রাজধানীর বঙ্গবাজারে লাগা ভয়াবহ আগুন পাশের বহুতল এনেক্সকো বিল্ডিং যাতে না ছড়িয়ে যায় সে চেষ্টা চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস, বিমান ও সেনা বাহিনীর সদস্যরা। এদিকে আগুন আতঙ্কে এনেক্স মার্কেট থেকে মালামাল সরিয়ে নিচ্ছে ব্যবসায়ীরা। আগুন লাগার খবর পেয়ে ব্যবসায়ীরা দোকানের স্টাফদের নিয়ে মালমাল সরানো চেষ্টা করছে। তবে পাশের আগুনের ধোঁয়া এ ভবন অন্ধকার হয়ে গেছে। এ কারণে মালামাল সরাতে বেগ পেতে হচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, ৫ তলা বিশিষ্ট এনেক্স মার্কেট অনেক কাপড়ের দোকান ও গোডাউন রয়েছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি এ ভবনে যেন আগুন ছড়িয়ে না যায়। ব্যবসায়ীদের দ্রুত মালামাল সরিয়ে নিতে সহযোগিতা করা হচ্ছে। তবে পুরো ভবনে আগুনের ধোঁয়া অন্ধকার হয়ে যাওয়ায় মালমাল সরাতে বেগ পেতে হচ্ছে।

এনেক্স টাওয়ারে ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম জানান, আর ২০ দিন পরেই ঈদ। এ মার্কেটে পাইকারি বেচাকেনা হয়। সারা দেশের ব্যবসায়ীরা এখান থেকে কাপড় কিনতে আসেন। ঈদকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা প্রচুর মাল উঠিয়েছে। গতকাল রাতে আমার বড় চালানের একটি মাল এসেছে। আল্লাহ ভালো জানেন এ মাল আমি আদৌ সরাতে পারবো কি-না।

তিনি আরও বলেন, সেহরি খেয়ে শুধু চোখ ঘুম এসেছে, তখনই আগুনের খবর পেয়ে দ্রুত এখানে চলে এসেছি। দোকানের সব স্টাফদের নিয়ে মাল এখান থেকে সরাচ্ছি। কিন্তু মালামালগুলো কোথায় রাখবো সেই জায়গা পাচ্ছি না।

দোকানীরা যে যেভাবে পারছে কাপড় বস্তার ভেতরে ঢুকিয়ে এনেক্স মার্কেট থেকে বের করছে। কেউ কেউ ঝুঁকি নিয়ে ভ্যানে করে আপাতত অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত (সকাল সাড়ে ৮টা) রাজধানীর বঙ্গবাজারে ভয়াবহ আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৪১টি ইউনিট কাজ করেছে।

মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) সকাল ৬টা ১০ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবাজারে ভয়াবহ আগুন লাগে। এরপর ৬টা ১২ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফায়ার সার্ভিস। প্রথমে ৩০টি ইউনিট পরে তা বাড়িয়ে ৪১টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী রাজধানীর সব ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।

ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাফি আল ফারুক বলেন, আজ সকাল ৬টা ১০ মিনিটে বঙ্গবাজার মার্কেট আগুন লাগার খবর পেয়েছি। সংবাদ পাওয়ার পর আমাদের একের পর এক ইউনিট ঘটনাস্থলে যাচ্ছে। বর্তমানে ৪১টি ইউনিট ঘটনাস্থলে কাজ করছে।

প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, বঙ্গবাজার মার্কেটের দোতলা থেকে আগুনের সূত্রপাত। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের আগে এ ধরনের দুর্ঘটনা তাদের পথে নামিয়ে দিয়েছে। মাত্রই ঈদের বাজার শুরু হয়েছিল। ঠিক সেই মুহূর্তে এ ধরনের আগুন ব্যবসায়ীদের বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে গেল। কয়েকজন ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, সারা বছর অপেক্ষা করে থাকে এই ঈদ মৌসুমে ব্যবসা করবে বলে। কিন্তু আগুন সব শেষ করে দিল।