গত ১৭ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে ঈদুল ফিতরে ট্রেনে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা। তবে এই যাত্রায় আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর আসনের টিকিট অগ্রিম বিক্রি করলেও স্ট্যান্ডিং টিকিট (ট্রেনে দাঁড়িয়ে যাওয়ার টিকিট) এবং কমিউটার ট্রেনের টিকিট বিক্রি করা হয় ট্রেন ছাড়া আগে। আর আসনবিহীন এই টিকিটের জন্যও কাউন্টারের সামনে টিকিটপ্রত্যাশীদের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে।

বুধবার (১৯ এপ্রিল) সকালের দিকে রাজধানীর প্রধান ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনে এমন চিত্র দেখা গেছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, আন্তঃনগর ট্রেনের কাউন্টারের সামনে কয়েকশ মানুষের দীর্ঘলাইন। প্রত্যেকেই প্রত্যাশা করছেন, আসন না পেলেও অন্তত ট্রেনে দাঁড়িয়ে যাওয়ার টিকিটটা তারা পাবেন। কিন্তু তারা জানেন না, আন্তঃনগর ট্রেনের শুধুমাত্র শোভন শ্রেণির ২৫ শতাংশ টিকিট দেওয়া হবে। যে কারণে টিকিট না পেয়ে অনেকে ফিরেও গেছেন।

লাইনে দাঁড়িয়ে জামালপুরের যাত্রী ইব্রাহিম হোসেন মানিক ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভোর ৫টায় আসছি জামালপুরের ট্রেনের একটি স্ট্যান্ডিং টিকিটের জন্য। তখনও অনেক মানুষ ছিল আমার সামনে। এখনও দেখছেন ১০ জন আছে সামনে, জানি না টিকিট পাবো কি না।

আরেক যাত্রী এসএম ফিরোজ বলেন, আমি নেত্রকোনা যাবো। আমার সামনে ৩০ জনের মতো মানুষ ছিল। কাউন্টারের সামনে যখন গেলাম, তখন বললো স্ট্যান্ডিং টিকিটও শেষ হয়ে গেছে। এখন তো বাসই শেষ ভরসা।

মূলত বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে বলা হয়েছে, ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের সুবিধার্থে ঈদ অগ্রিম ও ফেরত যাত্রায় আন্তঃনগর ট্রেনের সব আসন বিক্রি শেষে যাত্রী সাধারণের সুবিধার্থে ট্রেনে বরাদ্দ করা শোভন শ্রেণির (নন এসি) মোট আসনের ২৫ শতাংশ আসনবিহীন টিকিট যাত্রার দিন কাউন্টার থেকে বিক্রি করা হবে।

অন্যদিকে ঢাকা থেকে ৮টি কমিউটার (বেসরকারি ট্রেন) নিয়মিত ৬টি গন্তব্যে চলাচল করে। ট্রেনগুলো হচ্ছে- বলাকা কমিউটার (ঝরিয়া), দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার (দেওয়ানগঞ্জ), মহুয়া কমিউটার (মোহনগঞ্জ), কর্ণফুলি কমিউটার (চট্টগ্রাম), রাজশাহী কমিউটার (চাঁপাইনবাবগঞ্জ), জামালপুর কমিউটার (দেওয়ানগঞ্জ) এবং ২টি তিতাস কমিউটার (আখাউড়া)।

এসব কমিউটার ট্রেনের টিকিটও অগ্রিম বিক্রি করা হয় না। প্রতিটি ট্রেন ছাড়ার আগে এসব টিকিট বিক্রি করা হয়। যার ফলে এই কাউন্টারের সামনেও দীর্ঘ সময় ধরে মানুষের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে।

মহুয়া কমিউটার ট্রেনের যাত্রী শাহরিয়ার আবেদিন জয় বলেন, অনেক কষ্টে একটি টিকিট পেয়েছি মোহনগঞ্জের। এখানে অনেক মানুষের ভিড়। অনেকে টিকিটও পায়নি।

স্ট্যান্ডিং টিকিট প্রসঙ্গে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক মাসুদ সারওয়ার বলেন, আমরা একটি ট্রেনের ২৫ শতাংশ টিকিট দিতে পারি। ধরেন একটি ট্রেনে ৬০০ আসন আছে। তার বিপরীতে আমরা ১৫০টি টিকিট দিতে পারবো। আমি দেখলাম কাউন্টারের সামনে ২ হাজার মানুষের ভিড় আছে। আমরা তো সবাইকে টিকিট দিতে পারবো না।

এমএইচএন/জেডএস