দফায় দফায় বাড়ছে সব ধরনের নির্মাণ সামগ্রীর দাম। নানা কারণ দেখিয়ে বেড়েছে রড-সিমেন্টের দামও। বর্তমানে সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে এসব নির্মাণ সামগ্রী। অন্যদিকে, নতুন ড্যাপে ঘোষিত ফ্লোর-এরিয়া রেশিও বা আয়তন অনুপাতে তলা কমানোর কারণে ঢাকায় বেশিরভাগ ভবনের অনুমোদন হচ্ছে চার থেকে পাঁচ তলা। ফলে ফ্ল্যাট নির্মাণ খরচ পড়ছে বেশি। সবমিলিয়ে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে ফ্ল্যাটের দাম।

আবাসন খাত পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সব ধরনের নির্মাণ সামগ্রীর দাম হু হু করে বেড়ে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে নতুন নির্মাণ করা ফ্ল্যাটে। ফলে এলাকা এবং নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ভেদে ফ্ল্যাটের প্রতি বর্গফুটের দাম ১ থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এ দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কাও করা হচ্ছে।

নতুন ড্যাপের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যেখানে ভবন নির্মাণ করা হবে সেখানকার রাস্তার প্রশস্ততা যতটুকু ভবনের ব্যবহারযোগ্য স্পেসের পরিমাণও সেই অনুপাতে হবে। আগে যেখানে প্রশস্ত রাস্তা না থাকলেও ৮/১০ তলা ভবন করা যেত, এখন সেখানে অনুমোদন পাওয়া যাবে ৪/৫ তলার। এ কারণে স্বল্প প্রশস্ত রাস্তার পাশের জমির মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সেইসঙ্গে আবাসন বা ডেভেলপার কোম্পানিগুলোও ব্যাপকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। ফলে এসবের প্রভাব পড়ছে ফ্ল্যাটের সাধারণ ক্রেতাদের ওপর। দাম অতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের আবাসনের বা ফ্ল্যাট কেনার স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।

গত বছরের মাঝামাঝি সময় থেকেই ঊর্ধ্বগতির ধারা ছিল নির্মাণ সামগ্রীর অন্যতম উপকরণ রড-সিমেন্টের। এরপর জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পর কয়েক মাসের ব্যবধানে আবারও রডের দাম বাড়তে থাকে। সেই সময় রডের দাম প্রতি টনে বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় ৯৩ থেকে ৯৫ হাজার টাকায়। এরপরও রডের দামের ঊর্ধ্বগতি থামেনি, বর্তমানে প্রতি টন রডের দাম গিয়ে ঠেকেছে ১ লাখ ১ হাজার টাকায়। অর্থাৎ কয়েক মাসে রডের দাম প্রতি টনে বেড়েছে প্রায় ৮ হাজার টাকা।

এদিকে, সিমেন্টের দামও বেড়ে বস্তা প্রতি ৫৫০ থেকে ৬৬০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে প্রথম শ্রেণির অধিক পোড়া ইটের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ টাকা আর অটোমেটিক মেশিনে তৈরি এক নম্বর ইটের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ টাকায়। সংশ্লিষ্টরা বলছে, বিশ্ববাজারে এসব উপকরণের কাঁচামালের দাম বেড়েছে, এর মধ্যে ডলারের প্রভাব রয়েছে, রয়েছে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের প্রভাবও। সবমিলিয়ে বেড়েছে এসব নির্মাণ উপকরণের দাম।

নতুন ড্যাপের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যেখানে ভবন নির্মাণ করা হবে সেখানকার রাস্তার প্রশস্ততা যতটুকু ভবনের ব্যবহারযোগ্য স্পেসের পরিমাণও সেই অনুপাতে হবে। আগে যেখানে প্রশস্ত রাস্তা না থাকলেও ৮/১০ তলা ভবন করা যেত, এখন সেখানে অনুমোদন পাওয়া যাবে ৪/৫ তলার

