রাজধানীর চকবাজার থানাধীন খাজে দেওয়ান লেন থেকে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) সদস্যদের ওপর হামলার দায়ে এবিএম ইব্রাহীম খলিল নামে একজনকে আটক করে র‍্যাব-১০। পরে চকবাজার মডেল থানায় নিয়মিত মামলা করে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

তবে গ্রেফতারের প্রকৃত ঘটনা ও স্থান লুকিয়ে র‍্যাবের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ছড়াচ্ছেন বলে এবিএম ইব্রাহীম খলিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। নিজের অপরাধের কথা লুকাতে তিনি এমন মিথ্যাচার করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) র‍্যাব সদরদফতরে মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক সহকারী পুলিশ সুপার আ.ন.ম ইমরান খান বলেন, গত ৩ মার্চ বিকেল ৫টার দিকে র‍্যাব-১০ এর সিপিসি লালবাগ ক্যাম্পের একটি দল চকবাজার খাজে দেওয়ান লেন এলাকায় একজন কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ীর সম্পর্কে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করতে যায়। এ সময় এবিএম ইব্রাহীম খলিল এবং তার সহযোগীরা র‍্যাব সদস্যদের পরিচয় জানতে চান। র‍্যাব সদস্যরা নিজেদের পরিচয় তাকে দেয়। কিন্তু এতে সন্তুষ্ট না হয়ে এবিএম ইব্রাহীম খলিল ও তার সহযোগীরা র‍্যাব সদস্যদের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করেন।

পরে র‍্যাব সদস্যরা খাজে দেওয়ান লেন ত্যাগ করে পাশের গলিতে থাকা নিজেদের সরকারি মোটরসাইকেলের দিকে এগোতে থাকলে এবিএম ইব্রাহীম খলিল ও তার সহযোগীরা ভুয়া র‍্যাব বলে চিৎকার করে অতর্কিতভাবে আক্রমণ করে। তারা কিল-ঘুষি মেরে র‍্যাব সদস্যদের জখম করেন।

তিনি বলেন, এ সময় র‍্যাব সদস্যদের চিৎকারে আশপাশের জনগণ এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করে। পরে জনগণের সহযোগিতায় এবিএম ইব্রাহীম খলিলকে আটক করে র‍্যাব সদস্যরা। তাকে আটকের সময় র‍্যাব সদস্যদের সঙ্গে তার ধস্তাধস্তি হয়। র‍্যাব সদস্যসহ আটককে সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে একই দিবাগত রাত ৪টায় চকবাজার মডেল থানায় মামলা করে আসামি ইব্রাহীম খলিলকে সোপর্দ করা হয়।

তিনি আরও বলেন, গত ১২ মার্চ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গ্রেফতার এবিএম ইব্রাহীম খলিলের একটি ভিডিও র‍্যাবের দৃষ্টিগোচর হয়। ভিডিওতে ইব্রাহীম খলিল দাবি করেন, তাকে গত ১০ মার্চ (বুধবার) সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তাকে ১১ মার্চ বিকেলে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ায় প্রকাশ্যে দিবালোকে মানুষজনের উপস্থিতিতে গ্রেফতার করা হয়। তাকে যে ১১ মার্চ খাজে দেওয়ান ২য় লেন এলাকায় গ্রেফতার করা হয়েছে উপযুক্ত সাক্ষী, উপস্থিত জনগণ ও প্রযুক্তি দ্বারা সন্দেহাতীতভাবে নিশ্চিত। অতএব এবিএম ইব্রাহিম খলিলের দাবি অনুযায়ী বুধবার সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রেফতার করার বিষয়টি ভিত্তিহীন, মিথ্যা ও বানোয়াট।

ইমরান খান বলেন, একইভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাওয়া ভিডিওতে তিনি তার ওপর বিভিন্ন মনগড়া ও অবিশ্বাস্য অত্যাচারের বর্ণনা দিয়েছেন, যা সম্পূর্ণ কাল্পনিক ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত।

এদিকে র‍্যাব-১০ সূত্রে জানা গেছে, এবিএম ইব্রাহীম খলিল এখন জামিনে রয়েছেন। তিনি নিজের অপরাধ লুকানোর জন্য মিথ্যা ভিডিও বানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন।

এমএসি/এইচকে/এসএসএইচ