ভোট কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম থাকার যে তথ্য সামনে আসছে তা মানতে নারাজ প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তবে সাম্প্রতিক উপনির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম ছিল বলে স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। 

কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম থাকার বিষয়ে একজন সাংবাদিক জানতে চাইলে সিইসি বলেন, আমার সহকর্মীরা ইতোমধ্যে জানিয়েছেন কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি কম হয়েছে। সার্বিকভাবে মোটেই কম হয়নি। এটা সঠিক তথ্য নয়।  

আজ (বৃহস্পতিবার) জাতীয় ভোটার দিবসের অনুষ্ঠানের উদ্বোধনের সময় এসব কথা বলেন তিনি। 

সিইসি বলেন, ‘আমরা যেটা অনুমান করেছি, বাস্তবতার নিরিখে, ভোট যখন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়, ব্যাপকভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়, তখন ভোটার উপস্থিতি বেশি থাকে। জাতীয় সংসদ উপ-নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম হয়েছে কারণ সেখানে সময় বাকি আছে মাত্র ১০ মাস। আর সত্যিকার অর্থে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়নি। আপনারা ইউনিয়ন কাউন্সিলর ভোট দেখেছেন সেখানে কিন্তু উপস্থিতি সন্তোষজনক ছিল এবং ইভিএমে হয়েছে। ইভিএমে ভোটে বলা হয় ধীরগতি, সেখানেও উপস্থিতি যথেষ্ট ভালো ছিল। আমরা আশা করি আগামীতে ভোট প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে। সেখানে উপস্থিতি যথার্থ হবে। জেলা পরিষদে আমাদের উপস্থিতি ছিল ৯৯ শতাংশ, সেখানে ইলেকটোরাল কলেজের মাধ্যমে ভোট হয়েছে।’ 

আরও পড়ুন : আগামী সংসদ নির্বাচনে ভোটার ১১ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার

ভোটার উপস্থিতি কম আছে তা মানতে নারাজ হলেও ভোটার উপস্থিতি কী কারণে কম হতে পারে, তার কিছু কারণ ব্যাখ্যা করেন সিইসি। তিনি বলেন, বিভিন্ন কারণেই ভোটার উপস্থিতি কম হতে পারে। আবহাওয়াগত কারণ হতে পারে, দুর্যোগের কারণে হতে পারে, শীতের কারণে হতে পারে। বিভিন্ন কারণেই হতে পারে। কিন্তু যেটা গুরুত্বপূর্ণ, ভোটাররা এসেছেন কি না, তাদের বাধা দেওয়া হয়েছে কি না, তারা ভোট দিতে পেরেছেন কি না। 

হাবিবুল আউয়াল বলেন, রাজনৈতিকভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা যদি হয়, তাহলে রাজনৈতিক দলগুলোর একটা দায়িত্ব রয়েছে। তাদের সে দায়িত্ব পালন করতে হবে। আমরা ভোটটা আয়োজন করব। আমরা আপনাদের ব্যালট পেপার সাপ্লাই করব, বক্স সাপ্লাই করব এবং আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক যে সংস্থাগুলো আছে আমরা তাদের স্ট্রিকলি বলে থাকি, আপনারা ভোটকেন্দ্রের চারপাশে প্রত্যাশিত আইন-শৃঙ্খলা এবং অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করার চেষ্টা করবেন। তাই দায়িত্বটি কার? দায়িত্বটি সামগ্রিক সমন্বয়ের। এটা আপনাদের অনুধাবন করতে হবে। এককভাবে এই দায়িত্ব কখনোই নির্বাচন কমিশনের নয়। 

আগামী ভোট ২০১৪ আর ২০১৮ সালের মতো হবে না, আপনারা কেন এতো আশাবাদী- একজন সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে সিইসি বলেন, ‘ওই সমস্ত প্রশ্নে আমি কোনো মন্তব্য করবো না। ’১৮ এবং ’১৪ সালে কী হয়েছে সেগুলো আমরা দেখব না। আমরা সামনের দিকে এগোচ্ছি। আমাদের জন্য আপনাদের শুভ কামনা রাখবেন, যেন আমরা আমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্বটা আগামীতে সুচারুরূপে পালন করতে পারি। 

আরও পড়ুন : আইন প্রয়োগ করে সুষ্ঠু নির্বাচন করব : ইসি আলমগীর

দলগুলো কী ভোটের দিকে এগোচ্ছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোকে আমরা আগেও বলেছি, তাদের প্রতি আমরা বারবার আবেদন জানাচ্ছি আপনারা আসুন, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন। আপনাদের মধ্যে যদি মত-পার্থক্য থাকে, সেটা আপনারা নিরসন করার চেষ্টা করুন। কারণ নির্বাচন কমিশন মুরুব্বিআনা করতে পারবে না। কিন্তু আমরা বিনীতভাবে সকল রাজনৈতিক দলকে বলব, আপনারা যে কোনো প্রকারেই হোক, নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন এবং নির্বাচনে অংশগ্রহন করে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমে ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভারসাম্য সৃষ্টি করুন। যাতে এই ভারসাম্যের মাধ্যমে ভোটকেন্দ্রে এক ধরনের নিরপেক্ষতা এবং যথার্থতা প্রতিষ্ঠিত হয়। 

এসআর/এনএফ