বিশ্বের ১৮০টি দেশের মধ্যে ‘সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত’ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১২তম বলে জানিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই)।

বাংলাদেশের স্কোর ১ পয়েন্ট কমে ২৬ থেকে ২৫ হয়েছে। দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে এক ধাপ অবনমন হয়েছে।

যদিও তালিকায় ওপরের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। অর্থাৎ গত বছরের মতো ১৪৭তম অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। এবার ২৫ স্কোর নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে একই অবস্থানে রয়েছে ইরান ও গিনি।

আরও পড়ুন >>> দেশে এত দুর্নীতি কেন? 

মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সিপিআই (দুর্নীতির ধারণা সূচক) অনুযায়ী বাংলাদেশের অবস্থান হতাশাজনক। এ বছর সূচকে নিচের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ১২ এবং ওপরের দিক থেকে ১৪৭। এবার বাংলাদেশ ১০০ স্কোরের মধ্যে ২৫ অর্জন করেছে। দক্ষিণ এশিয়ার ৮টি দেশের মধ্যে এবারও বাংলাদেশের অবস্থান ও স্কোর দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। এবার আফগানিস্তানেরও স্কোর ১৬ থেকে বেড়ে ২৪ হয়েছে। অথচ বাংলাদেশের স্কোর ঘুরেফিরে ২৫ থেকে ২৮ এর মধ্যে রয়েছে।

আরও পড়ুন >>> সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ ডেনমার্ক 

এর আগে দুর্নীতির ধারণা সূচক (সিপিআই)-২০২১ অনুসারে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ২৬।

টিআইবি জানায়, ২০২২ সালে এ সূচকে অন্তর্ভুক্ত মোট দেশের সংখ্যা ১৮০টি। সিপিআই ২০২১ অনুযায়ী বৈশিক গড় স্কোর ৪৩ হলেও, বাংলাদেশের স্কোর এ বছর ১ পয়েন্ট কমে ১০০ এর মধ্যে মাত্র ২৫ হয়েছে। বাংলাদেশের এবারের স্কোর ২০১৪ ও ২০১৫ সালের অনুরূপ এবং অবস্থান ২০১০ ও ২০২০ সালের অনুরূপ, অর্থাৎ দুর্নীতি প্রতিরোধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রায় একই বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার ৮টি দেশের মধ্যে এবারও বাংলাদেশের অবস্থান ও স্কোর যথারীতি বিব্রতকরভাবে আফগানিস্তানের পর দ্বিতীয় সর্বনিম্ন।

সূচক বিশ্লেষণে দেখা যায়, সর্বশেষ এগার বছরে বাংলাদেশের স্কোর ঘুরেফিরে ২৫ থেকে ২৮ এর মধ্যেই রয়েছে। এই সময়কালে সূচকে বাংলাদেশের নিম্ন স্কোর ও অবস্থান সার্বিক কোনো অগ্রগতি নির্দেশ করে না। একই সঙ্গে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণেও অস্বস্তিকর স্থবিরতা প্রমাণ দেয়।

সিপিআই অনুযায়ী, বাংলাদেশ তথা অন্য কোনো দেশকেই দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ বলা যাবে না। বরং সূচকভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে তুলনামূলকভাবে দুর্নীতির মাত্রা অধিক বা কম বলা যাবে। কারণ এ সূচক সংশ্লিষ্ট দেশে বিদ্যমান দুর্নীতির ধারণার ওপর ভিত্তি করে তুলনামূলক অবস্থান নির্ণীত হয়; কোনো দেশ বা জাতিকে দুর্নীতিগ্রস্ত হিসেবে চিহ্নিত করে না। 

১৯৯৫ সাল থেকে বেসরকারি সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল দ্বারা প্রতি বছর এই সূচক প্রকাশ করা হয়। ২০০১ সালে বাংলাদেশ প্রথম তালিকাভুক্ত হয়। তখন এ তালিকায় মোট ৯১টি দেশ ঠাঁই পায়।

আরএম/এসএম