আবাসন কোম্পানিগুলো তথ্য মতে, প্রতি বছরই ফ্ল্যাটের চাহিদা বাড়ছে, আর নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধির ফলে ফ্ল্যাটের দামেও প্রভাব পড়ছে। ফলে এলাকাভেদে নতুন ফ্ল্যাটের প্রতি বর্গফুটের দাম ১ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তবে এই দাম আরও বাড়তে পারে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর লালমাটিয়া এলাকায় যে ফ্ল্যাটের প্রতি বর্গফুট আগে ১২ থেকে ১৮ হাজার টাকা ছিল, সেটি বেড়ে এখন ১৫ থেকে ২০ হাজার বা তারও বেশি হয়েছে। একইভাবে ধানমন্ডি এলাকায় যেই ফ্ল্যাটের প্রতি বর্গফুট ১৮ হাজার টাকা ছিল, সেটির দাম বর্তমানে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার বেশি। মিরপুর এলাকার ফ্ল্যাটের প্রতি বর্গফুট ৫ হাজার থেকে বেড়ে ৬/৭ হাজার টাকার বেশি হয়েছে। কয়েক বছরে সবচেয়ে বেশি ফ্ল্যাটের দাম বেড়েছে রাজধানীর বারিধারা, গুলশান, ধানমন্ডি এলাকায়।

আরও পড়ুন : প্রশস্ত রাস্তা না থাকলে আটতলার ভবন হবে চারতলা

রাজধানীর মালিবাগ এলাকার একটি রড সিমেন্টের দোকানের মালিক আব্দুস সোবহান বলেন, কিছুদিন আগেও রড বিক্রি করেছি প্রতি টন ৯৪ হাজার টাকায়। এখন সেটি বিক্রি করতে হচ্ছে ১ লাখ ১ হাজার টাকায়। একইভাবে সিমেন্টের দামও বাড়তি যাচ্ছে। আসলে এসবের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের ব্যবসা কমে গেছে। কারণ, নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধির কারণে মানুষ এখন বাড়ির কাজ শুরু করছে না। ফলে আমাদের বিক্রিও কমে গেছে। ঠিকাদার, আবাসন ব্যবসায় জড়িত অনেকেই আমার কাছ থেকে মালামাল নেয়। তারাও বলছে, আগে যেসব কাজ শুরু হয়েছিল সেগুলোরই কাজ চলছে এখনও। বাড়তি দামে সবকিছু কিনে কাজ করতে হচ্ছে, তাই ফ্ল্যাটের দামের পাশাপাশি ফ্ল্যাট ভাড়াও বাড়বে।

রাজধানীর গুলশান-সংলগ্ন নির্মাণাধীন একটি বাড়ি নির্মাণের কাজ করছে বেসিক বিল্ডার্স লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এই বাড়ির নির্মাণ কাজের দায়িত্বে থাকা ব্যবস্থাপক নূরুল ইসলাম বলেন, এই বাড়িটির নির্মাণ কাজের শুরুতে নির্মাণ সামগ্রীর যে খরচ ছিল বর্তমানে সেটা অনেক বেড়েছে। ইট, পাথর, রড, সিমেন্টসহ প্রতিটি জিনিসের দাম বাড়তি। ফলে খরচ অনেক বেড়ে গেছে। আগে যে দামে এই এলাকায় ফ্ল্যাট বিক্রি হতো, এখন এর চেয়ে অনেক বেশি দাম পড়বে। এছাড়া এই ভবনের অনুমোদন আগে নেওয়া হয়েছে, নতুন ড্যাপ অনুযায়ী এখানে এত বড় ভবনের অনুমতি আর পাওয়া যাবে না। সে কারণে আগামীতে এই দাম আরও বাড়বে।

রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) বলছে, নতুন ড্যাপে ঘোষিত ফ্লোর-এরিয়া রেশিও বা আয়তন অনুপাতে তলা কমানোর কারণে ঢাকায় বেশিরভাগ ভবন হবে ৪ থেকে ৫ তলা। ফলে আগামীতে আবাসন সংকট আরও প্রকট হবে। উচ্চহারে ফ্ল্যাটের দাম বাড়বে এবং বাড়ি ভাড়া আকাশচুম্বী হবে।

রিহ্যাবের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, নতুন ড্যাপের কারণে ফ্ল্যাটের চাহিদা ও জোগানের মধ্যে ভারসাম্যহীনতা তৈরি হবে। নতুন ড্যাপের প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার পর থেকে আবাসন কোম্পানিগুলো জমির মালিকের সঙ্গে কোনো চুক্তি বা সমঝোতায় যেতে পারছে না। কেউ নতুন করে প্ল্যান পাস করছে না। পুরাতন প্রকল্পগুলো নিয়েই অনেকে কাজ করছে। ফলে আগামীতে ফ্ল্যাটের সংকট তৈরি হবে এবং দাম বাড়বে।

এদিকে, আগে যেখানে প্রশস্ত রাস্তা না থাকলেও ৮/১০ তলা ভবন করা যেত সেখানে নতুন ড্যাপের নিয়ম অনুযায়ী অনুমোদন পাওয়া যাবে ৪/৫ তলা ভবনের। এ কারণে স্বল্প প্রশস্তের রাস্তার পাশের জমির মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে যাচ্ছেন। আর আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন করে বাসা, ভবন নির্মাণ করছে না আগের মতো।

নতুন ড্যাপে ১২ থেকে ১৬ ফুট পর্যন্ত রাস্তার পাশে ফ্লোর এরিয়া রেশিও (ফার) ধরা হয়েছে ১.৭৫ অর্থাৎ এমন প্রশস্ত রাস্তার পাশে পাঁচ কাঠার প্লটে পার্কিংসহ পাঁচতলা ভবন নির্মাণ করা যাবে। এমন হিসাব বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, নতুন ড্যাপে ৬ থেকে ৮ ফুট প্রশস্ত রাস্তার পাশে ফ্ল্যাটের ফার ধরা হয়েছে ১.২৫। ৮ থেকে ১২ ফুট প্রশস্তের রাস্তার ফার ১.৫, ১৬ থেকে ২০ ফুট প্রশস্ত রাস্তার ফার ২, ২০ ফুট রাস্তার ফার ২.৫, ৩০ ফুট রাস্তার ফার ৩, ৪০ থেকে ৬০ ফুট রাস্তার ফার ৩.৫ থেকে ৩.৭৫ ধরা হয়েছে। ফলে পাঁচ কাঠার একটি জমিতে আগে আট ও দশ তলার নকশা পাওয়া গেলেও এখন পাওয়া যাবে পাঁচ তলার।

আবাসন কোম্পানিগুলো তথ্য মতে, প্রতি বছরই ফ্ল্যাটের চাহিদা বাড়ছে, আর নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধির ফলে ফ্ল্যাটের দামেও প্রভাব পড়ছে। ফলে এলাকাভেদে নতুন ফ্ল্যাটের প্রতি বর্গফুটের দাম ১ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তবে এই দাম আরও বাড়তে পারে

