জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্যবহার করে ‘টিকিট যার, ভ্রমণ তার’ নীতিতে ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু করেছে রেলওয়ে। গত ১ মার্চ থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়। তবে কেউ সপ্তাহে দুইবারের বেশি টিকিট কিনতে পারবেন না বলে তখন জানানো হয়। বর্তমানে এ নির্দেশনার পরিবর্তন এসেছে। এখন চাহিদা মতো যত খুশি টিকিট কিনতে পারবেন টিকিট প্রত্যাশীরা।

শুক্রবার (১০ মার্চ) নতুন এই নির্দেশনা কার্যকর করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী।

তিনি জানান, আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রির নতুন পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনেছে রেলওয়ে। এনআইডি দেখিয়ে যেকোনো যাত্রী সপ্তাহে যতবার খুশি আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট কিনতে পারবেন। তবে, সপ্তাহে দুইবারের বেশি টিকিট কেনার নির্দেশনা উঠে গেলেও, কোনো যাত্রী একই স্টেশন থেকে দিনে একবারের বেশি টিকিট কিনতে পারবেন না।

নতুন পদ্ধতি সম্পর্কে বলা হয়েছে, কোনো যাত্রী ঢাকার কমলাপুর থেকে চট্টগ্রামের ট্রেনের টিকিট দিনে একবারই এক সঙ্গে সর্বোচ্চ ৪টি কিনতে পারবেন। তিনি ওই দিন কমলাপুর থেকে আর কোনো ট্রেনের টিকিট কিনতে পারবেন না। তবে চট্টগ্রাম থেকে একই দিনের ট্রেনের ফিরতি যাত্রার টিকিট কিনতে পারবেন।

যেভাবে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করে টিকিট কিনবেন

রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া

প্রথমে রেলওয়ের ওয়েবসাইটে (www.eticket.railway.gov.bd) প্রবেশ করতে হবে। প্রবেশের পর ওয়েবসাইটের উপরের দিকে রেজিস্ট্রেশন (Registration) ট্যাব ক্লিক করতে হবে। এতে রেজিস্ট্রেশন নামে নতুন একটি পেজ আসবে। এই পেজে ব্যক্তিগত তথ্যাদি (Personal Information) সংশ্লিষ্ট ঘরগুলো পূরণ করতে হবে। অবশ্যই এনআইডি দিতে হবে। তfরপর মোবাইল নম্বরে একটি ওটিপি (OTP) চলে আসবে। সেটি সঠিকভাবে পূরণ করে ভেরিফাই (Verify) বাটনে ক্লিক করতে হবে। ভেরিফাই হলে এনআইডিতে থাকা নিজের নামটি অটোমেটিকভাবে দেখাবে। সব তথ্য ঠিক থাকলে রেজিস্ট্রেশন সফল (Successful) হবে এবং বাংলাদেশ রেলওয়ে নামে নতুন একটি পেজ আসবে। এখানে ইউজার (User) অটো লগ ইন (Log In) হয়ে যাবে।  

টিকিট কেনার পদ্ধতি

প্রথমে রেলওয়ের ওয়েবসাইটে (www.eticket.railway.gov.bd) প্রবেশ করতে হবে। অটো লগ ইন না হয়ে থাকলে প্যানেলে মোবাইল ও পাসওয়ার্ড পূরণ করে লগ ইন বাটনে ক্লিক করতে হবে। লগ ইনের পর যে পেজটি আসবে তাতে কাঙ্ক্ষিত ভ্রমণ তারিখ, প্রারম্ভিক স্টেশন, গন্তব্য স্টেশন, শ্রেণি পূরণ করে ফাইন্ড টিকিট বাটনে ক্লিক করতে হবে। পরের পেজে ট্রেনের নাম, সিট অ্যাভেলেবিলিটি (আসন আছে কি নেই) ও ট্রেন ছাড়ার সময় দেখাবে। ট্রেন অনুযায়ী ভিউ সিটস (আসন দেখুন) বাটনে ক্লিক করে আসন খালি থাকার সাপেক্ষে পছন্দের আসন সিলেক্ট করে কন্টিনিউ পারচেজে ক্লিক করতে হবে। নেক্সাস, ভিসা কার্ড, মাস্টার কার্ড কিংবা বিকাশ, নগদ বা রকেটে পেমেন্ট করলে একটি ই-টিকিট অটো ডাউনলোড হবে। পাশাপাশি যাত্রীর ই-মেইলে টিকিটের কপি চলে যাবে। ই-মেইলের ইনবক্স থেকে টিকিট প্রিন্ট করে ফটো আইডিসহ ই-টিকেট প্রদত্ত টিকিট প্রিন্ট ইনফরমেশন দিয়ে সংশ্লিষ্ট সোর্স স্টেশন থেকে যাত্রার আগে ছাপানো টিকিট সংগ্রহ করতে হবে।

ট্রেনের টিকিট অনলাইনে ফেরত দেওয়ার পদ্ধতি

যে অ্যাকাউন্ট থেকে ট্রেনের টিকিট কেনা হয়, সেই অ্যাকাউন্টে একটি পার্চেজ হিস্ট্রি থাকবে। পার্চেজ হিস্ট্রিতে দেখা যাবে ক্রেতা কতগুলো টিকিট ক্রয় করেছেন। সেই তালিকার ডান পাশে টিকিট বারে একটি নতুন বাটন যুক্ত হবে ‘ক্যান্সেল’ নামে। ওই ক্যান্সেল বাটনে চাপ দিলেই ক্রেতা দেখতে পারবেন, এখন টিকিট ফেরত দিলে কত টাকা ফেরত পাবেন।

তবে অনলাইনে টিকিট ফেরতের টাকা ক্রেতা সঙ্গে সঙ্গেই পাবেন না। এই টাকা পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ৮ কার্যদিবসের মধ্যে ফেরত দেওয়া হবে। টাকা ফেরত না পেলে সমস্যার বিবরণসহ support@eticket.railway.gov.bd এই ঠিকানায় মেইলে একটি অভিযোগ করতে হবে। এই মেইলের উত্তর যাত্রীকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে পাঠানো হবে।

এমএইচএন/ওএফ