নান্দনিক শহর গঠনে গণপরিসরে স্ট্রিট ভেন্ডর ব্যবস্থাপনার বিকল্প নেই
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ভারপ্রাপ্ত মেয়র মো. জামাল মোস্তফা বলেছেন, গণপরিসর থেকে স্ট্রিট ভেন্ডরদের উচ্ছেদ করা কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী উক্ত এলাকা ত্যাগ করলেই আবার তাদের আনাগোনা শুরু হয়ে যায়। এ প্রেক্ষাপটে ডিএনসিসি স্ট্রিট ভেন্ডরদের পরিচালনা এবং ফুটপাতে হাঁটার জায়গা খালি করতে গণপরিসরে স্ট্রিট ভেন্ডর ব্যবস্থাপনা বিষয়ে একটি নতুন প্রকল্প হাতে নিয়েছে।
শনিবার (১৫ এপ্রিল) গণপরিসরে স্ট্রিট ভেন্ডর ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের অগ্রগতি যাচাই ও পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-৪-এর কার্যালয়ে একটি মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
মতবিনিময় সভার শুরুতে মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বর সংলগ্ন এলাকায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের স্ট্রিট ভেন্ডর ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম বিষয়টি তুলে ধরেন। সব হকারবৃন্দ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কার্যক্রমের প্রশংসা করেন। তবে সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনায় আসার পরেও লাইনম্যানদের চাঁদাবাজি বন্ধ হচ্ছে না সে বিষয়ে অনেক হকাররা অভিযোগ করেন।
মো. জামাল মোস্তফা বলেন, এটি একটি পাইলট প্রকল্প যেখানে ফুটপাথের দোকানগুলোকে শুধুমাত্র ফুটপাতের নির্ধারিত অংশে বিকেল ৪টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ব্যবসা করার অনুমতি রয়েছে। বাকি সময়ে সমগ্র ফুটপাত খালি রাখতে হবে।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের এই প্রকল্প ইতোমধ্যে মিরপুর-১০ এলাকার অধিকাংশ স্ট্রিট ভেন্ডরদের উচ্ছেদ না করে একটি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির আওতায় আনতে কাজ করছে। এই প্রকল্পের সফলতার ওপর ভিত্তি করে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অন্যান্য সব এলাকায় এই কার্যক্রম ধীরে ধীরে বাস্তবায়ন করা হবে।
তিনি আরো বলেন, মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম আমাকে এই কাজের দায়িত্ব দিয়েছেন যাতে কোনো চাঁদাবাজ কোনো হকারদের ওপর অত্যাচার করার সুযোগ না পায়। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এই ফুটপাতের চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। আপনাদের সার্বিক সহযোগিতা ছাড়া এই যুদ্ধে জয় সম্ভব নয়। মেয়র মহোদয় আমাদের সবাইকে একটি নান্দনিক ঢাকা উপহার দিতে চান। আর এই নান্দনিক ঢাকা গঠনে গণপরিসরে স্ট্রিট ভেন্ডর ব্যবস্থাপনার কোনো বিকল্প নেই।
ডিএনসিসির প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মাকসুদ হাসেম বলেন, গণপরিসরে স্ট্রিট ভেন্ডর ব্যবস্থাপনার যে প্রকল্প সিটি করপোরেশন হাতে নিয়েছে সেখানে সব হকারদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া সফলভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। সব হকারদের ফুটপাত ব্যবস্থাপনার নিয়ম-কানুন মেনে চলার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করতে হবে।
মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসীন বলেন, মিরপুর মডেল থানার নামে কোনো টাকা তোলা যাবে না। যদি কেউ তোলে তাহলে আপনারা সরাসরি থানায় অভিযোগ করবেন, আমি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব। তবে মূল রাস্তায় কোনো দোকান বসানো যাবে না। আমি ওসি, মিরপুর মডেল থানা, আইনের মধ্যে থেকে আপনাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে যাব।
এ সময় কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (অপারেশন) মো. আব্দুল বাতেন সিটি করপোরেশনের প্রকল্পের প্রতি তার সংহতি প্রকাশ করেন এবং চাঁদাবাজি ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে সকল হকারদের অবহিত করেন।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন ১৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. হুমায়ুন রশিদ (জনি), অঞ্চল-৪ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবেদ আলী, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মাকসুদ হাসেম, মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহসীন, মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বর সংলগ্ন স্ট্রিট ভেন্ডর, ব্র্যাক প্রতিনিধি ও ডিএনসিসির কর্মকর্তাগণ।
এএসএস/এমএ