আগুনের লেলিহান শিখা থেকে বেঁচে যাওয়া, পানিতে ভিজে যাওয়া এবং গোডাউনে সংরক্ষিত কাপড়ে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন নিয়ে আবারও দোকান খুলছেন রাজধানীর ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট দক্ষিণ ভবনের ব্যবসায়ীরা। যদিও আনুষ্ঠানকিভাবে এখনও মার্কেট খুলে দেওয়া হয়নি। 

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পোড়া দোকান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে দেওয়ালে প্লাস্টিক পেপার লাগিয়ে কোনোরকমে সাজিয়ে ক্রেতার জন্যে অপেক্ষা করছেন তারা। 

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মার্কেটের ৩য় তলার শুরুর দিকের ঘড়ি, সানগ্লাস, চামড়াজাত পণ্যেরসহ বেশ কয়েকটি দোকান ইতোমধ্যেই নতুন করে পসরা সাজিয়ে বসেছে। আর ভেতরের দিকের দোকানগুলোতে চলছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও গোছানোর কাজ। তবে অধিকাংশ দোকানই পুড়ে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে আছে। আবার তৃতীয় তলায় এখনও বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হয়নি। ফলে অন্ধকার আর গরমে ভেতরের দিকে থাকা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।  

সংশ্লিষ্ট দোকানি ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের ঠিক আগমুহূর্তে এমন দুর্ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত অপ্রত্যাশিত। আগুনে প্রতিটি দোকানে থাকা অধিকাংশ জিনিসই পুড়ে গেছে। শেষ মুহূর্তে যারা যতটুকু বাঁচাতে পেরেছেন সেগুলোও পানিতে ভেজা।  

হাসিব বিল্লাহ নামের এক দোকান কর্মচারী বলেন, আমাদের যাওয়ার আর কোনো জায়গা নেই। ঈদের কোনো আমেজই  আমাদের মাঝে নেই। যে ক্ষতি হয়েছে সেটা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টাই এখন একমাত্র উপায়। বাড়িতে পরিবার পরিজন পথ চেয়ে বসে আছে আমাদের জন্য। কিন্তু কী করব মালিকের অবস্থাই খারাপ। আগুনে ১৫-২০ লাখ টাকার মতো জিনিস পুড়েছে। এখন সেই পুরনো হিসাব করে তো লাভ নেই। তাই যতটা সম্ভব গোডাউনের কাপড় বিক্রি করে যদি ঈদ খরচ উঠানো যায় সেটিই বড় বিষয়।

এ বিষয়ে নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন বলেন, মার্কেটের মালিক সিটি কর্পোরেশন। এই মুহূর্তে নিরাপত্তার বিষয়টি থানা পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিস দেখভাল করছে। তারা যদি মনে করেন মার্কেট খুলে দেওয়া প্রয়োজন তবে কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে দুই তিন দিনের জন্য তার অনুমতি দিতে পারেন।  ব্যবসায়ীদের রুটি-রুজির বিষয় আছে। তাদেরকে অবশ্যই ব্যবসা করার সুযোগ দিতে হবে। তবে সাথে নিরাপত্তার বিষয়টিও কিন্তু জড়িত। এই বিষয়টির সাথে কোন ধরনের কমপ্রোমাইজ করা যাবেনা। তবে সবকিছু মিলিয়ে যাচাই-বাছাই করেই দোকান খোলা বাইরে ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।

প্রসঙ্গত,গত ১৫ এপ্রিল ভোরে রাজধানীর নিউ সুপার মার্কেটে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার চেষ্টায় সকাল ৯টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুনে প্রায় ২০০-২৫০টির মতো কাপড়ের পাইকারি ও খুচরা দোকান পুড়ে যায়।

আরএইচটি/এনএফ