রাজধানীর নতুন বাজার এলাকার রাস্তায় দাঁড়িয়ে ৭-৮ বছরের একটি মেয়ে কান্না করছিল। তখন মেয়েটিকে কাঁদতে দেখে এগিয়ে আসেন ডিএমপির গুলশান ট্র্যাফিক বিভাগের সার্জেন্ট ইকবাল। সেসময় নতুন বাজারে দায়িত্বরত ছিলেন তিনি।

সার্জেন্ট ইকবাল তখন মেয়েটিকে নতুন বাজার পুলিশ বক্সের ভিতরে নিয়ে গিয়ে একটি চেয়ারে বসান। মেয়েটির সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে ইকবাল বুঝতে পারেন সে বাক প্রতিবন্ধী। এর মধ্যে কন্ট্রোল রুম থেকে ঘোষণা আসে শাহাজাদপুর সুবাস্তু টাওয়ার থেকে এক বাক প্রতিবন্ধী মেয়ে হারিয়ে গিয়েছে। তখন ইকবাল বুঝতে পারেন তার কাছে থাকা মেয়েটি হারিয়ে যাওয়া মেয়ে হতে পারে।

পরে ভাটারা থানার মাধ্যমে ইকবাল জানতে পারেন- সুবাস্তুতে হারিয়ে যাওয়া মেয়েটিই এখন তার হেফাজতে। পরে নিজ হাতে মেয়েটিকে তার পরিবারের হাতে তুলে দেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) ডিএমপির গুলশান ট্র্যাফিক বিভাগের ফেসবুক পেজে এক পোস্টের মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।

পোস্টে বলা হয়, মেয়েটি বাক প্রতিবন্ধী। বয়স হবে সাত কি আট। বৃহস্পতিবার নতুন বাজার রাস্তা দিয়ে কাঁদতে-কাঁদতে যাচ্ছিল। মেয়েটিকে দেখে বড্ড মায়া হয় ডিউটিরত ট্র্যাফিক সার্জেন্ট ইকবালের। মেয়েটিকে দেখতে পেয়ে নিজের হেফাজতে নেন তিনি। এরই মধ্যে কন্ট্রোল রুম থেকে ঘোষণা আসে যে, সুবাস্তু টাওয়ার থেকে একটি বাকপ্রতিবন্ধী মেয়ে হারিয়ে গেছে।

এদিকে মেয়েটির মা-বাবা খোঁজাখুঁজি করে মেয়েটিকে কোথাও না পেয়ে ভাটারা থানায় জিডি করার জন্য অবস্থান করছিলেন। পরবর্তীতে মা-বাবার কাছে কন্ট্রোল রুম থেকে থানার মাধ্যমে মেয়েটিকে পাওয়ার খবর দেয়া হয়। এরপর মেয়েটিকে নতুন বাজার ট্রাফিক বক্স থেকে ভাটারা থানার এএসআই আকলিমার মাধ্যমে তার মা-বাবার নিকট বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

মেয়েটির বাবা মোজাম্মেল হক টিআই সাজ্জাদ হোসেন ও সার্জেন্ট ইকবালের প্রতি আবেগ আপ্লুত হয়ে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, পুলিশ সত্যিই জনগণের প্রকৃত বন্ধু, আজ আপনারা না হলে আমার বুকের ধন মরিয়মকে খুঁজে পেতে হয়তো আরও অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হতো।

এ বিষয়ে সার্জেন্ট ইকবাল বলেন, গতকাল সন্ধ্যা ৭টার দিকে মেয়েটিকে দেখি নতুন বাজার এলাকার রাস্তায় দাঁড়িয়ে কান্না করছে। পরে আমি মেয়েটিকে দেখে এগিয়ে আসি এবং তাকে পুলিশ বক্সে নিয়ে আসি। মেয়েটির নাম পরিচয় জানতে চাইলে দেখি সে বাক-প্রতিবন্ধী। পরে আমি পুলিশ কন্ট্রোল রুমে ম্যাসেজ দেই। পরে আমাকে কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়- সুবাস্তু টাওয়ার থেকে এক বাক প্রতিবন্ধী মেয়ে তার বাবা-মার সঙ্গে এসেছিলো এবং সে হারিয়ে যায়। এর মধ্যে মেয়েটির বাবা ভাটারা থানায় একটি নিখোঁজের জিডি করেন। পরে কন্ট্রোল রুমের ম্যাসেজের মাধ্যমে ভাটারা থানার একজন এএসআইসহ মেয়েটির বাবা নতুন বাজার পুলিশ বক্সে আসে। পরে পর্যাপ্ত প্রমাণ দেওয়ার সাপেক্ষে মেয়েটিকে তার বাবার হাতে তুলে দেয় থানা পুলিশ। 

এমএসি/এমজে