প্রয়োজন হলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিধি সংশোধন করা বা পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। তবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োজন আছে বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

রোববার (২ এপ্রিল) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। সেমিনারে ‘বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে আরবিট্রেশন আইনের প্রয়োজনীয় সংস্কার’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

আনিসুল হক বলেন, আমাদের এখানে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে হয়রানির অনেক অভিযোগ এসেছে। প্রয়োজন হলে আইনের বিধি সংশোধন করা বা পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। তবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োজন আছে। গত ১৪ মার্চ এ বিষয়ে সুধীজনদের সঙ্গে আলোচনাও হয়েছে।

প্রথম আলোর সম্পাদক ও প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, দেশের কোনো গণমাধ্যম বা সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সরকার মামলা করেনি। মামলা হয়েছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে, অপরাধের বিরুদ্ধে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বিশ্বের সব দেশে আছে। কিন্তু সেখানে হয়ত সরাসরি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বলা নেই। ডিজিটাল অপরাধ কমাতে এ আইন করেছে সব দেশ।

তিনি বলেন, দেশ-বিদেশে বা জাতিসংঘে এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কিছু অপব্যবহার হয়েছিল, সেটা আমরা স্বীকার করে এ বিষয়ে কী পরিবর্তন আনা যায় সেটা নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আলোচনা এখনো চলমান। সেখান থেকে একটা টেকনিক্যাল নোট এসেছে, আমরা সেটা নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা করছি।

আনিসুল হক বলেন, সাংবাদিকদের যাতে অহেতুক হয়রানি করা না হয়, সে বিষয়ে একটা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সুধীজনদের সঙ্গে আলোচনাও হয়েছে। এ বিষয়ে ৩০ মার্চ আবারও বসার কথা ছিল, তবে তা স্থগিত করা হয়। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে পুনরায় বসা হবে। সুধীজনরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ডাটা প্রটেকশন আইন এবং এনজিও ভলেন্টারি নিয়েও একটা আইনের কথা বলেছেন। এসব নিয়েও আলোচনা হবে।

আইনমন্ত্রীর সঙ্গে আইজিপির বৈঠক

রোববার সচিবালয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে বৈঠক করেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী বলেন, আইজিপির সঙ্গে প্রতিনিয়ত মামলা-মোকদ্দমা নিয়ে আলোচনা হয়। অনেক মামলা আদালতে যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি হয় এবং যেসব মামলার জটিলতা থাকে সেগুলো নিয়ে আমরা আলাপ-আলোচনা করি। মামলার জট কমানোর জন‌্য আলাপ-আলোচনা করি। সেই আলোচনার জন‌্য উনি এসেছিলেন। এতটুকুই হয়েছে।

প্রথম আলোর সম্পাদক জামিনের জন‌্য আদালতে গেছেন। তাদের একজন সাংবাদিক জেলে রয়েছেন। এ বিষয়ে আইজিপির সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না– জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, আপনারা খুব ভালো করেই জানেন আমি সাব-জুডিস ম‌্যাটারে (বিচারাধীন বিষয়) কারো সঙ্গে কোনো আলোচনা করি না। এটা আদালতের ব‌্যাপার, আদালত যে পদক্ষেপ নেবে সেটাই আমাদের মানতে হবে।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব‌্যবহার হচ্ছে, এটি বাতিলের দাবি উঠেছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধ করার জন‌্য অত‌্যন্ত প্রয়োজনীয় একটা আইন। এই আইনকে কোনো মতেই বাতিল করা যায় না।

এ আইনের তো অপব‌্যবহার হচ্ছে– এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, সেটা তো আমরা দেখছিই।

আরএম/এসএসএইচ/