পরিবার-পরিকল্পনা অধিদপ্তরের চিকিৎসক মনোয়ারুল হক মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে মারা গেছেন। তিনি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন।

দিনে দুপুরে সরকারি অফিসে মনোয়ারুলের মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশ বলছে, তাদের ধারণা মনোয়ারুল আত্মহত্যা করেছেন। তবে প্রকৃত ঘটনা কী তা পরিষ্কার হওয়া যাবে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসার পর। 

তেজগাঁও থানা সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই কোটি টাকার একটি অডিট আপত্তি থাকায় মনোয়ারুল হকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছিল। ওই মামলার চিন্তা আর হতাশা থেকে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ।

নিহত মনোয়ারুলের বাড়ি বগুড়া জেলার সদর থানা এলাকায়। তিনি ওই এলাকার মৃত ওবায়দুল হকের ছেলে। মনোয়ারুল হকের বড় ভাই র‍্যাব-৮-এর সাবেক অধিনায়ক ছিলেন। তার নাম মনিরুল হক। ঢাকা পোস্টের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে তার বক্তব্য নেওয়ার জন্য কয়েকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে পরিবার-পরিকল্পনা অধিদপ্তর মঙ্গবার রাত পর্যন্ত কোনো বক্তব্য বা বিবৃতি দেয়নি। ঢাকা পোস্টও তাদের বক্তব্য নিতে পারেনি।

তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপূর্ব হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা যা জেনেছি তা হলো, মঙ্গলবার দুপুরে কারওয়ান বাজারে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের অফিসে আসেন মনোয়ারুল হক। প্রধান কার্যালয়ের ১২ তলায় ১২০১ নম্বর রুমে অডিট কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের কক্ষে ঢুকে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। ওইসময় অডিট কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ নামাজের জন্য বাইরে গিয়েছিলেন বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন।

নিহত চিকিৎসক মনোয়ারুল হকের মরদেহ

‘অডিট কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ নামাজ শেষে এসে দরজা খুলে দেখেন মনোয়ারুল হকের দেহ ঝুলে আছে। খবর পেয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ’- বলেন ওসি অপূর্ব হাসান।

পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও জানান, চিকিৎসক মনোয়ারুল হক রায়পুরা উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন।‌ তার বিরুদ্ধে এক কোটি ৯০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে বিভাগীয় মামলা হয়। ওই মামলার বিষয়ে আজ তিনি ঢাকা অফিসে এসেছিলেন।

ওসি বলেন, অর্থ আত্মসাতের তদন্ত চলায় ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও অবসরে যেতে পারছিলেন না মনোয়ারুল হক। প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পারি, তিনি এই মামলার বিষয়ে যথেষ্ট হতাশ ও চিন্তিত ছিলেন এবং তার অডিট আপত্তিও ছিল। এ কারণে তিনি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে আমরা ধারণা করছি।

তবে মনোয়ারুল যে আত্মহত্যাই করেছেন সে বিষয়টি পুরোপুরি পরিষ্কার নয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে বলে জানান ওসি।

মঙ্গলবার রাত ৯টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ ঘটনায় তেজগাঁও থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছিল।

এসএএ/এমজে