ইরান-বাংলাদেশ মৈত্রী ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক শক্তিশালী ভিত রচিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।

মঙ্গলবার (২১ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফফর আহমদ চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। ইরানি নববর্ষ ‘নওরোজ’ ও বাংলা নববর্ষ ‘পহেলা বৈশাখ’ উদযাপন উপলক্ষ্যে ঢাকার ইরান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের যৌথ উদ্যোগে এর আয়োজন করা হয়। 

সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভ্রাতৃপ্রতিম ইরান এবং বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও গভীর। দেশ দু’টির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগ অতীতের মতো বর্তমানেও বজায় রয়েছে। ১৯৯৫ সালে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাশেমী রাফসানজানী বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সালে ওআইসি সম্মেলন ও ২০১২ সালে ন্যাম সম্মেলনে যোগ দিতে ইরান সফর করেছেন। এর ধারাবাহিকতায় প্রতি বছরই দুই দেশের মধ্যে মন্ত্রী ও উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং শিক্ষা-সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি দলের সফর বিনিময় হচ্ছে। ইরান-বাংলাদেশ মৈত্রী ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক শক্তিশালী ভিত রচিত হয়েছে।

তিনি বলেন, মূলত কৃষিকাজ ও খাজনা বা রাজস্ব আদায়ের সুবিধার্থে সম্রাট আকবর বাংলা নববর্ষ চালু করেন। ১৫৫৬ খ্রিষ্টাব্দে তার শাসনামলে ইরানি গবেষক ফতেহউল্লাহ সিরাজী বাংলা সনের রূপরেখা প্রদান করেন যা রাষ্ট্রীয়ভাবে চালু হয়। পরবর্তীকালে ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর নেতৃত্বে বাংলা অ্যাকাডেমির উদ্যোগে এর কিছু হিসাব সংস্কার করে প্রতি বছর ১৪ এপ্রিল বাংলা নববর্ষ উদযাপন করা হয়।

কে এম খালিদ বলেন, ইরানি নববর্ষ নওরোজ ও বাংলা নববর্ষ পহেলা বৈশাখের মধ্যে বেশ সাদৃশ্য রয়েছে। নওরোজ উদযাপিত হয় বসন্তের প্রথম দিন ২১ মার্চ। আর পহেলা বৈশাখ (বাংলা নববর্ষ) উদযাপিত হয় ১৪ এপ্রিল। দু’টিই বড় অসাম্প্রদায়িক উৎসব। মানুষে মানুষে সম্প্রীতি, মানবিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা, হিংসা-বিদ্বেষ দূরীকরণ নওরোজ বা ইরানি নববর্ষের প্রধান বার্তা। একইভাবে  অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও মানবিক মূল্যবোধের ওপর প্রতিষ্ঠিত বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব পহেলা বৈশাখও আমাদের একই বার্তা দেয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন। 

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত মানসুর চাভোশি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মুহম্মদ সামাদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইরান দূতাবাসের কালচারাল কাউন্সিলর সৈয়দ রেজা মীর মোহাম্মদী।

ওএফএ/কেএ