শিগগিরই র‌্যাবের ওপর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা উঠে যেতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। 

তিনি বলেন, আমরা তাদেরকে (মার্কিন প্রতিনিধি দল) বলেছি, অতীতে আমরা কীভাবে সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ ও অগ্নিসন্ত্রাস এগুলো মোকাবিলা করেছি। তারা এটার প্রশংসা করেছেন। একইসঙ্গে শিগগিরই র‌্যাবের ওপর থেকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উঠে যেতে পারে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

সোমবার (১৬ জানুয়ারি) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ আশাবাদের কথা জানান।

শনিবার (১৪ জানুয়ারি) ও রোববার (১৫ জানুয়ারি) ঢাকা সফর করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। রোববার দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ে বৈঠক শেষে ডোনাল্ড লু জানান, র‌্যাবের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে।

এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তার (ডোনাল্ড লু) সঙ্গে আমাদের কয়েকজন মন্ত্রীর একান্তে মিটিং হয়েছে। আমার সঙ্গে তার আন্তরিক ও সৌহার্দ্যপূর্ণ খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। সেখানে অনেক কথাবার্তা হয়েছে। তাতে আমার যা মনে হয়েছে, বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তা থমকে যাক সেটা আমেরিকার সরকার চায় না। তারা বাংলাদেশকে আরও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে দেখতে চায়। তারা চায় এদেশের মানবাধিকার যেন আরও উপরে থাকে। তারা চায় এদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। কেউ যেন সহিংসতায় লিপ্ত না হয়। এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

তিনি বলেন, তারা (মার্কিন প্রতিনিধি দল) বলেছেন, আপনারা যেভাবে এগোচ্ছেন, এটা সঠিক পথ। আমরা মনে করি, হয়তো খুব শিগগিরই নিষেধাজ্ঞা (র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা) উঠে যেতে পারে। আপনারা যেভাবে চলছেন এটা যেন চলমান থাকে, আপনাদের আইনজীবীরা ভালো ভূমিকা রাখছেন। আমরা আশা করছি এটা খুব অচিরেই শেষ হবে। আমরা কাউকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পক্ষে নই। ভবিষ্যতে নিষেধাজ্ঞা দিতে হলে দেখেশুনেই দেওয়া হবে বলে আমাদের আভাস দিয়ে গেছেন।

তিনি আরও বলেন, র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হলেও একটা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হয়। তবে সে প্রক্রিয়াটা একটু জটিল। এই প্রক্রিয়ায় কতোগুলো ধাপ আছে, সেগুলো পার হতে হয়। তারা বলেছেন, নিষেধাজ্ঞা যাদের দেওয়া হয়, সেটা প্রত্যাহারের সময় কতগুলো ধাপ পার হতে হয়। সে প্রক্রিয়াটা একটু জটিল। তবে তারা বলেছে, বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে চলছে সেটা উত্তরণ হবে এবং নিষেধাজ্ঞাও প্রত্যাহার হবে। এটাই তাদের বক্তব্য ছিল।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আমি তাদের বলেছি, আমরা সঠিকভাবে কাজ করছি। র‌্যাব ভালো কাজ করছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে সেটা সবসময় বলব। কাজেই তাদের চোখে যেটা পড়েছে সেটার জন্য তারা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এখন তারা বলছে, আমরা যেভাবে আবেদন করেছি, সেটা সঠিক আছে। উনি আমাদের কোনো প্রেসার দিতে বা কিছু আরোপ করতে আসেননি। বরং বলেছেন র‌্যাব ভালো করছে, আমরা সঠিক পথে আছি, আমরা অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছি। এভাবে চললে তারা আমাদের সঙ্গে থাকবেন। প্রয়োজনে আরও সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন তারা।

আলোচনায় নির্বাচনের প্রসঙ্গ এসেছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের সংবিধান অনুযায়ী অনুযায়ী নির্বাচন হবে। নির্বাচনের ৯০ দিন আগেই আমাদের সব ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের কাছে চলে যায়। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী ও সরকারের সবকিছু তারা নিয়ন্ত্রণ করে। আমরা মন্ত্রীরা শুধু অফিস ওয়ার্ক করি, তেমন করণীয় কিছু থাকে না। কাজেই আমি মনে করি আমাদের পুলিশ বাহিনীসহ যারা নির্বাচনের কাজে সবসময় থাকে, তারা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত আছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা আমাদের প্রশংসা করেছেন যে, আমরা বিএনপিকে বিভিন্ন জনসভা করতে দিচ্ছি। তবে সমাবেশের নামে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও রাস্তায় ব্যারিকেড এসব বিষয় আমেরিকার সরকার সমর্থন করে না। আমরা যেভাবে এখন চলছি তারা সেটার প্রশংসা করেছেন।

এমএম/কেএ