ঢাকা শহরে শিশুদের খেলাধুলার যথেষ্ট সুযোগ না থাকায় তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এলাকার অভ্যন্তরে কম ব্যস্ত সড়কে নির্দিষ্ট সময় গাড়ি চলাচল বন্ধ রেখে বা নিয়ন্ত্রণ করে খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।

রোববার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে মোহাম্মদপুর হাউজিং এস্টেটের বাবর রোডের বি-ব্লকে গাড়িমুক্ত সড়ক আয়োজনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সার্বিক সহযোগিতায় হেলথব্রিজ ফাউন্ডেশন অব কানাডা, ছায়াতল বাংলাদেশ এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্টের সম্মিলিত উদ্যোগে এ আয়োজন করা হয়।

আয়োজকরা জানান, সপ্তাহে একদিন বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত গাড়িমুক্ত সড়ক আয়োজনে দাবা-লুডু-ক্যারাম-দড়ি লাফ-ব্যাডমিন্টন, ছবি আঁকা, কারুকাজ শেখানোসহ বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন করা হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ হাসান নূর ইসলাম রাষ্টন বলেন, শিশুরা খেলাধুলার সুযোগ পেলে তাদের মস্তিষ্ক সক্রিয় হওয়ার মাধ্যমে সুষ্ঠু মেধাবিকাশ ঘটে। গাড়িমুক্ত সড়কের মাধ্যমে বাড়ির কাছে খেলাধুলার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে, যা এলাকাবাসীর খেলাধুলা ও সামাজিকীকরণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে। এ কার্যক্রম সফল হলে ওয়ার্ডের আরও বিভিন্ন সড়কে গাড়িমুক্ত সড়কের আয়োজন করব।

ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার জিয়াউর রহমান বলেন, ২০১৬ সালে প্রথম বাংলাদেশে সরকারিভাবে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস পালন হয়। বর্তমানে রায়েরবাজার ও মোহাম্মদপুরে গাড়িমুক্ত সড়ক আয়োজিত হচ্ছে। এ উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা এলাকাভিত্তিক সামাজিকীকরণের সুযোগ তৈরির পাশাপাশি ব্যক্তিগত গাড়ির বিভিন্ন অসুবিধা, যেমন- যানজট, দূষণ, দুর্ঘটনা ইত্যাদি বিবেচনায় ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছি।

ছায়াতল বাংলাদেশের মহাসচিব শাহিনূর আক্তার বলেন, আমরা শিশুদের লেখাপড়ার সুযোগ সৃষ্টিতে কাজ করছি। শিশুদের সুষ্ঠু বিকাশ নিশ্চিত করতে আমরা গাড়িমুক্ত সড়ক আয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছি। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে এলাকাবাসী উপকৃত হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী বলেন, সড়ক আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গণপরিসর। কিন্তু ব্যক্তিগত গাড়ির আধিক্যে তা বোঝার উপায় নেই। গাড়িমুক্ত সড়ক আয়োজনের মাধ্যমে আমরা সড়কে জনগণের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চাই। আমাদের শহরে শিশুদের খেলাধুলার যথেষ্ট সুযোগ নেই। এ ধরনের কার্যক্রম শিশুদের বিকাশে ভূমিকা রাখবে এবং তাদের মধ্যে নেতৃত্বের বিকাশ ঘটবে।

এএসএস/এসএসএইচ/