চলতি মাসের শুরুর দিকে নীরবে ঢাকা সফর করে গেছেন চীনের বিশেষ দূত দেং শিজুন। তারই ফিরতি সফর হিসেবে চীন গেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। পররাষ্ট্র সচিবের বেইজিং সফরে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহযোগিতাসহ বৈশ্বিক সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে আলোচনার ইঙ্গিত রয়েছে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, চলতি মাসের ৬ তারিখ ঢাকা সফরে আসেন চীনের বিশেষ দূত দেং শিজুন। চীনা বিশেষ দূত ঢাকায় এসেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ চান। কেননা, পরদিন ৭ এপ্রিল মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিনকেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পথে রওনা হবেন। এমন পরিস্থিতির মধ্যে ঢাকার চীনা দূতাবাস পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপের মাধ্যমে খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে চীনা বিশেষ দূতের বৈঠক চূড়ান্ত করে।

ঢাকার একটি কূটনৈতিক সূত্র বলছে, ৬ এপ্রিল বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ড. মোমেনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শিজুন। বৈঠকে বিশেষ আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ছাড়াও বেইজিংয়ের দিকে থেকে রোহিঙ্গা সমাধানে বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতা আশ্বাস দেওয়া হয়। তবে পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে কিছু রোহিঙ্গার প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়ে জোর দেন বিশেষ দূত। প্রত্যাবাসন শুরু করতে রোহিঙ্গাদের রাজি করাতে প্রয়োজন হলে একাধিক প্রতিনিধিদলকে কক্সবাজার পাঠানোর প্রস্তাবও দেওয়া হয়। এছাড়া অবকাঠামোগত উন্নয়ন ছাড়াও যেকোনো ধরনের সহযোগিতা চাইলে ঢাকার পাশে থাকার জন্য বেইজিং প্রস্তুত আছে মর্মে দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিং পিংয়ের বার্তা পৌঁছে দেন বিশেষ দূত।

চীনা দূতের মতো বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিবের বেইজিং সফরে যাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছে কূটনৈতিক সূত্রগুলো। সূত্র বলছে, মাসুদ বিন মোমেন শনিবার বেইজিংয়ের উদ্দেশে রওনা করেন। বুধবার (১৯ এপ্রিল) পররাষ্ট্র সচিবের ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।

পররাষ্ট্র সচিবের বেইজিং সফরের তথ্য নিশ্চিত করলেও সফরের কারণ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি নয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, পররাষ্ট্র সচিবের বেইজিং সফরে রোহিঙ্গা ইস্যু, চীনা বিনিয়োগ, অবকাঠামো উন্নয়ন, চলমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিসহ দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

এনআই/ওএফ