‘আগামী নির্বাচনে বাংলাদেশের অস্তিত্ব নির্ভর করছে’
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ওপর বাংলাদেশের অস্তিত্ব নির্ভর করছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) ‘প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন, সাংবিধানিক কাঠামো ও বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক অনলাইনে গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে সুশাসনের জন্যে নাগরিক (সুজন)।
বিজ্ঞাপন
সুজন-এর সভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকটিতে লিখিত প্রবন্ধ পড়েন সংগঠনটির সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। প্যানেল আলোচক ছিলেন, সুজন সহসভাপতি বিচারপতি এম এ মতিন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি ও সরকার বিভাগের অধ্যাপক আলী রীয়াজ, চার্লস ডারউইন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো ড. রিদওয়ানুল হক।
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তোফায়েল অধ্যাপক, সুজন কোষাধ্যক্ষ সাবেক ব্যাংকার সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ, অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস।
বিজ্ঞাপন
আসিফ নজরুল বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র শুধু না বাংলাদেশ অস্তিত্ব নির্ভর করছে আগামী নির্বাচনের ওপর। অর্থনীতি, পরিবেশ, রাজনীতি সব কিছু নির্ভর করছে এর ওপর। স্বরাষ্ট্র, তথ্য আর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় টেকনোক্র্যাট মন্ত্রীর অধীনে দিতে হবে, কালাকানুন বাতিল করতে হবে, পর্যবেক্ষকদের সুযোগ করে দিতে হবে।
এম হাফিজউদ্দিন খান বলেন, গত ৫০ বছরে দলীয় সরকারের অধীনের সুষ্ঠু নির্বাচন দেখিনি। এবারও তাই হবে বলে মনে হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে বড় ধরনের গণঅভ্যুত্থান হবে বলেও মনে হচ্ছে না। ঘুরে ফিরে ওই একটি কথাই আসে, নির্দলীয় সরকার চাই।
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, প্রধান দুটি দলের যে কোনো একটি দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না। তাই এমন পরিস্থিতি তৈরি করতে হবে যাতে দুটি দলই অংশগ্রহণ করে। আর এ জন্য সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে। নির্বাচন কমিশন আরপিও সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে যেগুলো আসলে প্রয়োজন নেই। মূল দরকার আইনের প্রয়োগ।
আলী রীয়াজ বলেন, মূল সংকটটা হলো রাজনৈতিক। রাজনীতিকে এক কেন্দ্রিক করার প্রবণতা। যেভাবেই হোক পুনঃ পুনঃ নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে ক্ষমতায় আসতে হবে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে সংবিধান সংশোধন করা হচ্ছে। কার্যত অগণতান্ত্রিক দৃশ্যত গণতান্ত্রিক একটি ব্যবস্থা টিকিয়া রাখা হচ্ছে, যেখানে দল থাকবে কিন্তু গণতন্ত্র থাকবে না।
ড. বদিউল আলম মজুমদার লিখিত প্রবন্ধে বলেন, নির্বাচন একদিনের বিষয় নয়, এটি একটি সামগ্রিক প্রক্রিয়া। দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন থেকে শুরু করে, নির্বাচনী প্রচারণা, এজেন্ট নিয়োগ, ভোটারদের ভোট প্রদান, নির্বাচনী বিরোধ নিরসন পর্যন্ত সমগ্র প্রক্রিয়ায় প্রার্থীদের সমান সুযোগ না থাকলে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয় না।
তিনি বলেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রতিযোগিতামূলক তথা গ্রহণযোগ্য করতে হলে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত গড়ে তোলা জরুরি।
এসআর/এসকেডি