এ বিষয়ে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) সহ-সভাপতি কামাল মাহমুদ বলেন, আগে যেখানে আট তলা ভবনের অনুমোদন পাওয়া যেত, নতুন ড্যাপের কারণে সেখানে অনুমোদন পাওয়া যাবে চার তলা বাড়ির। এ কারণে স্বাভাবিকভাবেই আবাসন কোম্পানিগুলো কম প্রশস্তের রাস্তার পাশে যেসব জমি আছে সেসব জমির মালিকদের সঙ্গে ফ্ল্যাট বা বাড়ি নির্মাণের কোনো চুক্তি করছে না। ফলে নতুন করে বাড়ি নির্মাণ হচ্ছে না। কারণ এখানে আবাসন কোম্পানি, জমির মালিক দুই পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যে কারণে চাহিদার তুলনায় ফ্ল্যাট নির্মাণ হচ্ছে না। এ কারণে ফ্ল্যাটের দামও বাড়ছে। এছাড়াও নির্মাণ সামগ্রীর অতিরিক্ত দাম বৃদ্ধির কারণেও ফ্ল্যাটের দাম বেড়ে যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, একটি ফ্ল্যাটের প্রতি বর্গফুট নির্মাণের ক্ষেত্রে আবাসন কোম্পানিগুলোর খরচ বেড়ে যাচ্ছে। যে কারণে ক্রেতাদের কাছে বেশি দামে ফ্ল্যাটগুলো বিক্রি করতে হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ঢাকায় যারা চাকরি করেন তাদের বেতনের সিংহভাগই বাড়ি ভাড়া পরিশোধে চলে যায়। তাদের অনেকের স্বপ্ন থাকে একটি ফ্ল্যাটের। বর্তমান বাজারে ফ্ল্যাটের যে দাম, তাতে সাধারণ মানুষের ফ্ল্যাট কেনার স্বপ্ন-পূরণ হচ্ছে না। একে তো নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেশি, অন্যদিকে সুউচ্চ ভবন নির্মাণে অনেক নিয়ম ও শর্ত আরোপ করা হয়েছে নতুন ড্যাপে। এসব সিদ্ধান্ত ভবন মালিক ও আবাসন কোম্পানির জন্য খুব খারাপ হয়েছে। এসব কারণে ঢাকায় ফ্ল্যাটের দাম আগের চেয়ে অনেক বেড়ে যাবে। সাধারণ মানুষ ফ্ল্যাট কিনতে পারবে না।

আরও পড়ুন : ড্যাপ পুরো ঢাকা মহানগর অঞ্চলের জন্য সার্বিক-সমন্বিত মহাপরিকল্পনা

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানির মার্কেটিং বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, একদিকে নতুন ড্যাপ, অন্যদিকে অস্বাভাবিকভাবে নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেক আবাসন কোম্পানি নতুন করে ফ্ল্যাট নির্মাণের কাজ বন্ধ রেখেছে। আগে যেসব ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল সেগুলোর কাজই বর্তমানে চলছে। নতুন কাজ খুব কম হচ্ছে। ধরুন, একটি আট তলা বাড়ির কাজ আমরা গত বছরের প্রথম দিকে শুরু করেছি, কয়েক ফ্লোরের কাজ শেষ হওয়ার পর নতুন করে নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেড়েছে। এতে আমাদের খরচ অবশ্যই বেড়ে গেছে, প্রতি স্কয়ার ফিটের নির্মাণ খরচে এর প্রভাব পড়েছে। যে কারণে ফ্ল্যাটের দামও আরও বেড়েছে এবং বাড়বে। অন্যদিকে, ড্যাপের নতুন নিয়ম অনুযায়ী আট তলা ভবনের জায়গায় চার তলা করতে হবে। সে কারণে ক্ষতি যেমন আবাসন কোম্পানির ও জমির মালিকের, তেমনি ফ্ল্যাট বেশি দামে কিনেও ক্ষতি হচ্ছে ক্রেতাদের। তাই এখন থেকে যত বাড়ি বা ফ্ল্যাট নির্মাণ হবে সবগুলোরই দাম বাড়তে থাকবে। সবকিছু বিবেচনায় অনেক আবাসন কোম্পানি নতুন করে ফ্ল্যাট নির্মাণ বন্ধ রেখেছে। এর প্রভাবও পড়ছে বাজারে, কারণ চাহিদার তুলনায় জোগান কম।

