ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান বলেছেন, ঢাকা ওয়াসা আসন্ন পবিত্র রমজান মাসে ঢাকা শহরের পানি সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার সামগ্রিক প্রস্তুতি নিয়েছে। এ লক্ষ্যে ঢাকা ওয়াসার সব পানি শোধনাগার ও পানির পাম্পগুলো নিরবচ্ছিন্নভাবে ২৪ ঘণ্টা চালু থাকবে।

শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ওয়াসা ভবনে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন। আসন্ন রমজানে ঢাকা ওয়াসার পানি সরবরাহ নিয়ে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

তাকসিম এ খান বলেন, বিদ্যুৎ বিভ্রাটকালীন লোডশেডিং, লো-ভোল্টেজ, হাই-ভোল্টেজের সময়ে পানির পাম্পগুলো ডুয়েল সোর্স বিদ্যুৎ লাইন, ফিক্সড জেনারেটর, মোবাইল জেনারেটরের মাধ্যমে চালু রাখা হবে রমজানে। সবগুলো জোনাল অফিস, এসওসি-তে পর্যাপ্ত পানির গাড়ি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। গাড়ির মাধ্যমে চাহিদা করা স্থানে দ্রুত পানি সরবরাহ করার লক্ষ্যে মডস জোনের বিভিন্ন সুবিধাজনক পাম্পে স্মার্ট হাইড্রেন স্থাপন করা হয়েছে।

ঢাকা ওয়াসার এমডি বলেন, রমজান মাসে পানি ব্যবহারের প্যাটার্ন কিছুটা বদলে যায়। এছাড়াও গ্রীষ্ম মৌসুমে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় উৎপাদন ক্ষেত্রবিশেষে কমে যেতে পারে। কোনো কোনো সময় গভীর নলকূপ, পাম্প, মোটর রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশের অন্যতম বড় উৎসব ঈদ-উল ফিতরকে কেন্দ্র করে রমজান মাসের আগে থেকেই ঢাকা শহরে বিভিন্ন ব্যবসায়ী, শ্রমজীবী ও অস্থায়ী দর্শনার্থীর উপস্থিতি বৃদ্ধি পাওয়ায় সাময়িকভাবে পানির ব্যবহার বৃদ্ধি পায়। এসব কারণে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সাময়িকভাবে পকেট সমস্যার সৃষ্টি হলেও তা মোকাবিলা করার জন্য ঢাকা ওয়াসা প্রস্তুত হয়েছে। সমস্যা দেখা দিলে রেশনিংয়ের মাধ্যমে পানি সরবরাহ বৃদ্ধি করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গ্রাহকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে ওয়াসা এমডি বলেন, আসন্ন পবিত্র রমজানে পরিমিত পানি ব্যবহার করুন ও পানির অপচয় রোধ করুন। আপনার অপচয়ের কারণে অন্যের পানি পাওয়ার অধিকার যেন ক্ষুণ্ণ না করে সে বিষয়ে সচেষ্ট থাকুন। আপনাদের সবার সহযোগিতায় পবিত্র রমজানে পানি সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা যাবে বলে ঢাকা ওয়াসা আশা প্রকাশ করছে।

রমজানে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে ঢাকা ওয়াসার পক্ষ থেকে জানানো হয়, পবিত্র রমজান উপলক্ষ্যে বিশেষ ব্যবস্থা হিসেবে জনসমাগম স্থান, যেমন গুলিস্তান, ফার্মগেট, মহাখালী, গাবতলী, যাত্রাবাড়ী, কমলাপুর, সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ডসহ এ ধরনের সব জোনের বিভিন্ন স্থানে ইফতার ও সেহরির সময় প্লাস্টিক ট্যাংক, ট্রলি স্থাপন করে পানি সরবরাহ করা হবে।

রাজধানীর মসজিদগুলোতে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে পানি সরবরাহের জন্য ঢাকা ওয়াসায় ৪৮টি পানির গাড়ি এবং ১৭টি ট্রাক্টর প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

লোডশেডিংয়ের সময় স্ট্যান্ডবাই পাওয়ার সোর্স হিসাবে ৩৮০টি ফিক্সড জেনারেটর এবং ১৯টি মোবাইল জেনারেটরের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। অভিযোগ পাওয়া সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য 'ওয়াসালিংক-১৬১৬২' এবং ১১টি অভিযোগ কেন্দ্র ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা হবে। মডস জোনের পানির পাম্প মনিটরিং করার জন্য বিদ্যমান ১০টি অ্যাডভাইজরি ও মনিটরিং টিম তৎপর থাকবে।

মতবিনিময় সভায় ঢাকা ওয়াসার বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এএসএস/জেডএস