নারীর আপত্তিকর ভিডিও ইচ্ছার বিরুদ্ধে পর্ন সাইটে আপলোড ও ফেসবুকে শেয়ার করার অভিযোগে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ।

বুধবার (১২ এপ্রিল) রাতে রাজধানীর ধানমন্ডি ও লালবাগ থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করে ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম। এসময় তাদের কাছ থেকে দুটি ল্যাপটপ, বিভিন্ন মডেলের তিনটি মোবাইল ফোন ও একটি পেন ড্রাইভ জব্দ করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন- মোহাম্মদ ছামিউল আজম (১৯) ও তাহছিন আহমেদ (১৯)। ছামিউল আজম ঢাকা কলেজে অধ্যয়নরত। তাহছিন আহমেদ (১৯) এইচএসসিতে অধ্যয়নরত।

পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার হওয়া দুই যুবক ভুক্তভোগীকে সামাজিক ও মানসিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে তার আপত্তিকর ভিডিও সংগ্রহ করে বিভিন্ন পর্ন সাইট, ভিকটিমের কলেজের পরিচিত বন্ধু-বান্ধব, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম গ্রুপে প্রচার করে আসছিল।

ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ জানান, গত বছরের ২০ নভেম্বর ডিএমপির আদাবর থানায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এক ভুক্তভোগী পরিবার মামলা দায়ের করে। মামলা নং ২৫।

মামলায় আসামি অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন। বাদীর অভিযোগ, তার মেয়ে বর্তমানে বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজের একজন ছাত্রী। পড়াশোনার পাশাপাশি স্কাউটিংসহ বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ও সে একজন প্রেসিডেন্টস স্কাউট অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত।

গত ২০২১ সালের বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার ছামিউল আজম নামক এক ব্যক্তির সঙ্গে স্কাউটের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে ভিকটিমের ঝামেলা হয়। 

গত বছরের ১২ জুন বাদীর মেয়ের স্কাউটের বন্ধু মো. সামিউল আজম নামের ফেসবুক আইডি থেকে একটি লিংক পাঠিয়ে জানায়, একটি ফেসবুক গ্রুপে তার বিষয়ে বিভিন্ন বাজে কথা লিখে কয়েকটি পর্ন ছবির চেহারা মুছে ভিকটিমের নাম সংযুক্ত করে পোস্ট করেছে। 

পরবর্তীতে ভুক্তভোগী পরিবার জানতে পারে, অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা বিভিন্ন পর্ন সাইটে তার মেয়ের নাম ও পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও আপলোড করেছে। এছাড়া একটি গুগল ড্রাইভ থেকে পর্ন ভিডিও প্রচার করে তা বাদীর মেয়ের ভিডিও মর্মে প্রকাশ করেছে।

বাদী আরও জানতে পারেন, তার মেয়ের কলেজের বিভিন্ন ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রাম গ্রুপে পর্ন ভিডিও লিংক/ভিডিও শেয়ার করে তা ভিকটিমের ভিডিও বলে প্রচার করা হচ্ছে। ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী বর্তমানে কলেজে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। 

মামলার তদন্তকালে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের টিম ইনচার্জ এডিসি আশরাফউল্লাহর নেতৃত্বে একটি টিম অভিযান পরিচালনা করে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারদের আজ বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

জেইউ/কেএ