শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, আমরা বাংলা ভাষার জন্য সংগ্রাম করেছি, জীবন দিয়েছি। এই ত্যাগের জন্য মাতৃভাষা দিবস সারা বিশ্বের কাছে স্বীকৃতি পেয়েছে। কিন্তু ভাষা দক্ষতা অর্জনে দেশের অনেক শিক্ষার্থীর চলমান দুর্বলতা রয়েছে। সেই দুর্বলতার জায়গা চিহ্নিত করে পূরণ করতে হবে। না হলে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব হবে না।

বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকা কলেজের বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আ. ন. ম. নজিব উদ্দিন খান খুররম অডিটোরিয়ামে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রথম চ্যালেঞ্জটি হচ্ছে অনেক ধরনের কার্যক্রম বৈশ্বিক হয়ে যাবে। যেকোন উৎপাদন ও অর্থনীতির সীমারেখা নির্দিষ্ট দেশের মধ্যে আবদ্ধ থাকবে না। অটোমেশনের প্রভাবে ম্যানুয়াল অনেক কাজ, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান এবং কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের মতো দেশগুলোতে এই নতুন কর্ম জগৎ বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। সেই চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীরা কীভাবে নিজেদের মানিয়ে নিয়ে দেশকে নেতৃত্ব দেবে সেই ভাবনা এখন থেকেই করতে হবে। সেজন্য শিক্ষার্থীদের নিজেদের দক্ষ হিসেবে তৈরি করতে হবে।

উপমন্ত্রী বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এ সময়ে আমাদের ছেলে-মেয়েরা যাতে পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তের যে কোনও কাজ করার সক্ষমতা অর্জন করতে পারে। আমাদের শিক্ষার্থীরা ইংরেজি ভাষায় অনেক ভালো নম্বর পায়, পরীক্ষায় ভালো ফল করে, কিন্তু বাস্তবে কাজের সময় ভাষাটাকে ব্যবহার করতে পারে না। এরকম হলে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ আমরা মোকাবিলা করতে পারবো না।

শিল্প বিপ্লব জয়ের জন্য ভাষাগত দক্ষতা অর্জন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করে উপমন্ত্রী আরও বলেন, উন্নত বিশ্বের চাহিদাই যদি বুঝতে না পারি অথবা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো কি চাইছে বা তারা কোন ধরনের সার্ভিস চাচ্ছে, প্রোডাক্ট চাচ্ছে সেগুলো বুঝতে না পারলে বিশ্ব অর্থনীতিতে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া যাবে না। সেটার জন্যই সবচাইতে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ভাষা দক্ষতা। 

তিনি বলেন, বাংলা ভাষায়ও আমাদের ভাব প্রকাশে এবং যোগাযোগের দক্ষতায় ঘাটতি দেখা যায়। উপস্থাপন করার দক্ষতায় আমাদের ঘাটতি আছে। এসব ঘাটতি লাঘব করতেই হবে। পাশাপাশি ইংরেজি ভাষাতেও বিশেষভাবে দক্ষ হতে হবে। কেননা সারা পৃথিবীতে এখন যোগাযোগের অন্যতম ভাষা হচ্ছে ইংরেজি। এখানে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। তাই এসব দুর্বলতা এবং প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করে সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে শিক্ষার্থীদের সামনের দিকে এগিয়ে আসতে হবে।

আলোচনা সভায় ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা কলেজ উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক এ. টি. এম. মইনুল হোসেন, শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও মনোবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. আবু সৈয়দ মো. আজিজুল ইসলাম, শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক ড. আবদুল কুদ্দুস সিকদার।

আরএইচটি/এসএম