পাইকারি সিগারেট বিক্রিতে অফারের কথা বলে এক দোকানির কাছ থেকে প্রায় ৫৪ লাখ আত্মসাৎ করেন হাসিব শেখ (২৭) নামের এক যুবক। পরে অভিযোগ পেয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের একটি টিম। 

এছাড়া টাকা আত্মসাতে সহযোগিতা করার অপরাধে তার বাবা হেদায়েত শেখ (৫৫) ও মা নুরজাহান বেগমকে (৫০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রতারণার শিকার ওই দোকানিকে ৩৭ লাখ টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হয়। 

রোববার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে রাজশাহীর চন্দ্রিমা থানার ছোট বনগ্রাম উত্তর পাড়ার নাইমুল হক বিল্ডিংয়ের দ্বিতীয় তলা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩৭ লাখ টাকা জব্দ করা হয়। 

আরও পড়ুন>>ভুয়া ভিসা দিয়ে ৫ বছরে তিন কোটি টাকা আত্মসাৎ

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) গ্রেপ্তার তিনজনকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম মেহনাজ রহমানের আদালতে হাজির করা হয়। এদের মধ্যে ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন হাসিব।

গ্রেপ্তার তিনজনের গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার গুয়ারেখা ইউনিয়ন এলাকায়। আসামি হাসিব ব্রিটিশ অ্যামেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ (বিএটিবি) কোম্পানিতে চাকরি করতেন। তিনি বিএটিবির চট্টগ্রাম নগরের ডিস্ট্রিবিউটর এম এস জাওয়াদ এন্টারপ্রাইজের সুপারভাইজার ছিলেন। 

পিবিআই সূত্র জানায়, গত বছরের ১৭ অক্টোবর নগরের ইপিজেড থানায় হাজির হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন মাসুদ রানা নামে এক ভুক্তভোগী। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, আসামি হাসিব বিএটিবি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। ওই কোম্পানি থেকে মাসুদ নিজের দোকানে বিক্রির জন্য বিভিন্ন ব্রান্ডের সিগারেট কিনতেন। এ সুবাদে মাসুদের সঙ্গে হাসিরেব ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়। 

আরও পড়ুন>>৬৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ : অনুষ্ঠানে এসে ধরা দুই বোন

গত বছরের ৯ অক্টোবর সিগারেটে নতুন একটি অফার আসতে যাচ্ছে বলে দোকানি মাসুদকে জানান হাসিব। এক সঙ্গে বেশি সিগারেট কিনলে বিপুল টাকা লাভ হবে বলেও জানানো হয়। এই প্রলোভনে পা দিয়ে সিগারেট কিনতে হাসিবের কাছে মোট ৫৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকা দেন মাসুদ। এসব টাকার মধ্যে হাসিব ২০ লাখ টাকা নগদ ও ১০ লাখ টাকা মাসুদের ব্যাংক থেকে উত্তোলন করেন হাসি। বাকি ২৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকা অন্যান্য দুজনের আইডি কার্ড ব্যবহার করে বাদীর ব্যাংক থেকে উত্তোলন করা হয়।

টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর হঠাৎ নিরুদ্দেশ হন হাসিব। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর এটির তদন্তভার গ্রহণ করে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিট। 

পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ইখতিয়ার উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আসামি হাসিব এর আগেও একজনের কাছ থেকে দুই লাখ আত্মসাৎ করেছেন। প্রায় ৫৪ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় তিনি ও তার বাবা-মাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া এ মামলায় আরও দুজন পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। উদ্ধার ৩৭ লাখ টাকা আদালতের নির্দেশনা সাপেক্ষে বাদীকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। আসামি হাসিব আদালতে ঘটনার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।  

এমআর/কেএ