জরায়ু ক্যান্সারে মৃত্যুর হারে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে দ্বিতীয়। ২০১৯ সাল থেকে জানুয়ারি মাসকে ক্যান্সার সচেতনতার মাস হিসেবে পালন করা হচ্ছে। জরায়ুমুখের ক্যান্সার প্রতিরোধে সচেতনতার মাস উপলক্ষে সোমবার (৩০ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের ঐহিত্যবাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ইউএসটিসির গাইনি বিভাগের উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডা. ফাহমিদা ইউসুফ। তিনি বলেন, জানুয়ারি মাসজুড়ে জরায়ুমুখে ক্যান্সার সচেতনতার মাস পালন করা হয়। শুধুমাত্র অসচেতনতার কারণে প্রতি বছর অনেক নারী এ প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষ করে ১৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সের মধ্যে ৫ কোটি নারীর এ ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ তথ্যমতে, বিশ্বে প্রতিবছর পাঁচ লাখ ৭০ হাজার নারী জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। এদের মধ্যে মৃত্যুবরণ করেন তিন লাখ ১০ হাজার। বাংলাদেশে এই রোগে আক্রান্ত নারীর হার ১৯ দশমিক ৩ শতাংশ বা ১১ হাজার ৯৫৬ জন। এরমধ্যে মারা যান ১৫ দশমিক ছয় শতাংশ বা ছয় হাজার ৫৮২ জন। এই রোগে প্রতিদিন গড়ে মারা যান ২৮ জন নারী। হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসকে (এইচপিভি) জরায়ুমুখ ক্যান্সারের অন্যতম কারণ হিসেবে গণ্য করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল ইফতেখারুল ইসলামকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত উপস্থিত না হতে পারলেও অনুষ্ঠানের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন তিনি। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ডা. রওশন মোরশেদ, অধ্যাপক ডা. নাসরিন বানু, অধ্যাপক ডা. শামীমা সিদ্দিকা রোজী প্রমুখ।

বিশেষ অতিথি ছিলেন অধ্যাপক ডা. এততেশামুল হক, অধ্যাপক ডা. বদিউল আলম, অধ্যাপক ডা. মোকাদ্দেস আক্তার বেগম, ডা. সিরাজুন্নুর রোজী, ডা. জিনাত আরা চৌধুরী, ডা. শাহানা বেগম, অধ্যাপক ডা. মাফরুহা খানম পরাগ প্রমুখ। 

জরায়ু মুখের ক্যান্সার সম্পর্কে সবাইকে সচেতন হওয়া আহ্বান জানিয়ে আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, জরায়ুমুখ ক্যান্সার বাংলাদেশের ১৫-৪৫বছরের নারীদের মধ্যে দ্বিতীয় প্রধান ক্যান্সার। বাংলাদেশে প্রতিদিন ২৮ জন নারী মারা যাচ্ছে জরায়ুমুখ ক্যান্সারে। হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস নামক (এইচপিভি) নামক একটি ভাইরাস দ্বারা দীর্ঘমেয়াদী সংক্রমণ হলে এই রোগ হতে পারে। জরায়ু মুখ ক্যান্সার দ্রুত রোগনির্ণয় করলে এর প্রতিকার সম্ভব। এইচপিভি ভ্যাকসিনের মাধ্যমে এর প্রতিকার করা যায়। ৯-৪৫ বছর নারীরা এই ভ্যাকসিন নিতে, পারে যা ক্যান্সারের ঝুঁকি ৯৯% কমিয়ে দেয়।

অধ্যাপক ডা. মাফরুহা খানমের বক্তব্যের মধ্যদিয়ে জরায়ুমুখে ক্যান্সার নিয়ে আলোচনা সভায় সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। এর আগে সকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে একটি র‌্যালির বের করা হয়। সেখানে আমন্ত্রিত অতিথি ছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

এসএম