কমেনি মুরগির দাম, বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই
খামার পর্যায়ে মুরগির দাম ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় চারটি প্রোল্ট্রি ফার্ম। এতে আশা করা হচ্ছিল রোজার প্রথম দিন অর্থাৎ শুক্রবার (২৪ মার্চ) সকাল থেকে ভোক্তা পর্যায়ে কেজি প্রতি ব্রয়লার মুরগির দাম কমবে ৩০-৪০ টাকা। তবে রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা গেল ভিন্ন চিত্র।
সরেজমিনে বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাত্র ১০ টাকা কমে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২৬০-২৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, মিলগেট থেকে মুরগি বিক্রি হওয়ার পর কয়েক হাত বদল হয়ে তাদের কাছে আসে। আজ সকালে তারা ২৪৮ টাকা কেজি দরে ব্রয়লার মুরগি কিনে এনেছেন। তাদের ধারণা, পাইকারি পর্যায়ে নতুন দাম এখনো কার্যকর হয়নি। তাই খুচরা বাজারে মুরগির দাম কমেনি।
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার (২৪ মার্চ) রাজধানীর রামপুরা, বাড্ডা ও শাহজাদপুর কাঁচাবাজারের মুরগির খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
আরও পড়ুন>>রমজান এলেই বেগুনে ‘আগুন’!
বিজ্ঞাপন
এসব বাজারের ব্রয়লার মুরগির খুচরা দোকানগুলোর ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল তারা ২৬০ টাকা কেজিতে মুরগিগুলো কিনে এনেছেন। আজ তা ২৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। অন্যদিকে ২৪৮-২৫২ টাকা কেজি দরে যে মুরগিগুলো আজ সকালে এসেছে, সেগুলো ২৬০ টাকায় বিক্রি করছেন।
নতুন দাম আজ থেকে কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও কেন হচ্ছে না জানতে চাইলে রামপুরা বাজারের ব্রয়লার মুরগির খুচরা বিক্রেতা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আজ আমরা কাপ্তান বাজার থেকে ২৪৮ টাকা কেজি দরে মুরগি কিনে এনেছি। কাপ্তান বাজারের ব্যবসায়ীরা মিলগেটে গিয়ে মুরগি কিনে আনে। তারা নতুন দামে কিনতে পারেনি বলে আমাদেরও দিতে পারেনি। যেদিন থেকে নতুন দামে আমরা মুরগি কিনতে পারব, সেদিন কম দামে খুচরা বিক্রি হবে।
নতুন দাম কার্যকর হওয়ার পর ভোক্তা পর্যায়ে ২২০-২৩০ টাকা কেজি দরে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হবে বলে জানিয়েছেন শাহজাদপুরের খুচরা বিক্রেতা আমিনুর মিয়া। তিনি বলেন, এখনো আমরা নতুন দামে মুরগি কিনতে পারেনি। তবে দুয়েক দিনের মধ্যে নতুন দামে মুরগি আসা শুরু করবে। নতুন দামে মুরগি এলে খুচরা পর্যায়ে ২২০-২৩০ টাকা কেজি দরে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হবে। আশা করি সম্পূর্ণ রোজায় এই দামে বিক্রি করা যাবে।
আরও পড়ুন>>বাজারে ঢুকে মেয়র বললেন ‘দাম বেশি নিলে দোকান বন্ধ’
এদিকে ক্রেতারা বলছেন, নতুন দাম কার্যকর হলেও কোনো লাভ নেই। কারণ যে হারে দাম বেড়ে ১৫০ টাকার মুরগি কেজিতে ২৭০-২৮০ টাকা হয়েছে, সেই তুলনায় ৩০-৪০ টাকা দাম কমা কিছুই না। এছাড়া নতুন দাম কবে কার্যকর হবে তা নিয়েও ক্রেতাদের মনে অনিশ্চয়তা।
এ বিষয়ে বাড্ডা কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসা ক্রেতা মো. মাহাবুব বলেন, দাম কমেও যদি ২২০ টাকা হয় তাহলে আমাদের খুশি হওয়ার কী কারণ আছে? ১৫০ টাকা কেজির মুরগি যদি ২২০ টাকা দিয়ে কিনতে হয় এতে ক্রেতাদের লাভ কোথায়? আর ২২০ টাকা কেজি দামে ব্রয়লার মুরগি আমাদের মতো নিম্ন-মধ্যবিত্তদের জন্য সম্ভব নয়। আমার জন্য সপ্তাহে এক দিনও মুরগি কেনা সম্ভব নয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) বিকেলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের সঙ্গে ব্রয়লার মুরগির ফার্মের মালিকদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে কাজী ফার্মস, প্যারাগন পোল্ট্রি অ্যান্ড হ্যাচারি, আফতাব বহুমুখী ফার্মস ও সিপি বাংলাদেশের মালিকরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে ভোক্তা অধিকারের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান জানান, কাজী ফার্ম, সিপি, প্যারাগন ও আফতাব ফার্মের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। বৈঠকে তাদের সঙ্গে একটি ঐক্যমতে পৌঁছেছি। ফার্ম থেকে আগে ২২০-২৩০ টাকা করে বিক্রি হতো। তবে ফার্মের মালিকরা বলেছেন, প্রথম রোজার দিন থেকে তারা ১৯০-১৯৫ টাকা কেজি দরে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করবেন। তবে ভোক্তা পর্যায়ে কতো টাকা বিক্রি হবে তা এখনো বলা যাচ্ছে না। তবে বাজারে ব্রয়লার মুরগি দামে ৩০-৪০ টাকার একটা প্রভাব পড়বে। কেজি প্রতি ব্রয়লার মুরগি দাম ভোক্তা পর্যায়ে ৩০-৪০ টাকা কমতে পারে বলে আশা করছি।
এমএসি/কেএ