জঙ্গি দমনে বিশ্বে রোল মডেল বাংলাদেশ। গুরুত্বপূর্ণ এ কাজে যে ব্যক্তি অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন তিনি সদ্য নিয়োগ পাওয়া পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান মনিরুল ইসলাম। কয়েকদিন ধরেই তার বদলির গুঞ্জন চলছিল। তবে সুখবরটি এলো রোববার (১৪ মার্চ) ভোরেই।

রোববার সকালে নতুন দায়িত্ব নিয়েই সাংবাদিকদের অনুভূতি জানান দেশের অন্যতম আলোচিত এ পুলিশ অফিসার। মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমে (সিটিটিসি) যোগদান করি। ৫ বছর আমি সেখানে কাজ করেছি। এখন সরকার মনে করছে যে অন্য জায়গায় গেলে আমি হয়তো আরও ভালো করবো সে কারণে আমাকে স্পেশাল ব্রাঞ্চে (এসবি) বদলি করা হয়েছে। এজন্য আমি প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপির কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’

তিনি বলেন, যেহেতু আমি সহকর্মীদের নিয়েই ৫ বছর এক জায়গায় কাজ করেছি সেক্ষেত্রে দুঃখ হচ্ছে, ভারাক্রান্ত হচ্ছি। আবার সরকার যেভাবে মনে করেছে ওখানে আমি আরও ভালো কাজ করবো সেটি ভেবেও আনন্দ হচ্ছে। আর আমিতো বাংলাদেশ পুলিশেই আছি, কাছাকাছিই আছি। স্পেশাল ব্রাঞ্চের কাজও একটু ডিটেইল, সিটিটিসির সঙ্গে কাজের ধরণেও মিল আছে।

সিটিটিসিতে আপনি সফল নাকি ব্যর্থ? এমন প্রশ্নের উত্তরে মনিরুল বলেন, ‘হলি আর্টিসান ঘটনার পর সিটিটিসি অনেকগুলো অপারেশনের মাধ্যমে জঙ্গি দমন ও জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক ভেঙে দিতে সক্ষম হয়েছে। তবে এগুলোর কোনটিই আমার একক কৃতিত্ব নয়, আমার টিমে যারা কাজ করেছে সফলতাগুলো সবার, সফলতা বাংলাদেশ পুলিশের। এছাড়াও কিছু কিছু ক্ষেত্রে যে ব্যর্থ হইনি সেটি নয়। সফলতা যেগুলো হয়েছে সেগুলো আমার টিমের, ব্যর্থতা যেগুলো হয়েছে সেগুলোর দায় ব্যক্তিগতভাবে আমি নিচ্ছি।’

মনিরুল ইসলামের সফলতা নিয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর রীতিমতো জঙ্গিবাদ নিয়ে গবেষণা করেন তিনি। ঠান্ডা মাথায় যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করার দক্ষতা আছে তার। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে তার আলাদা গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। তাই গুরুত্বপূর্ণ এ পদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে মনিরুল ইসলামকে।

মনিরুল ইসলাম ১৯৯৫ সালে বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে এএসপি হিসেবে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন। তিনি গোয়েন্দা শাখায় নয় বছর এবং স্পেশাল ব্রাঞ্চে দুই বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি সিটিটিসির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা কর্মকর্তা। ২০০৯ সালে উপ-কমিশনার (গোয়েন্দা, দক্ষিণ) হিসেবে ডিএমপিতে যোগ দেন। এরপর যুগ্ম কমিশনার ও অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে ডিএমপিতে চাকরি করেন।

২০১৬ সালে সিটিটিসি নামে নতুন একটি ইউনিট করে তাকে প্রধানের দায়িত্ব দেয়া হয়। ২০১৯ সালের আগস্টে তাকে ডিএমপি কমিশনার করার গুঞ্জনও উঠেছিল। তবে সেবার দায়িত্ব পান মোহা. শফিকুল ইসলাম।

এর আগে রোববার (১৪ মার্চ) সকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে তাকে এসবি প্রধান করা হয়। মনিরুল ইসলাম ১৯৭০ সালের ১৫ জুন জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নর্থামব্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্রিটিশ আইনে স্নাতক পাস করেন।

এআর/এসকেডি