নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খানের (অব.) সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক করেছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বিতর্কিত মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।

সোমবার (২৭ মার্চ) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে মেয়র জাহাঙ্গীরের সঙ্গে বৈঠক করেন ইসি।

জানা গেছে, আসন্ন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নিজের প্রার্থীতাসহ ভোটের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন মেয়র জাহাঙ্গীর।

তবে দুই ঘণ্টার আলোচনার বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কারো কাছে থেকে কিছু জানা যায়নি। এসময় সাংবাদিকরা ইসি আহসান হাবিবের সঙ্গে দেখা করতে চাইলেও তিনি দেখা করেননি।

২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে গোপনে ধারণ করা জাহাঙ্গীর আলমের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জেলার কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করা হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করেন। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ নিয়েও জাহাঙ্গীর আলম বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দেন বলে অভিযোগ ওঠে।

পরবর্তীতে ২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর মেয়র জাহাঙ্গীরকে দল থেকে বহিষ্কার করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগে মামলাও হয়।

একই অভিযোগে মেয়র জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ফরিদপুর, রাজবাড়ী, গাজীপুর, নওগাঁ, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, পঞ্চগড়সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় মামলা করা হয়। ২৫ নভেম্বর তাকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্তও করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

গত জানুয়ারিতে গাজীপুরের সাবেক মেয়র এবং গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে আওয়ামী লীগ।

জাহাঙ্গীর আলমকে উদ্দেশ্য করে সেই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আপনার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বার্থ, আদর্শ, শৃঙ্খলা তথা গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততার জন্য ইতোপূর্বে আপনাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার/অব্যাহতি প্রদান করা হয়। আপনার বিরুদ্ধে আনীত সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ স্বীকার করে আপনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন এবং ভবিষ্যতে সংগঠনের গঠনতন্ত্র, নীতি ও আদর্শ পরিপন্থি কোনো কার্যকলাপে সম্পৃক্ত হবেন না মর্মে লিখিত অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। এমতাবস্থায়, ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে গণভবনে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংগঠনের গঠনতন্ত্রের ১৭(৬) ও ৪৭ (২) ধারা মোতাবেক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নিকট সাধারণ ক্ষমা প্রার্থনা করে আপনার প্রেরিত লিখিত আবেদন পর্যালোচনা এবং ভবিষ্যতে সংগঠনের স্বার্থ পরিপন্থি কর্মকাণ্ড ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে আপনার প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করা হলো। উল্লেখ্য, ভবিষ্যতে কোনো প্রকার সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হলে তা ক্ষমার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।’

এসআর/এমজে