রাজধানীর একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন আব্দুল্লাহ আল ওয়াদুদ। তিনি বেশ কিছুদিন ধরে রাজধানীতে একটি ফ্ল্যাট কিনতে চাইছেন। সেই লক্ষ্যে নিয়মিত দরদামের খোঁজ-খবর রাখেন। ফ্ল্যাটের দামের ঊর্ধ্বগতির বিষয়ে আব্দুল্লাহ আল ওয়াদুদ বলেন, অনেক দিন ধরে ফ্ল্যাট কেনার চেষ্টা করছি, কিন্তু বাড়তি দামের কারণে কিনতে পারছি না। বর্তমানে সর্বোচ্চ দাম চলছে ফ্ল্যাটের। রিয়েল এস্টেট কোম্পানিগুলোও সব এলাকাতে ফ্ল্যাটের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তারা জানিয়েছে নতুন করে ফ্ল্যাট নির্মাণ কম হচ্ছে, আর নির্মাণ সামগ্রীর দাম বেশি, তাই ফ্ল্যাটের দাম বেড়ে গেছে। নতুন করে ফ্ল্যাটের দাম না কমলে আমাদের মতো সাধারণ মানুষ আর ফ্ল্যাট কিনতে পারবে না।

এদিকে, নতুন ড্যাপে পরিষেবা বিবেচনায় ফ্লোর এরিয়া রেশিও (এফএআর) নির্ধারণ করা হয়েছে। যে এলাকার পরিষেবা উন্নত, সে এলাকায় ফ্লোর এরিয়া রেশিও বেশি হবে। ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন এলাকায় এ নিয়ম প্রযোজ্য হবে। যেমন— নতুন ড্যাপ অনুযায়ী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকার ধানমন্ডি, বাংলামটর, শাহবাগ, পরীবাগ এলাকায় নতুন করে সুউচ্চ ভবন নির্মাণ করা যাবে। সেই সঙ্গে মালিবাগ, শান্তিবাগ, পশ্চিম রাজাবাজার, জিগাতলা, শুক্রাবাদ, গোড়ান, সিপাহিবাগ, দক্ষিণগাঁও, কদমতলী, সবুজবাগ, আনছারাবাদ, মধ্য বাসাবো এলাকায় পরিষেবার দিক বিবেচনা করে আগের চেয়ে কম উচ্চতার ভবনের অনুমোদন পাওয়া যাবে।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অধীন এলাকা যেমন— গুলশান, বারিধারাসহ আরও কিছু এলাকায় সুউচ্চ আবাসিক ভবন নির্মাণের বিধান রাখা হয়েছে ড্যাপে। পাশাপাশি মেরুল বাড্ডা, রামপুরা, উলন, নিকেতন, মিরপুর- ১১, বাউনিয়া, কল্যাণপুর, পাইকপাড়া, নিকেতন, নয়াটোলা, মধুবাগ, খিলক্ষেত, কুড়িল, জোয়ারসাহারা, কালাচাঁদপুর, কড়াইল এলাকার নাগরিক পরিষেবা বিশ্লেষণ করে আগের চেয়ে কম উচ্চতার ভবন নির্মাণের শর্তজুড়ে দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে ড্যাপ পরিচালক আশরাফুল ইসলাম বলেন, শুধু ফ্লোর এরিয়া কমিয়ে দেওয়া হয়েছে, এটা নয়। বিশ্বের অন্যান্য শহরে প্লট-কেন্দ্রিক উন্নয়ন নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। আমরাও তাই করেছি। যে এলাকার পরিষেবা উন্নত, সে এলাকায় ফ্লোর এরিয়া রেশিও বেশি হবে। এ নিয়ম অন্যান্য দেশেও রয়েছে, সেই তুলনায় আরও বেশি তলার অনুমোদন আমরা দিয়েছি ড্যাপে। এছাড়া নতুন ড্যাপে গণমানুষের আবাসনের বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। স্বল্প আয়ের আবাসনকে নীতিপ্রণোদনা দেওয়ার পাশাপাশি নাগরিক সুবিধা প্রদান করে সবার জন্য মানসম্মত আবাসন নিশ্চিত করাই আমাদের উদ্দেশ্য।

এএসএস/এসএসএইচ/