বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার (১২ এপ্রিল) এক শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী জাফরুল্লাহ চৌধুরীর আত্মার শান্তি কামনা করেন। তিনি শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ, ওষুধ শিল্প ও জনস্বাস্থ্য খাতে ডা. জাফরুল্লাহর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

ওবায়দুল কাদেরের গভীর শোক 

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক শোক বিবৃতিতে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

বুধবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিষ্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি এই শোক প্রকাশ করেন। 

বিবৃতিতে তিনি মরহুম ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, গুণগ্রাহীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে জাফরুল্লাহর অবদান স্মরণীয় : মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মল হক। এক শোক বার্তায় মন্ত্রী বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ মহান মুক্তিযুদ্ধে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রেখেছেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধকালে মেডিকেল টিমের চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।  

স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে এবং জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে তার অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ 

বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধকালীন ফিল্ড হাসপাতাল এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

যুক্তরাষ্ট্র সফররত ড. মোমেন এক শোক বার্তায় মরহুম জাফরুল্লাহ চৌধুরীর রূহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

মুক্তিযুদ্ধের পর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মহৎ প্রচেষ্টার সাথে নিজের সংশ্লিষ্টতার কথা স্মরণ করে শোক বার্তায় ড. মোমেন বলেন, সাধারণ মানুষের জন্য চিকিৎসা সেবা সহজলভ্য করতে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সারাজীবন কাজ করে গেছেন।

মুক্তিযুদ্ধে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর অবদানও তিনি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।

পরিবেশমন্ত্রীর শোক

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।

বুধবার (১২ এপ্রিল) মন্ত্রী মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। 

পরিবেশমন্ত্রী তার শোকবার্তায় একাত্তরে ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা, জাতীয় ওষুধ নীতি প্রণয়ন ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তুলে কম খরচে দরিদ্রদের চিকিৎসা সেবায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর অবদানের কথা স্মরণ করেন।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর শোক

বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। বুধবার (১২ এপ্রিল) এক শোকবার্তায় প্রয়াতের আত্মার শান্তি কামনা করেন ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

জাতি দেশপ্রেমিক শ্রেষ্ঠ সন্তানকে হারাল : ন্যাপ

বীর মুক্তিযোদ্ধা, জাতীয় বীর, গণমানুষের কণ্ঠ ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া। 

বুধবার (১২ এপ্রিল) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক শোকবার্তায় মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন দলটির নেতারা।

তারা বলেন, ডা. জাফরুল্লাহর মৃত্যুতে জাতি একজন দেশপ্রেমিক শ্রেষ্ঠ সন্তানকে হারাল। মহান মুক্তিযুদ্ধে ও মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী স্বাধীন বাংলাদেশে চিকিৎসা সেবায় তার অবদান সমগ্র জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। তার মৃত্যুতে দেশ একজন দেশপ্রেমিক, গণতন্ত্র ইনসাফ ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামী নায়ককে হারাল। স্বাধীনতা যুদ্ধের জীবন্ত নক্ষত্র আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে গেল। 

মার্কিন দূতাবাসের শোক

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস। বুধবার (১২ এপ্রিল) দূতাবাসের এক শোক বার্তায় বলা হয়, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা, প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধা ও বাংলাদেশের জাতীয় ওষুধ নীতির স্থপতি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে মার্কিন দূতাবাস শোকাহত।

আরও বলা হয়, দূতাবাস তার পরিবার এবং বন্ধুদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছে। জাফরুল্লার স্মৃতি ও কাজ বিশ্বব্যাপী পরিবর্তনকারী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।

এর আগে মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) রাতে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ডা. জাফরুল্লাহ।

৮২ বছর বয়সী জাফরুল্লাহ চৌধুরী বহুবছর ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন। সম্প্রতি তার বার্ধক্যজনিত জটিলতাগুলো খারাপের দিকে যায়। এর মধ্যে সোমবার তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।

জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জন্ম ১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার কোয়েপাড়া গ্রামে। তার বাবা হুমায়ন মোর্শেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা আর মা হাছিনা বেগম চৌধুরী ছিলেন গৃহিনী। মা–বাবার ১০ সন্তানের মধ্যে জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন সবার বড়।

১৯৭১ সালে জাফরুল্লাহ চৌধুরী যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরে ভারতের আগরতলায় গেরিলা প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। তিনি বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে তা পরিচালনা করেন।

মুক্তিযুদ্ধের পর সেই হাসপাতালের নামেই একটি প্রতিষ্ঠান গড়তে চেয়েছিলেন। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে আলোচনা করে নাম ঠিক করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।

হাসপাতালের পাশাপাশি ওষুধ উৎপাদনকারী কোম্পানিও গড়েছেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। ১৯৮২ সালে দেশে প্রথমবারের মতো ঔষধ নীতি প্রণয়নেও তার ভূমিকা ছিল।

/এমএসআই/এসএসএইচ/এমএম/এমজে