বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও তার সঙ্গে থাকা লোকজনের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) ওয়ার্ড কাউন্সিলর জসিম ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। তবে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন কাউন্সিলর।

বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) নগরীর আকবর শাহ থানার উত্তর পাহাড়তলী সুপারি বাগান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বাদী হয়ে আকবর শাহ থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন। এজাহারের পরিপ্রেক্ষিতে কাউন্সিলর জসিমসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। 

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, চট্টগ্রামের সমন্বয়কারী মনিরা পারভিন, কর্মসূচি প্রধান ফিরোজুল ইসলাম, চট্টগ্রামের ফিল্ড অফিসার ফারমিন এলাহী, দৈনিক আমাদের নতুন সময়ের বিশেষ প্রতিনিধি ও বেলার নেটওয়ার্ক মেম্বার আলীউর রহমানে এবং চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী আবুল মনসুরসহ বেশ কয়েকজন আকবর শাহ থানার উত্তর পাহাড়তলীর সুপারি বাগান এলাকায় যান। তারা মূলত অবৈধভাবে পাহাড় কাটা এবং কালির ছড়াখাল ভরাট ও স্থাপনা নির্মাণ সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। এসময় কাউন্সিলর জসিমের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ পরিদর্শনকারীদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন। পরিদর্শনকারীরা কেন এসেছেন এবং কোথা থেকে এসেছেন ইত্যাদি প্রশ্ন করতে থাকেন তারা।

তাদের আক্রমণের প্রস্তুতি দেখে পরিদর্শনকারীরা পাহাড়ের নিচে নামেননি। পরে তারা পথ পরিবর্তন করে বায়েজিদ লিংক রোডের সুপারি বাগান গাউছিয়া হোটেলের সামনে ৫ নম্বর ব্রিজের কাছে অবস্থান নেন। এসময় তাদের গাড়িটিকে ঘুরিয়ে বায়েজিদ লিংক রোডে আসতে বলা হয়। অভিযুক্তরা গাড়িটি আসার পথে লেকসিটি আবাসিকের প্রধান গেটে আটকে দেয় এবং অস্ত্রের মুখে সেটিকে আবাসিকের অফিসে নিয়ে যায়। পরে ভুক্তভোগীরা আকবর শাহ থানায় ফোন দিলে একটি টিম এসে গাড়িটিকে উদ্ধার করে। উদ্ধারের পর গাড়িটিতে ভুক্তভোগীরা ওঠার সময় অভিযুক্তরা ঢিল ছোড়ে। এতে গাড়িটির ক্ষতি হয়।

জানতে চাইলে বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা পরিদর্শনে গেলে কাউন্সিলর নিজে ঘটনাস্থলে আসেন। তার লোকজনকে আমাদের ওপর লেলিয়ে দেন। পরবর্তীতে আমাদের গাড়িটি কাউন্সিলরের লোকজন আটকে দেয়। আমরা থানায় ফোন দিলে পুলিশের টিম এসে গাড়ি এবং ড্রাইভারকে উদ্ধার করে। এসময় কাউন্সিলর বিভিন্ন মাধ্যমে আমার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। কিন্তু আমি কথা বলিনি। পরে আমরা গাড়িতে ওঠার সময় কাউন্সিলরের লোকজন হামলা করে।

তবে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত কাউন্সিলর মো. জহুরুল আলম জসিম। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, তাদের টিম এসেছিল। তারা তাদের কাজ করে চলে গেছেন। হামলার কোনো ঘটনা ঘটেনি। ঘটনাস্থলে একাধিক সিসিটিভি রয়েছে। সেগুলোর ফুটেজ দেখলে বোঝা যাবে। 

জানতে চাইলে আকবর শাহ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এম শাকের আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান থানায় এজাহার জমা দিয়েছেন। কাউন্সিলর মো. জহুরুল আলম জসিমসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এমআর/কেএ