বঙ্গবাজারের ভয়াবহ আগুন আশপাশের কয়েকটি মার্কেটে ছড়িয়ে পড়ছে। আগুনের লেলিহান শিখা অনেক দূর থেকে দেখা যাচ্ছে। সবশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত (সকাল ৮টা) ফায়ার সার্ভিসের ৪১টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। আরও বেশ কয়েকটি ইউনিট ঘটনাস্থলে আসছে বলে ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে।

মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সকাল ৬টা ১০ মিনিটে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। আর ৬টা ১২ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। মূলত ফায়ার সার্ভিসের ঠিক উল্টো পাশেই বঙ্গবাজারে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। 

সরেজমিনে দেখা যায়, ধোঁয়ার কুণ্ডলীতে ছেঁয়ে গেছে বঙ্গবাজারের আকাশ। প্রচণ্ডতাপে ঘটনাস্থলের আশপাশে থাকা কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে আগুন নিয়ন্ত্রণে। তবে কোনোভাবেই আগুন তীব্রতা কমছে না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তীব্রতা বেড়ে যাচ্ছে। এদিকে ঘটস্থলের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছেন।

মার্কেটের ব্যবসায়ীরা যে যার মতো মালামাল বের করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু ইতোমধ্যে অনেক ব্যবসায়ী নিঃস্ব হয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন। আসন্ন ঈদ উপলক্ষ্যে তারা অনেক মালামাল তুলেছেন। আগুনে সেগুলো পুড়ে গেছে।

অন্যদিকে বঙ্গবাজার মার্কেটে লাগা আগুন পাশের এনেক্সকো টাওয়ারে ছড়িয়ে পড়েছে। মার্কেটটিতে ৬টি কাপড়ের দোকান রয়েছেন মো. স্বপনের। কিছু মালামাল বের করে নিয়ে আসতে পারলেও সব মালামাল পুড়ে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, ঈদ উপলক্ষ্যে প্রায় কোটি টাকার মালামাল দোকানে উঠিয়েছিলাম। আমার সব শেষ, সব মালামাল পুড়ে গেছে।

শুধু স্বপন নয় তার মতো অনেক ব্যবসায়ী কান্না করছেন বঙ্গবাজার এলাকায়। অনেকে বিভিন্ন রকম অভিযোগও করছেন ফায়ার সার্ভিস নিয়ে।

কাউসার নামে আরেক ব্যবসায়ী হাউমাউ করে কান্না করছেন। আর বলছেন, ভাই ঈদ উপলক্ষ্যে লাখ লাখ টাকার মালামাল তুলেছি। আমার সব শেষ হয়ে গেলরে ভাই। 

এদিকে বাতাসের কারণে আগুন আশপাশের ভবনে ছড়িয়ে পড়েছে। নিয়ন্ত্রণেও কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। ঘটনাস্থলে পানির সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, বঙ্গবাজার মার্কেটের দোতলা থেকে আগুনের সূত্রপাত। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের আগে এধরনের দুর্ঘটনা তাদের পথে নামিয়ে দিয়েছে। মাত্রই ঈদের বাজার শুরু হয়েছিল। ঠিক সেই মুহূর্তে এ ধরনের আগুন ব্যবসায়ীদের বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে গেল। কয়েকজন ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, সারা বছর অপেক্ষা করে থাকে এই ঈদ মৌসুমে ব্যবসা করবে বলে। কিন্তু আগুন সব শেষ করে দিল। 

এরই মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দিয়েছে বিমান বাহিনী ও সেনা বাহিনীর ফায়ার ইউনিট। এছাড়া স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও আগুন নিয়ন্ত্রণে সহায়তাকেরে যাচ্ছেন।

এমএসি/জেইউ/এসএএ/এসআই/এসএম