ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলাল বলেছেন, পৃথিবীর কোনো রাষ্ট্রনায়ক এর আগে একসঙ্গে এতোগুলো মডেল মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়নি, যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্ভব করেছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসের পাতায় এটি স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইসলামের উন্নয়নে অনেক কাজ করে গেছেন, তারই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ইসলামের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

সোমবার (১৬ জানুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে ভার্চুয়ালি ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ৩য় বৃহত্তম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। মোট জনসংখ্যার ৯২ শতাংশই মুসলমান। মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় ও সামাজিক কাজগুলো মসজিদেই হয়ে থাকে। বাংলাদেশে প্রায় সাড়ে তিন লাখ মসজিদ রয়েছে। যা স্থানীয় জনগণের আর্থিক সহায়তায় নির্মাণ হয়ে থাকে। দেশের জেলা উপজেলা পর্যায়ে আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত দৃষ্টিনন্দন মসজিদ ছিলো না। এসব বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় নিজস্ব অর্থায়নে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। যার মূল উদ্দেশ হচ্ছে মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ, ধর্মীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং দ্বীনি দাওয়াত কার্যক্রম পরিচালনাকে গতিশীল করা।

আরও পড়ুন >> আরও ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

আজ উদ্বোধন করা মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলো যেসব এলাকায় রয়েছে- ফরিদপুরের ভাঙ্গা, নগরকান্দা, গাজীপুরের কাপাসিয়া, গোপালগঞ্জের সদর উপজেলা, কিশোরগঞ্জের সদর উপজেলা, কটিয়াদী, মানিকগঞ্জের ঘিওর, সাটুরিয়া, নরসিংদীর সদর উপজেলা, মনোহরদি, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা, জেলা সদর, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলা, বগুড়ার ধুনট উপজেলা, নন্দীগ্রাম, নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলা, নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলা, পাবনার ভাঙ্গুরা সিরাজগঞ্জের কাজিপুর, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন, রংপুরের গঙ্গাচড়া ও কাউনিয়া, ঠাকুরগাঁওয়ের সদর উপজেলা, শেরপুরের সদর উপজেলা, পিরোজপুরে সদর উপজেলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর ও কসবা, খাগড়াছড়ির সদর উপজেলা ও মানিকছড়ি, কুমিল্লার চান্দিনা ও চৌদ্দগ্রাম, খুলনার রূপসা, কুষ্টিয়ার খোকশা ও ভেড়ামারা, মেহেরপুর জেলা সদর ও গাংনী, সাতক্ষীরার দেবহাটা, সিলেটের গোয়াইনঘাট, সুনামগঞ্জ জেলা সদর এবং জগন্নাথপুর, হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলা।
 
তথ্য অনুযায়ী, মডেল মসজিদগুলোতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থাসহ অজু ও নামাজের জন্য আলাদা জায়গা রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে হজ গমনে ইচ্ছুকদের জন্য রেজিস্ট্রেশন ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, গবেষণা কেন্দ্র ও ইসলামিক লাইব্রেরি, অটিজম কর্নার, দাফনের আগের আনুষ্ঠানিকতা, গাড়ি পার্কিং সুবিধা, হিফজখানা, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা ও কুরআন শিক্ষার ব্যবস্থা, ইসলামী সাংস্কৃতিক সম্মেলন কক্ষ। কার্যক্রম এবং ইসলামী দাওয়াত, ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র, মসজিদের সঙ্গে দেশি ও বিদেশি অতিথিদের জন্য বোর্ডিং সুবিধা।

প্রধানমন্ত্রী ২০১৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় পরিদর্শনের সময় বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপনের নির্দেশনা দেন। এরপর মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রথম পর্যায়ে ২০২১ সালের ১০ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন।

ওএফএ/জেডএস