড়ক পরিহার করে বিকল্প হিসেবে মহাখালী, বিজয় সরণি হয়ে মিরপুর-গাবতলী সড়ক ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করা হলো।

বিদেশগামী যাত্রীদের বিমানবন্দরে আনা-নেওয়ার জন্য আখেরি মোনাজাতের দিন অর্থাৎ আগামী ট্রাফিক-উত্তরা বিভাগের ব্যবস্থাপনায় একটি বড় মাইক্রোবাস পদ্মা ইউলুপ, ২টি মিনিবাস নিকুঞ্জ-১ আবাসিক এলাকার গেটে ও একটি বড় মাইক্রোবাস কুড়াতলী লুপ-২ এ ফ্রি পরিবহন সার্ভিসের জন্য ভোর ৪টা থেকে মোতায়েন থাকবে।

এমএসি/ওএফ