স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আমরা উগ্রতা পছন্দ করি না। এদেশের মানুষ জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদকে পছন্দ করে না, আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় না। আর সেজন্যই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় বাংলা একাডেমিতে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। আমরা যখনই ঘন অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছিলাম তখনই ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি উজ্জ্বীবিত করেছে। এই সংগঠনটি মনের আগুন জ্বালিয়েছে। আমরা মনে করি যেভাবে সংগঠনটি এগোচ্ছে, এদেশের মানুষের আমাদের সবাইকে একত্রিত করে অন্ধকারে আলো জ্বালিয়ে দেবেন। 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা পঁচাত্তরে হারিয়েছি সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। আমরা পঁচাত্তরে হঠাৎ হোঁচট খেয়েছিলাম। আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধারা চিমটি কেটে দেখেছি আসলেই বেঁচে আছি কি না, স্বপ্ন দেখছি কি না! এরপর তো এই দেশেই যুদ্ধাপরাধী, রাজাকার, আলবদরদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা দেখাও সহ্য করতে হয়েছে। 

মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেখেছি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকাজ বন্ধ করতেও। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এদেশে ফিরে আসার পর মানুষ বঙ্গবন্ধু কন্যাকে আপন করে নিলেন। মানুষ বলেছে, শেখের বেটি আসছে আর কোনো দুঃখ-দুর্দশা থাকবে না। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন দাবায়া রাখতে পারবা না। সেই দৃশ্যটাই আমরা দেখলাম। তিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করলেন। প্রচলিত আইনেই।’

বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা এগিয়ে চলছি, আমরা এগিয়ে যাবো। বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন দেখতেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ আমরা সেই দিকেই এগিয়ে যাচ্ছি। যেখানে মুসলিম হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই থাকবে। আমরা সেভাবেই চলছি। সবার জন্য বাসস্থান, শিক্ষা স্বাস্থ্য চিকিৎসা সেবা সবাই পাচ্ছে।

সাংস্কৃতিক চর্চা যদি থাকে তাহলে সে কখনো তার ইতিহাসকে ভুলে যেতে পারে না উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের লোকসঙ্গীত, ভাটিয়ালি, লালনগীতি, উত্তরের ওকি গাড়িয়াল ভাই গান আমাদের সম্পদ।

‘উগ্র মৌলবাদ, সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাদীপ্ত ধর্মনিরপেক্ষ মানবিক সংস্কৃতির বিকাশ ঘটুক’- এই স্লোগানে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হচ্ছে। বেলা ১১টায় বাংলা একাডেমিতে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন নরওয়ের লোকসঙ্গীত গবেষক, লেখক ও আলোকচিত্র শিল্পী ওয়েরা সেথের। 

দিনব্যাপী আয়োজনে কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, খ্যাতিমান বাংলাদেইশ অভিনেতা মঞ্চ নির্দেশক নির্মাতা রামেন্দু মজুমদার, বাংলাদেষি মঞ্চনাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দীন ইউসুফ, ইতিহাসবিদ ও সাহিত্যিক মুনতাসীর মামুন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস, সঙ্গীতশিল্পী ফরিদা পারভিন।

জেইউ/জেডএস