বিএনপিকে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চাইছেন না কোনো নির্বাচন কমিশনার (ইসি)। আজ (সোমবার) এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)  কাজী হাবিবুল আউয়ালের গণমাধ্যমের মুখোমুখি হওয়ার কথা থাকলেও তিনি অসুস্থ থাকায় তা সম্ভব হয়নি। তবে সিইসির পরিবর্তে অন্য কোনো কমিশনারও এ বিষয়ে কথা বলতে চাননি। বিএনপিকে চিঠি দেওয়ার বিষয়ে পুরো কমিশনই যেন মুখে কুলুপ এঁটেছেন।

জানা যায়, অসুস্থ থাকার কারণে আজ অফিসে আসেননি সিইসি। গতকাল (রোববার) স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে সাভারের স্মৃতিসৌধসহ বিকেলে বঙ্গভবনে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন সিইসি। স্মৃতিসৌধে গিয়ে ঘণ্টা দুয়েক দাঁড়িয়ে থেকে শ্রদ্ধা জানান সিইসি। এরপর বিকেলে বঙ্গভবনের অনুষ্ঠান শেষে বাসায় ফিরে অসুস্থ হয়ে যান। ডায়াবেটিস বৃদ্ধিসহ পায়ের ব্যথায় তিনি আজ অফিস করতে পারেননি বলে তার দপ্তর সূত্রে জানা গেছে।

সকালে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খানের (অব.) কাছে গেলে তিনিও এ বিষয়ে কোনো কথা বলবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। 

নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর জানান, বিএনপিকে চিঠি দেওয়ার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। সুতরাং এ বিষয়ে তিনিও কিছু বলতে পারবেন না। এরপর ইসি আনিছুরের কাছে গেলে তিনিও অসুস্থতার কারণে বিশ্রামে আছেন বলে জানান তার ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস)। নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা বিএনপিকে চিঠি দেওয়ার বিষয়টি তার দায়িত্বপ্রাপ্ত কাজ না বলে জানান। তাই এ বিষয়ে তিনিও কিছু বলতে রাজি হননি।  
 
এর আগে, গত ২৩ মার্চ বিএনপি ও সমমনা দলগুলোকে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি পাঠান সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল। নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবিব খান এ তথ্যটি নিশ্চিত করলেও আজ এ বিষয়ে তিনি কোনো কথা বলতে চাননি।

ওই চিঠিতে সিইসি লেখেন, ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি আমরা দায়িত্ব গ্রহণের পর ধারাবাহিকভাবে স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচন করে আসছি। বর্তমান কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ সংসদ নির্বাচনের কথা অনুধাবন করে আসছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বর্তমান কমিশনের প্রতি অনাস্থা ব্যক্ত করে প্রত্যাখ্যান করে আসছে। আপনারা নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

চিঠিতে আরও বলা হয়, যদিও আপনাদের এমন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও কৌশলের বিষয়ে কমিশনের কোনো মন্তব্য নেই। আপনাদের দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হলেও কমিশন মনে করে বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে আনুষ্ঠানিক না হোক, অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা বা মতবিনিময় হতে পারে। আপনাদের ইসিতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। সদয় সম্মত হলে আলোচনা করে দিনক্ষণ নির্ধারণ করা যেতে পারে। প্রত্যুত্তর প্রত্যাশা করছি। সিইসি এই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক উত্তর পাঠায়নি বিএনপি।

এসআর/কেএ