বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেছেন, ২০১৮ সালের তাঁতশুমারি অনুযায়ী দেশে তাঁতের সংখ্যা ২ লাখ ৯০ হাজার ২৮২টি (পাওয়ারলুম ছাড়া)। বাগেরহাট, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর ও ভোলা ছাড়া দেশের সব জেলায় কম-বেশি তাঁত রয়েছে। 

রোববার (২৯ জানুয়ারি) নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ তথ্য জানান। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।

সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে পাট ও বন্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী জানান, বন্ধ হয়ে যাওয়া পাটকলগুলোর ১ হাজার ৫৬ জন শ্রমিকের সব পাওনা পরিশোধ করতে সময় লাগছে।

গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশনের অধীন বন্ধ ঘোষিত মিলগুলোর পাওনা ও অন্যান্য দায়-দেনা পরিশোধে ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট আটশ ৯১ কোটি ১৫ লাখ টাকা অর্থ মন্ত্রণালয়ের থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। গত বছরের ৩১ ডিসম্বর পর্যন্ত মোট ৮৩০ কোটি ৮১ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। যার শতকরা হার ৯৩ দশমিক ২৩ শতাংশ।

জামালপুর-৫ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মোজাফফর হোসেনের প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী জানান, উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিবছর ৫ লাখ ৮০ হাজার পাট উৎপাদনকারী চাষি এবং ৪৫ হাজার পাটবীজ উৎপাদনকারী চাষিকে বিনামূল্যে বীজ, সার, কীটনাশক ও কৃষি যন্ত্রপাতি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেনের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বর্তমানে সারাদেশে তাঁত ফ্যাক্টরির সংখ্যা ২৭৭টি এবং তাঁত ইউনিটের সংখ্যা এক লাখ ১৬ হাজার ১৭৭টি। ২০১৮ সালের তাঁতশুমারি অনুযায়ী তাঁতশিল্প থেকে দেশের মোট বস্ত্রের চাহিদার শতকরা ২৮ শতাংশ পূরণ করা হয়ে থাকে (পাওয়ারলুম ছাড়া)।

সরকার দলীয় সংসদ সদস্য হাবিবর রহমানের প্রশ্নের জবাবে গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, দেশে উৎপাদিত তুলায় বস্ত্র খাতের শতকরা দুই শতাংশ চাহিদা পূরণ হয়। বাকি চাহিদা পূরণে বিদেশ থেকে আমদানি বাবদ ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে।

তিনি বলেন, তুলা উৎপাদনে ৬ থেকে ৭ মাস লাগে। এই সময়ের মধ্যে চাষিরা একাধিক ফসল উৎপাদন করতে পারে। এ কারণে চাষিরা তুলা চাষে আগ্রহী হয়না। আর তুলা চাষের জমির স্বল্পতা রয়েছে। দেশে উৎপাদিত তৈরি পোশাকের ৭৪ শতাংশই তুলা দিয়ে তৈরি হয়। বিশ্ববাজারে তৈরি পোশাকের ৭৮ শতাংশ হাতে তৈরি সূতা দিয়ে। হাতে তৈরি সূতাভিত্তিক পোশাক উৎপাদনে বিনিয়োগ বৃদ্ধির পরিকল্পনা তুলা আমদানি নির্ভরতা হ্রাস করতে সহায়ক হবে।

সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা রুবিনা আক্তারের প্রশ্নের জবাবে গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে নিট সুতার চাহিদা ১৬ লাখ মেট্রিক টন। এরমধ্যে ১২ লাখ টন সুতা দেশে উৎপাদিত হয়, বাকি ৪ লাখ মেট্রিক টন আমদানি করা হয়।

ভোলা-৩ আসনের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, ২০১৮-১৯ অর্থ বছর থেকে ২০২০-২১ অর্থবছরে ৪৭ দশমিক ২৭ লাখ মেট্রিক টন পাট উৎপাদিত হয়েছে। এর মধ্যে ৪ দশমিক ১৫ লাখ মেট্রিক টন পাট রপ্তানি করা হয়েছে।

তিনি জানান, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১১২ দশমিক ৪৮ মিলিয়ন ডলার, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১২৯ দশমিক ৮৯ মিলিয়ন ডলার এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৩৮ দশমিক ১৫ মিলিয়ন ডলারের কাঁচাপাট রপ্তানি করা হয়েছে।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানির জন্য একহাজার ২৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এসআর/জেডএস