ঢাকার বনানীতে একটি আইটি ফার্মে চাকরি করেন ইকবাল হাসান। ঈদের ঠিক দুদিন আগে গিয়েছিলেন গ্রামের বাড়ি। আজ ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরেছেন নির্ধারিত সময়ে, সড়ক ছিল ফাঁকা। নির্বিঘ্ন ফিরতি যাত্রায় স্বস্তি মিললেও ইকবালের মন পড়ে আছে গ্রামের বাড়িতে।

বুধবার (২৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টায় রাজধানীর টেকনিক্যালে হানিফ পরিবহনের একটি বাস থেকে নামেন ইকবাল হাসান। এরপর অফিসে যাওয়ার জন্য গাড়ির অপেক্ষা করছিলেন তিনি।

ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, ঈদ ছাড়া বাড়ি যাওয়া হয় না বললেই চলে। ঈদের ছুটিতে গ্রামে গিয়ে ঘুরেছি, আত্মীয়-স্বজনদের বাসায় দাওয়াত খেয়েছি। ছুটি কম, তাই চলে এসেছি। বাবা-মা ভাই-বোন স্বজনদের ছেড়ে আসতে খারাপ লেগেছে। কর্মে ফিরলেও মনটা এখনো গ্রামেই পড়ে আছে। 

ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে খুলেছে রাজধানীর সরকারি-বেসরকারি অফিস। ঢাকায় ফিরছে মানুষ, চাপ বাড়ছে সড়কে। ধীরে ধীরে কোলাহল ফিরছে রাজধানীতে।

যাত্রী, পরিবহন কর্তৃপক্ষ ও চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সড়কে এখনো যানজট তৈরি হয়নি। তবে গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠান পুরোপুরি চালু হলে চাপ বাড়বে সড়কে। রয়েছে যানজটের শঙ্কাও।

সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত রাজধানীর গাবতলী রজব আলী মার্কেট, আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল, পর্বতা স্টপেজ, মাজাররোড ও টেকনিক্যাল এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন জেলা থেকে বাসে করে ফিরছেন মানুষ। এখন পর্যন্ত সড়কে যানজট না থাকায় যাত্রী ও চালকরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।

পাবনা থেকে ছেড়ে আসা সি-লাইন বাসের যাত্রী শবনব আরা বলেন, ভোরে রওয়ানা দিয়ে কম সময়ের মধ্যে ঢাকায় পৌঁছেছি। সড়ক একদম ফাঁকা। কয়েকটা দিন দারুণ কেটেছে গ্রামে। এখন আবারো কর্মব্যস্ততায় ডুবে যাব।

সি-লাইন পরিবহনের বাসচালক দুলাল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, সড়কে যানজট তৈরি না হলেও যানবাহনের চাপ গত দুদিনের তুলনায় বেড়েছে। গার্মেন্টস এখনো খোলেনি। গার্মেন্টস চালু হলে সড়কে বাড়তি চাপ তৈরি হবে।

পঞ্চগড় থেকে শ্যামলী পরিবহনে ঢাকায় ফেরা যাত্রী রুস্তম আলী স্বস্তি প্রকাশ করে বলেন, উত্তরবঙ্গ থেকে আসতে স্বাভাবিক সময়েই ১৬/২০ ঘণ্টা লেগে যায়। তবে আজকের যাত্রা ছিল ভিন্নমাত্রার। সড়ক একদম ফাঁকা, নির্বিঘ্ন যাত্রায় মাত্র ১০ ঘণ্টায় ঢাকায় ফিরেছি। 

চাঁপাই-রাজশাহী থেকে ঢাকায় চলাচল করা হানিফ পরিবহনের একটি বাসের চালক আব্দুল হামিদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, এবারের মতো সড়ক আগে খুবই কম দেখেছি। পুরোটাই ফাঁকা। যথা সময়ের আগেই পৌঁছেছি। দুদিন পর হয়তো এটা সম্ভব হবে না। তখন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও গার্মেন্টস, কলকারখানার কর্মীরা ঢাকায় ফিরবে।

গাবতলীতে গাড়ির অযথা জটলা এড়াতে ট্রাফিক মিরপুর বিভাগের পুলিশ সদস্যদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। আমিনবাজার ব্রিজ, পর্বতা সিগন্যাল, মাজার রোড ও টেকনিক্যালের সিগন্যাল ও মোড়ে মোড়ে দেখা গেছে ট্রাফিক পুলিশ।

জেইউ/এমএ