ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের অর্থায়নে মুঘল আমলে নির্মিত লালবাগ কেল্লার ঐতিহাসিক হাম্মামখানার সংস্কার-সংরক্ষণ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।

বুধবার (২২ মার্চ) রাজধানীর লালবাগ কেল্লা মিলনায়তনে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘অ্যাম্বাসেডরস ফান্ড ফর কালচারাল প্রিজার্ভেশন (এএফসিপি)’ প্রোগ্রামের অর্থায়নে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীন প্রকল্পটির সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের সংবিধানে সাংস্কৃতিক সম্পদ ও বৈচিত্র্য রক্ষায় ম্যান্ডেট অন্তর্ভুক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য তথা সংস্কৃতি সুরক্ষায় যথাযথ গুরুত্ব প্রদান করেছে ও বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের অর্থায়নে মুঘল আমলে নির্মিত লালবাগ কেল্লার ঐতিহাসিক হাম্মামখানার সংস্কার-সংরক্ষণ কাজ শেষ হয়েছে। সেজন্য সংশ্লিষ্টদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।

তিনি বলেন, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় হাম্মামখানার পাশাপাশি বেশ কিছু ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা সংস্কার-সংরক্ষণে কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে সোনারগাঁও লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন প্রাঙ্গণে অবস্থিত বড় সরদার বাড়ি দৃষ্টিনন্দনভাবে সংস্কার করা হয়েছে। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মাধ্যমে সোনারগাঁওয়ের ঐতিহাসিক পানাম সিটির সংস্কার-সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে জরিপ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে ও ডকুমেন্টেশনের কাজ চলমান রয়েছে। এটি সফলভাবে সমাপ্ত হলে দেশের প্রত্নতাত্ত্বিক সংস্কার-সংরক্ষণে একটি মাইলফলক অর্জিত হবে বলে আমার বিশ্বাস। 

মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস বলেন, বিশ্বজুড়ে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের প্রসার, মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সমর্থন করা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অগ্রাধিকার। আগামী প্রজন্মের জন্য আমাদের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে রক্ষা করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর বলেন, লালবাগ কেল্লা মুঘল আমলে নির্মিত একটি গুরুত্বপূর্ণ পুরাকীর্তি। ১৬৭৮ খ্রিষ্টাব্দে মুঘল সুবেদার মুহাম্মদ আযম শাহ এ দুর্গের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। ঐতিহাসিক গুরুত্বের সঙ্গে প্রত্নতাত্ত্বিক ও অনন্য স্থাপত্যশৈলীর জন্য এটি বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। 

তিনি বলেন, ইউনেস্কোর গাইডলাইন ও হেরিটেজ ইম্প্যাক্ট অ্যাসেসমেস্ট পূর্বক যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে লালবাগ কেল্লার হাম্মামখানার সংস্কার-সংরক্ষণ কাজ সম্পাদন করা হয়েছে।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক চন্দন কুমার দের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন প্রকল্পের পরামর্শক ও সংরক্ষণ স্থপতি প্রফেসর ড. আবু সাঈদ এম আহমেদ।

উল্লেখ্য, ১ লাখ ২৫ হাজার ৯৩৩ মার্কিন ডলার ব্যয়ে ২০২০ সালে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের কাজে পরামর্শক হিসেবে তিনজন বিশেষজ্ঞ ও একটি বিশেষায়িত ফার্ম নিয়োজিত ছিল।

এমএইচএন/কেএ